মালেক মুস্তাকিম-এর ৪ কবিতা

মালেক মুস্তাকিম-এর ৪ কবিতা

মৃত্যুমুখর উদ্বাস্তু ঘুম

একদল সবুজ বৃক্ষের বেড়ে ওঠা দেখতে দেখতে

পাড়ি দিই সহস্র পাতার মৃত্যুমুখর উদ্বাস্তু ঘুম,

সূর্য পতন ভেবে জাগিয়ে রাখি দূরের পাহাড়, সমুদ্দুর,

দৌড়ের ভেতর বসে থাকি- বসে বসে দাঁড়িয়ে থাকে গাছ

অনেক বছর ঘুরে এই এক তিল দাঁড়িয়ে থাকা

অনেক পাখির জীবন শেষে এক টুকরো হাওয়া।

বৃষ্টি বুকে নিয়ে যে মেঘ উড়ে গেছে নারীর স্তনে

তার কি জানা আছে ঘুমের নামতা!

ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে যে রাত্রি হয়েছে পাথর

সেও জেগে আছে- মুখে নিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট।

অনেক অশ্রু পুড়ে এক ঘটি জলের কৌতুক; মানুষ।

 

পুনর্জন্ম

প্রার্থনায় নত হলে তোমাকে পাই,

পাপে ও তাপে,

আর্দ্রতার কিনারে পাই ঘামের পালঙ্ক- অনিদ্রাসূচকে।

বাতাসে উড়ছে ভুল- বারান্দার ঝুল- গন্ধম সময়

ধ্যান ভাঙলে একদিন ঈশ্বরের সাথে বদলে নেব

ঘুমের সেফটিপিন, জামার বোতাম-

পুনর্জন্ম হলে একবার প্রেমিক হব-

হাওয়া বদলে গেলে যেমন

জোছনায় চোখ রেখে ঘুমঘোরে জেগে ওঠে কুমারী নদী,

মৃতের শহরে দেবদারুগাছ হয়ে ওঠে

প্রিয়তম পুরুষ।

 

স্মৃতির দুরবিন

সব স্মৃতিকে ঘুম পাড়িয়ে আজ শিকারে যাব-

যাওয়ার কথা উঠলেই সিঁড়িতে পায়ের ছাপ

যেন সমুদ্র, যেন জলের পৃষ্ঠা এ শহর,

যেন শরীরজুড়ে বিপন্ন বুদ্বুদ-পারফিউম

মধ্যরাতে হাওয়া আত্মসাৎ করে দীর্ঘশ্বাসের গিলোটিন,

জল পতনের শব্দ আসে শিশির খোয়া রাতের কবজিতেÑ

উড়ে যাব হাওয়াই জলে, মাছের কানকায়-

ঘামের একুরিয়ামে-

যেতে যেতে আকাশ বদল করে দূরে চলে যাব;

আমাকে কোথাও পাবে না হে স্মৃতির দুরবিন।

 

যতটা পাই তোমাকে, যতটা পাই না

যতটা পাই তোমাকে, যতটা পাই না

নিজের মৃত্যু ঘেষে একান্তে বসে থাকে বয়স্ক বৃক্ষ,

মর্মরধ্বনি, ক্লান্ত ওড়াউড়ি—

অথচ ঘরে ফেরার অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে সমস্ত উড়াল

ঠোটের ভাজে গুম হয়ে গেছে অসংখ্য গন্তব্য

যতটা দেখি তোমাকে, তোমার দ্বিতল শয্যা ও ঘুম

একফালি রোদ ঘুরে ঘুরে এঁকে যায় নিপুণ অন্ধতা-

বধির দৃশ্যাবলী- ছায়াদের মৃত মুখ

চলো, একবার হেঁটে আসি ঘৃণার পৃথক পাতায়, জল ঘামে-

চলে গেলে কেন তোমার নামে ডাকে পাখি- মায়াবন,

পড়ে থাকে অধীর গুঞ্জন!

 

Leave a Reply

Your identity will not be published.