এ বছর ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’ পেলেন ‘অন্যদিন’-এর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। একই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ। চলচ্চিত্র পরিচালনা আর সাংবাদিকতা এ দুটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২৬ অক্টোবর এই পুরস্কারের অষ্টাদশ আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো চ্যানেল আই স্টুডিওতে। এতে মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রথম পত্রিকা ‘সিনেমা’র সম্পাদক ও বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’-এর নির্মাতা প্রয়াত ফজলুল হক স্মরণে প্রতি বছর ২৬ অক্টোবর, তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে, এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। আজ ২৬ অক্টোবর, মঙ্গলবার, চ্যানেল আই স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী, বিশেষ অতিথি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্য নির্দেশক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ এবং নির্মাতা ও অভিনেতা আল মনসুর। সভাপতিত্ব করেন চ্যানেল আই’র পরিচালক মুকিত মজুমদার বাবু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র সাংবাদিক ও সম্পাদক আবদুর রহমান, রন্ধনশিল্পী কেকা ফেরদৌসী এবং আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে ফজলুল হকের জীবন ও কর্ম নিয়ে শহিদুল আলম সাচ্চু নির্মিত ‘সম্মুখযাত্রী ফজলুল হক’ প্রামাণ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তির পর কাজী হায়াৎ বলেন, ফজলুল হক সাহেব বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ। তাঁর নামে প্রবর্তিত এই পুরস্কারটি অনেক সুনাম অর্জন করেছে, অর্জন করেছে মর্যাদা। এই পুরস্কারটি পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, প্রয়াত কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুন এই পুরস্কারের প্রবর্তক। তাঁর সঙ্গে অন্যদিন পরিবারের ছিল গভীর সম্পর্ক। তিনি এই পুরস্কারের আমন্ত্রণ সব সময় ফোন করে নিজে দিতেন। আমি এই পুরস্কারের প্রতিটি অনুষ্ঠানে থেকেছি। ভালো লেগেছে। উপভোগ করেছি। আজ শ্রদ্ধেয় রাবেয়া খাতুনকে, রাবেয়া আপাকে অনুভব করছি। তাঁর অনুপস্থিতি আজকে ভীষণভাবে উপলব্ধি করছি। আমার মতো অভাজন এই এক জীবনে অনেক না হলেও বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু এই পুরস্কার আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ফজলুল হক সাহেবকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো উচিত। আশা করছি, এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভেবে দেখবেন।
‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’-এর অর্থমূল্য প্রতিটি ২৫ হাজার টাকা, তৎসঙ্গে দেওয়া হয় সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট। প্রয়াত ফজলুল হক স্মরণে ২০০৪ সালে এই পুরস্কার প্রবর্তন করেন তাঁর সহধর্মিণী বিশিষ্ট কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুন।
এই পর্যন্ত এই পুরস্কার পেয়েছেন ৩৬জন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। তারা হলেন- সাইদুল আনাম টুটুল এবং ফজল শাহাবুদ্দিন (২০০৪), চাষী নজরুল ইসলাম ও আহমদ জামান চৌধুরী (২০০৫), হুমায়ূন আহমেদ ও রফিকুজ্জামান (২০০৬), সুভাষ দত্ত ও হীরেন দে (২০০৭), গোলাম রাব্বানী বিপ্লব ও আবদুর রহমান (২০০৮), আমজাদ হোসেন ও সৈয়দ শামসুল হক (২০০৯), মোরশেদুল ইসলাম ও চিন্ময় মুৎসুদ্দী (২০১০), ই আর খান ও অনুপম হায়াৎ (২০১১), নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও গোলাম সারোয়ার (২০১২), রাজ্জাক ও রেজানুর রহমান (২০১৩), সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী ও আরেফিন বাদল (২০১৪), মাসুদ পারভেজ ও শহীদুল হক খান (২০১৫), আজিজুর রহমান ও মোস্তফা জব্বার (২০১৬), আবদুল লতিফ বাচ্চু ও নরেশ ভুঁইয়া (২০১৭), মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও শফিউজ্জামান খান লোদী (২০১৮), কোহিনূর আখতার সুচন্দা ও রাফি হোসেন (২০১৯), আলমগীর ও শামীম আলম দীপেন (২০২০) এবং কাজী হায়াৎ ও মাজহারুল ইসলাম (২০২১)।
Leave a Reply
Your identity will not be published.