শীত মানেই যেন সবকিছুতেই বাড়তি যত্নে। ঘরের মানুষজন থেকে শুরু করে পোষা প্রাণীটি পর্যন্ত ওম খুঁজে বেড়ায়। তবে আপনার আবাসস্থলটিও কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তার জন্যও প্রয়োজন একটু বেশি যত্ন। এক্ষেত্রে শীতের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। শীতে ঘরদোর পরিষ্কার রাখার এ টিপস এখানে উল্লেখ করা হলো।
- শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে বলে আপনার বালিশ, লেপ ও কম্বল হয়ে থাকে নিস্তেজ। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহে ২-৩ দিন সকালের রোদে বালিশ ও লেপ-তোশক মেলে দিয়ে রাখুন। ঝেড়ে ঘরে নিন।
- বালিশ ও লেপের কাভার যদি সাদা রঙের হয়, তবে হালকা গরম পানিতে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নীল দিয়ে নিন। দেখবেন কেমন ঔজ্জ্বল্য এসেছে।
- ধুলোময়লা পরিষ্কার করার সময় সবসময় ঘরের ওপরের অংশ থেকে নিচের অংশ পরিষ্কার করবেন। সিলিং ফ্যান দিয়ে শুরু করে তারপর সোফা ও মেঝে পরিষ্কার করুন।
- ফ্যান পরিষ্কার করার আগে বিছানায় খবরের কাগজ বিছিয়ে দিন। ফ্যান বন্ধ করে নিয়ে ভেজা পেপার বা টাওয়াল দিয়ে ফ্যানের গায়ে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে পারেন। তারপর নরম ব্রিসলের ব্রাশ সাবান পানিতে ডুবিয়ে সেটা দিয়ে ফ্যানের বেøড হালকা করে ঘষুন। ভেজা পেপার বা টাওয়েল দিয়ে মুছে নিন।
- ফ্যান শুকিয়ে গেলে পেপার কাগজ ও প্লাস্টিকের রশি দিয়ে ফ্যানটি মুড়িয়ে নিন। বেশি শীতে যেহেতু ফ্যান ব্যবহৃত হয় না, সেহেতু তাকে প্যাকেট করে রাখলে ময়লা জমবে না।
- ঘরের কোণে জমে থাকা ঝুল, খাটের নিচের ধুলা, সোফার কোণের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ভ্যাকুয়াম ক্লিনার আদর্শ। একান্ত সম্ভব না হলে ঝুলঝাড়– বা শলার ঝাটা ব্যবহার করুন।
- কম্পিউটার, টিভি, ডিভিডি প্লেয়ার, ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট পরিষ্কার করার আগে ইলেকট্রিক প্লাগ খুলে নিন। তারপর নরম ফাইবারের কাপড় বা লম্বা হাড়ের নরম ব্রাশ দিয়ে ধুলা ঝেড়ে ফেলুন।
- শিশুর টেডি বিয়ার, পুতুল বা অন্যান্য খেলনা সামগ্রী পরিষ্কার রাখা একান্ত জরুরি। এতে জমে থাকা ধুলা থেকে তার এ্যালার্জি হতে পারে। বড় প্লাস্টিকের ব্যাগে শিশুর প্লাস্টিকের খেলনাগুলো ভরুন। তারমধ্যে ১ কাপ বেকিং সোডা দিন। ব্যাগের মুখ বন্ধ করে ভালো করে ঝাঁকান। বেকিং সোডা জমে থাকা ধুলাময়লা পরিষ্কার করে দিবে। তারপর এক-একটা জিনিস বের করে বেকিং সোডা ঝেড়ে ফেলুন। ব্রাশ অ্যাটাচমেন্ট লাগিয়ে ভ্যাকুয়াম করে নিন।
- স্টোভ ও রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করার আগে সুইচ অফ করে নিন। ভিজা স্পঞ্জ বা লম্বা হ্যান্ডেলের ব্রাশ দিয়ে ধুলা পরিষ্কার করে নিন। তারপর হালকা গরম পানিতে সাবান গুঁড়া মিশিয়ে ফ্রিজের ভেতর পরিষ্কার করুন ও শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে দিন।
- ক্যাবিনেট, কাবার্ড, শেলভ পরিষ্কার করার জন্য হালকা গরম পানিতে কাপড় ডুবিয়ে মুছুন। পানিতে কয়েকটা নিমপাতা মিশিয়ে নেবেন। এতে আরশোলা, উইপোকার উপদ্রব কমবে।
- বাসনপত্রের মধ্যে কাচের গøাস, ক্রিস্টালের জিনিসপত্র হালকা গরম পানিতে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। শেষে পানি দিয়ে ধোয়ার সময় ভিনিগার দিয়ে পরিষ্কার করুন। স্টিল, রুপার বাসন পরিষ্কার করার সময় তেঁতুল, লবণ, বেকিং সোডা, টুথ পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
- পর্দা, বেডকাভার, বালিশের কাভার ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে নিন, নয়তো ড্রাই ওয়াশ করিয়ে নিন।
পরিষ্কার করার সরঞ্জামাদি
- পুরোনো মোটা কাপড় আয়না পরিষ্কারের জন্য ভালো।
- লম্বা হ্যান্ডলওয়ালা ব্রাশ, ময়লা তোলার জন্য ডাফট প্যান, ঝাঁটা অবশ্যই লাগবে।
- রাবার ম্যাট, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, এক্সট্রা ব্যাগ, ক্লিনিং স্প্রে রাখতে ভুলবেন না।
- দরজা-জানালা মুছতে গøাস ক্লিনার রাখুন।
- ফেদারের তৈরি ডাস্টার ব্যবহার করুন। সিন্থেটিক ডাস্টার দিয়ে ধুলা-ময়লা ভালো পরিষ্কার হয় না।
- বাড়িতে পানির সঙ্গে ভিনিগার মিশিয়ে ক্লিনিং সলিউশন তৈরি করুন। এই সলিউশনে পেপার ডুবিয়ে নিয়ে দরজা-জানালা মুছুন।
- পরিষ্কার করার সময় হাতের গøাভস ব্যবহার করুন।
শীতের জুজু বুড়িকে ভয় না পেয়ে ঘর রাখুন ঝকঝকে তকতকে। দেখবেন প্রতিবেশীরাও ঈর্ষান্বিত হয়ে খুঁজবে আপনার এই পরিচ্ছন্নতার রহস্য।
Leave a Reply
Your identity will not be published.