গরমে ৫০ হেল্থ টিপস্

গরমে ৫০ হেল্থ টিপস্

আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গরম এবং বৃষ্টির অবস্থান পাশাপাশি। গ্রীষ্ম এবং বর্ষার পরিবেশগত উপকরণগুলো অনেক সময়েই একাকার হয়ে মিশে থাকে। কারণে এই দুটি ঋতুতে রোগবালাইয়ের ধরনও একই রকম। রোগবালাই ছাড়াও পরিবেশগত বিরূপ প্রভাবে নানা ধরনের অস্বস্তিতে ভুগে থাকি আমরা। ছাড়া পরিবেশকে হিসাবের মধ্যে রেখেও চালাতে হয় দৈনন্দিন জীবন। এবারের এই প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব বিষয়গুলোই এসেছে আলোচনায় অত্যন্ত সংক্ষেপে এবং টিপস আকারে।

 

 

এড়িয়ে চলুন বাইরের তৈরি খাবার

গরমকালে ঘরের বাইরে রাস্তার ধারের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পারলে রেস্টুরেন্টের খাবারও বাদ দিতে হবে। মনে রাখবেন বাইরের খাবারে ডায়রিয়া থেকে শুরু করে জন্ডিস, টাইফয়েডসহ অনেক রোগ হতে পারে।

পথের ধারের তৈরি শরবত খাবেন না

রাস্তার ধারে তৈরি শরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এই শরবত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি হয় না। পরিবেশন করা হয় না পরিষ্কার গ্লাসে। এক্ষেত্রে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

 

পথ চলুন সতর্কভাবে

ঝড়-বৃষ্টির দিনে রাস্তাঘাট ভিজে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। তাই পথ চলার সময় পা ফেলতে হবে সাবধানে। খেয়াল করতে হবে রাস্তার ওপর ঝড়-বৃষ্টির কারণে বৈদ্যুতিক তার কিংবা টেলিফোনের তার ছিঁড়ে পড়ে আছে কি না। পথের মাঝে কোথাও পানি জমে থাকলে সেই পানির ওপর দিয়ে পথচলাও ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ জমে থাকা এই পানির নিচে ম্যানহোল কিংবা বড় গর্ত থাকতে পারে।

 

রেইনকোট এবং ছাতা ব্যবহারে অভ্যস্ত হোন

বৃষ্টির সময় রেইনকোট ছাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। ছাতা রোদ-বৃষ্টি উভয় ক্ষেত্রেই আপনাকে সুরক্ষা দেবে। যাদের পায়ের ত্বকে ফাঙ্গাসজনিত ইনফেকশন, যেমনপায়ের আঙুলের ফাঁকে চুলকানির উদ্রেককারী সাদাটে ঘা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে গামবুট না-পরাই ভালো। তবে পায়ে অবশ্যই স্যান্ডেল পরতে হবে। কখনোই খালি পায়ে সময়ে রাস্তায় নামা ঠিক হবে না।

 

বাইসাইকেল, বাইক কার সাবধানে চালাতে হবে

বাইসাইকেল এবং বাইক রাস্তায় নামানোর আগে ব্রেক, টায়ার, হেডলাইট, সিগন্যাল লাইট, হর্ন/বেল, চেইন ইত্যাদি চেক করে নিতে হবে। রাস্তায় নামানোর আগে একইভাবে গাড়িরও সব জিনিসগুলো কাজ করছে কি না দেখে নিতে হবে। বৃষ্টির জন্য গাড়ির ক্ষেত্রে দরকারি আরেকটি বিষয় হচ্ছে ওয়াইপার। ওয়াইপার ঠিক না থাকলে বৃষ্টিতে গাড়ি রাস্তায় নামানোই উচিত নয়।

 

সময়মতো হাত ধুয়ে নিন

বাথরুম সেরে আসার পর সাবান দিয়ে ভালো করে পর্যাপ্ত পানি ব্যবহারে হাত ধুয়ে নিতে হবে। খাবার তৈরির সময় এবং খাবার গ্রহণের আগে হাত সাবান দিয়ে একইভাবে ধুয়ে নেওয়া প্রয়োজন। যে-কোনো ফল কিংবা সবজি কাটার এবং খাওয়ার আগে হাত ভালো করে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

 

এড়িয়ে চলুন বাসি খাবার

ঘরের বাসি খাবার সময়ে এড়িয়ে চলাই ভালো। তা ছাড়া খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে, যাতে করে খাবারে মাছি কিংবা অন্য কোনো কীটপতঙ্গ বসতে না পারে।

 

বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করুন

সময়ে বাইরের পানি পান করা যাবে না। পানি বিশুদ্ধকরণে ফিল্টার কিংবা বড়ি ব্যবহার করে পানিকে হেপাটাইটিস- থেকে মুক্ত করা যায় না। তাই পানি বিশুদ্ধকরণে পানিকে টগবগ করে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে নেওয়াই উত্তম। ফুটানো পানি কিংবা বাজারজাত বিশুদ্ধ পানি পান করাই নিরাপদ।

 

পরিচ্ছন্ন সুতি কাপড় পরিধান করুন

গরমের সময় ঘামের কারণে কাপড়-চোপড় বেশি নষ্ট হয়ে যায়। জন্য প্রতিদিন গোসল করার পাশাপাশি সব ধরনের কাপড়-চোপড়ই ফ্রেশ হওয়া বাঞ্ছনীয়। এতে নিজেকে সুস্থ ঝরঝরে লাগবে। এইসব কাপড়-চোপড় সুতি হলে আরও ভালো হয়।

 

চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন

প্রচণ্ড গরমে অনেকেরই চোখ জ্বালা করে। এই পরিস্থিতিতে চোখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিলে আরাম লাগবে।

 

শরীর থেকে দুর্গন্ধ হয় যে কারণে

শরীর থেকে উদ্গত বাজে গন্ধের মূল ৎস হচ্ছে ঘাম। ঘাম শরীরের একটি প্রকৃতিগত প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার জন্যই শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং বর্জ্যপদার্থ বেরিয়ে যায়। ঘাম প্রকৃতপক্ষে গন্ধহীন এবং বর্ণহীন। কিন্তু তা দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে তখনই, যখন তা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মেশে। শরীরের ত্বক ভিজে উঠে এবং আর্দ্র ত্বক বাহ্যিক নানান ময়লার সঙ্গে মিশে ব্যাকটেরিয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। এই ঘটনা গরমকালে বেশি হয়ে থাকে। আর তাতে বেড়ে ওঠে ব্যাকটেরিয়া আর উদ্রেক করে দুর্গন্ধের।

 

শরীর থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে

পরিচ্ছন্নতার জন্য গরমকালে দুবার গোসল করে নেওয়া ভালো। দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বারবার সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ত্বকের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তবে গোসলে বিশেষ ধরনের সাবান এন্টি ব্যাকটেরিয়াল সোপ ব্যবহারে উপকার আছে।

 

ঘামের দুর্গন্ধ কমাতে কাপড়-চোপড়

শরীরের বাজে গন্ধ দূর করতে পরিধেয় বস্ত্রের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। মোজা প্রতিদিনই বদল করতে হবে। ব্যবহার করতে হবে সুতি মোজা। পা ধোয়া এবং শুকানোর পর সার্জিক্যাল স্পিরিট লাগালেও বাজে গন্ধ প্রতিরোধ হবে। পরিধেয় বস্ত্রের মধ্যে অন্তর্বাসসহ অন্যান্য ইনারগুলো সুতি হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

 

ঘাম প্রতিরোধে ডিওডোরেন্ট, অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট

শরীরে ঘামজনিত দুর্গন্ধ দূর করার জন্যই ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা হয়। আর অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ঘাম তৈরিতে বাধা দেয়। ডিওডোরেন্ট ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং ঘামকে বিশ্লেষণ করে। ডিওডোরেন্ট হতে পারে সুগন্ধিযুক্ত কিংবা সুগন্ধিহীন। তবে সুগন্ধিহীন ডিওডোরেন্টই ভালো। ডিওডোরেন্ট গোসলের পর পরই ব্যবহার না করে গোসলের কিছু সময় পর শরীর শুকনো ঠান্ডা করে তারপর ব্যবহার করুন। এতে ডিওডোরেন্ট দীর্ঘসময় কার্যকারিতা পাবে।

 

ঘাম প্রতিরোধে সহযোগী খাবার

খনিজ পদার্থ জিঙ্ক ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এমন খাবারই ঘাম প্রতিরোধে সহায়তা করে। খাবারে জিঙ্কের ৎস : মাংস, ডিম, ডিমের কুসুম, দুধ, নারকেল, শস্যদানা, পেঁয়াজ, বরবটি শিমের বিচি ইত্যাদি। ম্যাগনেসিয়ামের ৎস : চাল, চীনাবাদাম, শস্যদানা, আখরোট, তিল, বাঁধাকপি ইত্যাদি।

 

ঘামের দুর্গন্ধ রোধে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাই মূলকথা

শরীরের দুর্গন্ধ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মহিলা পরিচ্ছন্নতার পর্ব হিসেবে স্ত্রী অঙ্গকেও বিশেষভাবে পরিচ্ছন্ন রাখতে চান। বিশেষ অঙ্গ পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত তবে বাড়াবাড়ি রকম হলে তা ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে ডিওডোরেন্ট স্প্রে ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে ডিওডোরেন্ট রোল আশপাশের অংশে লাগানো যেতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই কথা। মাসিক চলাকালীন সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর বদল করে নিলে ভালো। যোনি এলাকায় কখনোই পাউডার ব্যবহার করা যাবে না। আর ঢিলেঢালা সুতি আন্ডারওয়্যার পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যই স্বাস্থ্যসম্মত।

 

গরম বর্ষায় শরীরে ফাঙ্গাস বেশি হওয়ার কারণ

ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঘটনা গরম বৃষ্টির সময় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফাঙ্গাস আর্দ্র অথচ উষ্ণ এমন পরিবেশে সহজেই বেড়ে ওঠে। কাজেই এই ঋতুতে শরীর ঘেমে গেলে বগল, অন্তর্বাসের ভেতরে, পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা পেতে শরীরকে আর্দ্রতামুক্ত রাখতে হবে এবং পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে হবে।

 

 

 

ফাঙ্গাসের উপসর্গ

ফাঙ্গাসের একটা সাধারণ উপসর্গ হচ্ছেশরীরে চুলকানির উদ্রেক। বর্ষার ফাঙ্গাল ইনফেকশন সাধারণত শুরু হয় পায়ের আঙুল থেকে। ছোট্ট সামান্য ফুসকুড়ি দিয়ে শুরু, তারপর লাল হয়ে সেটা ছড়াতে থাকে। এছাড়া নখেও ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঘটে। একবার পায়ে যদি ফাঙ্গাস ধরা পড়ে তবে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকলে সেটা নখেও ছড়িয়ে যায়। এক পা থেকে অন্য পায়ে, পা থেকে হাতে, এক হাত থেকে অন্য হাতে এভাবে সারা শরীরে সেটা ছড়িয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত স্থানে চুলকানির উদ্রেককারী ছোট্ট দানার মতো দেখা যায়। ঘা চুলকানোর পর সেখান থেকে কষ ঝরে। ছাড়া গোলাকার আংটির মতো আকৃতির একধরনের ফাঙ্গাস রয়েছে। এর উপসর্গ শরীরের যে-কোনো স্থানে দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত স্থানটি খুব চুলকায় পরে সেখান থেকে কষ ঝরে। ধরনের ফাঙ্গাস কুঁচকিতে (জোক ইচ) খুব বেশি দেখা যায়। যারা সিনথেটিক টাইট অন্তর্বাস পরেন, গরম বর্ষার সময় তাদের ক্ষেত্রে কুঁচকিতে ফাঙ্গাস ইনফেকশন বেশি হয়।

 

ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ফাঙ্গাস হওয়ার ঝুঁকি বেশি

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটে। কারণ রক্তে বাড়তি সুগারের উপস্থিতি ফাঙ্গাসের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে; সুতরাং গরমে ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবেন।

 

শিশুদের ফাঙ্গাস

শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়াপার আঁকড়ে থাকা ত্বকের স্থানটিতে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে পারে। সিনথেটিক ডায়াপারের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঝুঁকি আরও বেশি। এছাড়া ত্বকের ভাঁজে শরীরের যে-কোনো স্থানে ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঘটতে পারে।

 

ফাঙ্গাসের চিকিৎসা

সংক্রমণের ব্যাপ্তি ধরনের ওপর নির্ভর করে ফাঙ্গাসের চিকিৎসাপদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন। সঠিক চিকিৎসায় যে-কোনো ফাঙ্গাসই সারিয়ে তোলা সম্ভব। বর্তমানে ফাঙ্গাসের অনেক কার্যকর ওষুধ বাজারে এসেছে, এগুলো সেবনে শারীরিক প্রতিক্রিয়া খুবই কম, প্রতিদিন খেতেও হয় না। অবশ্য অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ সেবনের আগে লিভারের কোনো ত্রুটি আছে কি না তা পরখ করে নিতে হবে। ছাড়া ফাঙ্গাস সংক্রমিত ত্বক চুলকানোর ফলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে ঘা-এর সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে আরও কিছু ওষুধ দিতে হয়।

 

ফাঙ্গাস থেকে দূরে থাকবেন কীভাবে ?

ত্বকে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি হলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে চেষ্টা করবে। তাই ফাঙ্গাস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সেগুলো হচ্ছে

*   ফাঙ্গাস এড়াতে হলে শরীর শুষ্ক রাখতে হবে

*   কখনোই ভেজা ভাব কিংবা ড্যাম্প কাপড় পরা যাবে না। কাপড় পুরোপুরি শুকনো হতে হবে।

*   প্রতিদিন পা, আঙুলের ফাঁক, নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ধোয়ার পর শুষ্ক টাওয়েল দিয়ে ভেজা স্থান মুছে শুষ্ক করে ফেলতে হবে। বিশেষ করে আঙুলের ফাঁক, ঊরুসন্ধির ভাঁজ, বগল, ঘাড়, মাথার চুল ইত্যাদি পুরোপুরি শুকনো রাখতে হবে।

*   বৃষ্টির দিনে খোলা স্যান্ডেল বা স্যান্ডেল-সু পরাই ভালো। আর অবস্থায় জুতো যদি পরতেই হয় তবে চামড়ার জুতো সুতি সোজা পরা যেতে পারে।

*   বৃষ্টির দিনে নখ কেটে ছোট করতে হবে। তা না হলে নখের গোড়া বরাবর ভিজে ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে। সময় নখে নেইল পলিশ না মাখাই ভালো এবং কৃত্রিম নখ ব্যবহারেও বিরত থাকা উচিত। নইলে নখের গোড়ায় বাড়তি আর্দ্রতা জমে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেবে।

*   শরীরের কোথাও ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঘটলে তা পারতপক্ষে না চুলকানোই ভালো। এতে ত্বকে অন্য আরেকটি ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। বর্ষার সময় খালি পায়ে বাইরে বের হওয়া একদমই উচিত নয়। সেইসঙ্গে বর্ষার পানি মাড়ানোও উচিত নয়।

*   হাঁড়ি-পাতিল পরিষ্কারের পর সঙ্গে সঙ্গে হাত মুছে ফেলতে হবে। পারলে ভেতরে তুলো বা সুতি কাপড়ের আবরণ দেওয়া গ্ল্যাভস পরে হাঁড়ি-পাতিল ধোয়ার কাজ করা যেতে পারে।

*   মাথার চুল শ্যাম্পু করে শুষ্ক রাখতে হবে। এতে করে চুলের গোড়ায় ফাঙ্গাস বাসা বাঁধার সুযোগ পাবে না। টাওয়েল, ব্রাশ, চিরুনি পরিষ্কার শুষ্ক রাখতে হবে। অন্যের ব্যক্তিগত এসব জিনিসপত্র ব্যবহার করা উচিত নয়।

 

প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে সৃষ্ট সমস্যা

গরমের কারণে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। এই ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায় শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান লবণ পানি। শরীর থেকে এই লবণ পানি বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের রক্তচাপও কমে যেতে থাকে। সেইসঙ্গে প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যেতে থাকে। গরমে প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়

*     প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীর অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

*     শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।

*     মাংসপেশিতে খিচুনি বা ক্র্যাম্প হতে পারে।

*     গাঢ় হলুদ বর্ণের প্রস্রাব হতে পারে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এটি গরমের কারণে সৃষ্ট প্রাথমিক অবস্থা।

 

গরমে প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে সৃষ্ট সমস্যার প্রতিকার

*     সিনথেটিক এবং আঁটসাঁট পোশাক না পরাই ভালো। কারণ সিনথেটিক কাপড়ের মধ্য দিয়ে বাতাস সুবিধাজনকভাবে চলাচল করতে পারে না।

*     গরমে যতটা সম্ভব রোদে চলাফেরা বন্ধ করতে হবে।

*     মাথায় ছাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।

*     ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরিধান করতে হবে।

*     পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

*     শরীরে ঘাম বেশি হলে সেক্ষেত্রে পানিতে খানিকটা লবণ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে খাবার স্যালাইন পান করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।

 

চোখের অস্বস্তি দূর করতে সানগ্লাস

রোদে চোখে অস্বস্তিবোধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। পারলে অবস্থায় চোখে সানগ্লাস পরা যেতে পারে। সানগ্লাস চোখকে রোদের অস্বস্তি থেকে রেহাই দেবে।

 

গরমে উত্তাপজনিত গুরুতর অসুস্থতা

প্রচণ্ড গরমে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। ফলে শরীরে লবণ-জলের অভাবে রক্তচাপ কমে যায়। একপর্যায়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এই অবস্থাটিকে মারাত্মক অবস্থা বলেই গণ্য করতে হবে।

উত্তাপজনিত অসুস্থতায় করণীয়

*   আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা পরিবেশে বা এসি রুমে নিয়ে যেতে হবে। কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো খোলা রুমে নিয়ে পর্যাপ্ত বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। শরীরের কাপড়-চোপড় যতটুকু সম্ভব খুলে দিতে হবে।

*   আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে, কারণ হাসপাতালে নেওয়ার পর রোগীকে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। তা ছাড়া রোগীকে অক্সিজেন দেওয়াও দরকার পড়তে পারে।

*   জ্ঞান ফিরে এলে রোগীকে মুখে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

 

প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক

এটি গরমের কারণে সৃষ্ট সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থা। হিটস্ট্রোক হলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়, এমনকি থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে। শরীরের ত্বক তখন শুষ্ক গরম থাকবে যা দ্বিতীয় পর্যায়ে ঠিক বিপরীতধর্মী উপসর্গ। চোখ দুটো স্থির ভাবলেশহীন তাকিয়ে থাকবে। অবস্থায় রোগীর খিঁচুনিও হতে পারে। শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেওয়ার ফলে শরীর বিশেষ করে মুখমণ্ডল নীলাভ হয়ে যেতে পারে। অবস্থাকে আরও বেশি খারাপ অবস্থা বলে গণ্য করতে হবে। অজ্ঞান বলে রোগী প্রস্রাব-পায়খানা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই অজ্ঞান অবস্থায় রোগী পায়খানা-প্রস্রাব করে দিতে পারে। তা ছাড়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গিয়ে তা কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

হিটস্ট্রোক হলে করণীয়

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির গায়ে সঙ্গে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি স্প্রে কিংবা ঢেলে শরীর ভিজিয়ে দিতে হবে। রোগী অজ্ঞান হলেও এই কাজটি করতে হবে। রোগীর শরীরে যে পানি দেওয়া হবে তা ঠান্ডা হওয়ার দরকার নেই। পানি খুব ঠান্ডা হলে সমস্যা আছে। ছাড়া রোগীর শরীরের পরিধেয় যতটুকু সম্ভব খুলে ফেলতে হবে এবং ঘরের ফ্যান কিংবা এসি চালিয়ে দিতে হবে।

ইতিমধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে হিটস্ট্রোক একটি মেডিকেল ইমারজেন্সি। হিটস্ট্রোকে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

 

অন্তর্বাস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে

*     টাইট অন্তর্বাস ব্রা ব্যবহার করা উচিত নয়। কোমরে টাইট করে পেটিকোটও পরা উচিত নয়। সময়ে এসব পোশাকগুলো হতে হবে সুতি।

*     কুঁচকির ত্বক যাতে ভেজা না থাকে, সেখানে যেন আর্দ্রতা আটকে না যায়, এই ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে।

 

প্রচুর পানি পান করুন

গরমের দিনে এমনিতেই একটু বেশি পানি পান করা উচিত। কারণ সময়ে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর পানি স্বল্পতায় ভোগে। তা ছাড়া যারা কায়িক পরিশ্রম বেশি করেন এবং অনেকক্ষণ ধরে রোদে অবস্থান করেন তাদের ক্ষেত্রে বেশি পানি পানের ব্যাপারে বাড়তি আগ্রহ থাকতে হবে। বিশেষ করে খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে শরীরের পানি এবং লবণ ঘাটতি মেটানোর জন্য মুখে খাওয়ার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে। শিশুকে এই গরমে পরিমাণমতো পানি অবশ্যই পান করাতে হবে, যাতে শিশুর শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি না হয়।

 

গরমে আরেক সমস্যা ঘামাচি

গরমে ঘামাচিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা অনেক। স্বাভাবিক ঘাম তৈরি হওয়ার পর তা ঘর্মগ্রন্থি থেমে সরু নালির মাধ্যমে ত্বকের উপরিভাগে অর্থা শরীরের বাইরে চলে আসে। গরমের সময় অতিরিক্ত ঘামের চাপে ঘর্মগ্রন্থিটি কিংবা ঘাম শরীরের বাইরে বহনকারী সেই নালিটিই ফেটে যায় এবং ত্বকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। ত্বকের নিচে জমে থাকা এই ঘামই ঘামাচি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

 

ঘামাচি হলে করণীয়

*     ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে হবে। এয়ার কন্ডিশনড রুম হলে ভালো হয় তবে ফ্যানের বাতাসও উপকারী।

*     দিনে কয়েকবার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা যেতে পারে।

*     বেবি ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।

*     ঢিলেঢালা সুতি জামা-কাপড় পরতে হবে।

*     ক্যালামিলন লোশন ঝাঁকিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত শরীরে ঘণ্টাখানেক সময় ধরে লাগিয়ে রেখে তা ধুয়ে ফেলতে হবে। রকম তিন-চারদিনের বেশি করা যাবে না।

*     ঘামাচিতে লালাভাব দেখা দিলে কিছুদিন কিউরল অয়েন্টমেন্ট দিনে দুবার করে ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

*     আর যদি ফোঁড়া হয়ে যায় তখন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ মুখে খেতে হবে।

 

গরমে শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হলে

গরমে প্রচুর ঘাম হয় বলে শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। পানি স্বল্পতা হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। গরমের সময় প্রস্রাব হলুদভাব বর্ণের হলে বুঝতে হবে শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়েছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে। যতক্ষণ না প্রস্রাবের রং স্বাভাবিক হবে ততক্ষণ এই পানি পান চালিয়ে যেতে হবে।

 

গরমে খাবারদাবার

গরমের সময় গুরুপাক না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত গরমে অনেক সময় হজমে সমস্যা হয়। তাই সাধারণ খাবার, যেমন : ভাত, মাছ, ডাল, ভর্তা ইত্যাদি খাওয়াই ভালো। গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত। ঠান্ডা লেবুর শরবত জাতীয় রসালো ফলও সময় খাওয়া যেতে পারে।

 

খেতে হবে শাকসবজি ফলমূল

গরমের দিনে চর্বিযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো। চর্বি জাতীয় খাবারে শরীর আরও উত্তাপ লাভ করবে, ঘাম অস্বস্তি দুই- বাড়বে। চর্বির সঙ্গে অতিমাত্রায় চিনিযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলা স্বস্তিদায়ক। সময়ে নিয়মিত খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে ফলমূল এবং শাকসবজি।

 

গরমে ফোড়া

গরমে অনেকেরই ত্বকে ফোঁড়া ওঠে। ত্বকের লোমকূপগুলো ঘাম ধুলো ময়লায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এমন হয়। এইসব ফোঁড়ায় অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সেবনের দরকার পড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে যথার্থ অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করাই শ্রেয়।

 

গরমে বমিভাব

তীব্র গরমে বমিভাব দেখা দেয় অনেকেরই। ধরনের সমস্যায় প্রথমে রোগীকে ঠান্ডা খোলা স্থানে নিয়ে যেতে হবে। মাথায় ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে। প্রয়োজনে গোসল করে নিতে হবে। এতে বমিভাব কিছুটা কমে এলে মুখে ঠান্ডা তরল খেতে দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে বমিরোধক ওষুধের খুব-একটা দরকার পড়ে না। ঠান্ডা খোলামেলা রোদহীন পরিবেশে পূর্ণ বিশ্রাম এবং পরিমিত স্বাভাবিক খাবার তরল গ্রহণ করলেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।

 

ঋতু পরিবর্তনের হাওয়ায় জ্বর

গরম এবং বৃষ্টির এই পরিবর্তনের ফলে কিছু কিছু ভাইরাস শরীরের ওপর আক্রমণের সুযোগ পায়। যার ফলে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হন। ঋতু পরিবর্তনের ফলে জ্বরের এই প্রকোপ নতুন কিছু নয়, সাধারণের কাছে এটিফ্লুহিসেবে সমধিক পরিচিত। এইসব রোগীরা মূলত জ্বর, কেউ কেউ সঙ্গে শুধু শীত শীতভাব, মাথাব্যথা, সামান্য সর্দি, অরুচি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান।

 

জ্বর হলে করণীয়

প্রথমেই জ্বর কমানোর ব্যবস্থা হিসেবে যথাযথ মাত্রায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে। জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত স্পঞ্জিং চালিয়ে যেতে হবে। দুই-এক ঘণ্টার মধ্যে উচ্চতাপমাত্রার জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

 

শিশুর জ্বরে খিচুনি

শিশুদের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার জ্বর (১০২-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে) খিচুনির সৃষ্টি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটাই উত্তম। তবে অবস্থায় জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নেমে না আসা পর্যন্ত স্পঞ্জিং চালিয়ে যেতে হবে।

 

গরমে খুসখুসে কাশি

গরমের দিনগুলোতে অনেকেই তীব্র খুসখুসে কাশিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এইসব কাশির জন্য অনেকেই হুট করে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে থাকেন। যদিও এই কাশির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনের কোনো দরকার নেই। অবস্থায় ব্রঙ্কোডাইলেটর জাতীয় ওষুধ গ্রহণে উপকার হয়। সেইসঙ্গে কফ নিঃসরক ওষুধও সেবন করা যেতে পারে। ব্রঙ্কোডাইলেটর ট্যাবলেট, সিরাপ, ইনহেলার কিংবা লেবুলাইজারের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায়। তবে ইনহেলারের মাধ্যমে গ্রহণ করাটাই বাস্তবসম্মত।

 

সানস্ক্রিন ব্যবহার

সূর্যের দাবদাহ থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য শরীরের উন্মুক্ত অংশে সানস্ক্রিন ক্রিম মাখা যেতে পারে। সানস্ক্রিন প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর মাখতে হয়।

 

গরমে সর্দি

গরমে অনেকের সর্দি লেগে যায়। ক্ষেত্রে নাকে অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেলেই চলবে।

 

অ্যালার্জিক ্যা

গরমে অনেকেরই ত্বক লালাভ হয়ে ওঠে। ত্বকে চাকা চাকা ্যাশও ওঠে অনেকের। এই ্যাশগুলো খুব চুলকায়। এই ধরনের ্যাশ ঠান্ডা পরিবেশে অর্থা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকলে কমে যায় বা চলে যায়। অবস্থাটা রকম হলে বুঝতে হবে গরমে ত্বকের অতিসংবেদনশীলতার জন্য এমনটি হচ্ছে। এটাই হচ্ছে গরমের প্রতি ত্বকের অ্যালার্জি। ক্ষেত্রে অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খেয়ে সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

 

আলকোহলযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন

গরমে পানি পান করাই সবচেয়ে নিরাপদ। শরীর বেশি অসুস্থ হলে স্যালাইন পানি পান করা ভালো। তবে অন্য পানীয় পানে বিশেষ কোনো উপকার নেই। বিশেষ করে অ্যালকোহলযুক্ত বেভারেজ পান করলে শরীরে আরও বেশি পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়।

অ্যাজমা রোগীদের সতর্কতা

অতিরিক্ত গরমে অনেকেরই অ্যাজমার সমস্যা তীব্র হয়। অবস্থায় অ্যাজমা রোগীরা যাতে গরমের অস্বস্তিকর পরিবেশের মুখোমুখি না হন সেই ব্যবস্থা তাদের নিজেদেরই গ্রহণ করতে হবে। ৎসঙ্গে চিকিৎসকের দেওয়া চিকিৎসা নিয়মিতভাবে গ্রহণ করতে হবে, মেনে চলতে উপদেশসমূহ।

 

প্রয়োজন পরিমিত বিশ্রাম

গরমের দিনগুলোতে পরিমিত বিশ্রাম নেওয়া উচিত। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিশ্রাম খুবই প্রয়োজন। গরমের ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রামের বিকল্প নেই। প্রয়োজনীয় বিশ্রামের অভাবে সময় শরীর অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে।

শিশুকে খোলামেলা পোশাকে রাখুন

গরমে অনেক শিশুরই ডায়াপার ্যাশ দেখা দেয়। জন্য শিশুকে স্বল্প সময়ের জন্য ডায়াপার পরানো উচিত। ডায়াপারের জন্য শিশুর কোমর কুঁচকি ছুলে যায়। তাই ছুলে যাওয়ার আগে এসব স্থানে পাউডার লাগানো যেতে পারে। আর ছুলে যাওয়ার পর অতিসত্বর চর্মবিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম লাগিয়ে নেওয়াই ভালো।

 

চাই বিশেষ ধরনের সাবান

গরমের তীব্র ঘামে সৃষ্ট শারীরিক পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল যেমন জরুরি তেমনি জরুরি গোসলে সাবানের ব্যবহার। সময়ে যারা অতি মাত্রায় ঘামের সমস্যায় ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সোপ ব্যবহার উপকারী অন্যদের ক্ষেত্রেও ত্বকের ধরন বুঝে যথার্থ সাবানটি ব্যবহার করতে হবে।

 

শেষ কথা

গরম বৃষ্টির দিনে অন্যান্য রোগগুলো মূলত পানিবাহিত। তাই গরম বৃষ্টির দিনে বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য সচেতনভাবে জীবনযাপন সতর্ক পদক্ষেপ গরমের সময় স্বাস্থ্য দুর্ঘটনা ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে। আর বর্ষার সময় রোগের ঝুঁকির চেয়ে বর্ষাজনিত দুর্ঘটনার কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এভাবেই এই সময়ে যাপিত জীবন হবে স্বস্তির।

 

Leave a Reply

Your identity will not be published.