বেল্টে ক্যাসপার উইলিয়ামস। ৩৭ বছর বয়সী এই উভলিঙ্গের মানুষটি গত বছর এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
আমরা জানি, মানসিকভাবে কোনো মানুষই পরিপূর্ণভাবে নারী বা পুরুষ নন। একজন পুরুষের মধ্যে নারীসত্তা রয়েছে, আবার নারীর মধ্যেও পুরুষসত্তা রয়েছে। আর এটাই স্বাভাবিক। কেননা একজন মানুষ (তা তিনি পুরুষ হন বা নারী) হলো নারী-পুরুষের মিলনের ফসল।
যম-যমী, প্রজাপতি, রুদ্র, জুমাদি, বৈকুণ্ঠ কমলজাÑএইসব পৌরাণিক চরিত্র বা নামের মাঝে যে সত্তা বিরাজ করছে, তা উভলিঙ্গ সত্তার অধিকারী। যেমন অর্ধনারীশ্বর। এই মূর্তিটি একই সঙ্গে পুরুষ ও নারীর। হিন্দু দেবতা শিব ও তাঁর পত্নী পার্বতীর একটি সম্মিলিত রূপ। অন্য কথায়, অর্ধনারীশ্বর হলেন জগতের পুরুষ ও নারী শক্তির (পুরুষ ও প্রকৃতি) সংশ্লেষণের প্রতীক। এই সত্তার মিলনেই সকল সৃষ্টির মূল নিহিত বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
খবরে ফেরা যাক। বলা হচ্ছে বেল্টে ক্যাসপার উইলিয়ামস-এর কথা। যিনি শারীরিকভাবে নারী ও পুরুষ— যুগল সত্তার বাস্তব মানুষ। ২০১১ সালে এই মানুষটি বুঝতে পারেন যে তিনি উভলিঙ্গের মানুষ। তখন তিনি সেই ধরনের মানুষের মতোই আচরণ করতে থাকেন। ২০১৯ সালে তিনি মালিক নামে একজনকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর তারা সিদ্ধান্ত নেন সন্তান নেওয়ার। ফলে উইলিয়ামস তার টেস্টোস্টেরন হরমোন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এভাবেই কয়েক বছর তার চিকিৎসা চলে, যাতে তার গর্ভাশয় ঠিকমতো কাজ করে। এর আগে উইলিয়ামস তার শরীরের উপরের অংশ সার্জারি করান, স্তন যুগল ফেলে দেন। কেননা স্তনযুগল তার কাঁধে বেশ চাপ সৃষ্টি করছিল। তবে শরীরের নিচের অংশ বাদ রাখেন। অবশ্য শরীরের কোনো অংশ নিয়েই তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন না।
২০২০-এর অক্টোবরে, করোনাকালে, উইলিয়ামস এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সিজারিয়ান চাইল্ড। এ সময় হাসপাতালের নার্সরা তাকে ‘মা’ বলে ডাকতে থাকেন। কিন্তু এই সম্বোধন উইলিয়ামসকে হতাশ করে। তার ভাষ্য হলো, “আমাকে ভুল লিঙ্গের বলে সম্বোধন করা হয়েছে। আমাকে কেউ ‘মম’, ‘মাদার’ বা ‘ম্যাম’ বলে সম্বোধন করলে তাতে কষ্ট পাই।”
Leave a Reply
Your identity will not be published.