তমসা-স্রোতে
আমাদের এই নিভৃতে ডুবে
থাকার ভেতরটা জলজ
শুশুক কিংবা নীল তিমির
জালে আঁটকা নিঃশ্বাস।
থেকে থেকে একটু
বায়ুমণ্ডলে উঁকিঝুঁকি দেয়া
তারপর একরাশ নৈঃশব্দে
ফিরে সমুদ্রে ঝাঁপ।
নিকটবর্তী দুঃখগুলোর
নীল ছোপ গিলে ফেলি।
ইলিশ-ডিমের মতো যেখানে
অনবরত ফুটছে মৃত্যু
তার সঙ্গে জীবন ও যাপনের
কদাচিত হয় দেখা।
অমোঘ তমসা স্রোতে
অনাদিকালের বয়ে যাওয়া।
আমার ছাইয়ে তোমার সূর্য
আমার ছাইয়ে তোমার সূর্য জাগে
বিপন্ন বিস্ময়ে চেয়ে থাকি শুধু-
লেনিন, মার্কস, মাও সে তুং ভাঙে
চেতনার বুঁদবুঁদে ভীষণ কালো অন্ধকারে।
নেমে পড়ি দৃশ্যমান ও অদৃশ্য কোন্দলে
উপড়ে যাব আরও উপরে-
পারলে ভেঙে ফেলব আকাশটা
কিনে নেব স্বর্গের শেষ সিঁড়িটাও।
যতটুকু জীবিত তার কবরে তুমি নৃত্যরত
নিষ্ফলা চৌচিরে ডুবে যাই শুধু-
বব ডিলান, লেলন, রবিশংকর কাঁদে
চেনা আয়নার প্রতিটি ভাঙা শব্দে।
দেখে নিই মগজের-চাষ মারণাস্ত্রগুলো
প্রতিটি শূন্যকে পূর্ণ করব-
সম্ভব হলে লুট হবে এই বায়ুমণ্ডল
প্রতিষ্ঠিত হবে একটি ঘাসের ওপরও কর্তৃত্ব।
জল-জোছনায়
অগত্যা নেমে আসা
কালো পাহাড়ের শরীরে
জোছনার মতো বিবাগি
হাহাকার ছুটে বেড়ায়।
অনতিদূর সমুদ্রের জলরাশি
যে অনিদ্র ঝুমকা বাজায়
তেমনি চঞ্চল নিমগ্নতায়
কেঁপে ওঠে এ রাত।
বিষের জ্বালা শুঁকে শুঁকে
মরণদাঁত যদি খুবলে যায়
তুমি নাও এ শরীর আজ
লীন হব জল-জোছনায়।
কী করো?
কী করো?
সারসের বুকে বর্ষা-জমা মমতা নিয়ে
চেয়ে থাকো কি উদাসী পথে?
নকশীকাঁথার বুনন ছুঁয়ে সুঁই-সুতোয়
প্রেমের কবিতা লেখো?
কী করো?
কী করো?
এখনো কি নোলকছেঁড়া হংস বিকেলে
ঝুমকোলতার মতো জড়ানো আদর খোঁজো?
এখনো কি বুকের ভেতর বাঁশি বাজায়
সে কোন অচিন বাঁশুরিয়া?
কী করো?
কী করো?
পাতাঝরা স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাও
কি বিবাগি দুপুরের সেই ডিঙি?
সাঁঝের প্রদীপের নরম ঘোমটা তুলে
তৃষ্ণার্ত চোখে আজও তাকাও?
কী করো?
শ্রাবণের পাখিদের ঠোঁটে
শ্রাবণের পাখিদের ঠোঁটে
আমার ভালোবাসা নিয়ো।
খড়কুটোটানা স্বভাবের দোষে
জেনে নিয়ো ঘরবাঁধা স্বপ্ন।
নদীর ভাঙন দেখে ওরা
ঠোঁটে তুলে নেয় শিশ
বুঝে নিই অন্যকিছু
ভাঙার ভেতরই আছে সম্ভাবনা।
শ্রাবণের পাখিদের ঠোঁটে
আমার ভালোবাসাটুকু নিয়ো।
বৃষ্টিভেজা ডানা ঝাপটানা তো জেনো
অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়নিকো।
হক ফারুক আহমেদ -এর পাঁচটি কবিতা
অন্যদিন ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ০ টি মন্তব্য
Related Articles
সাহিত্য-সংস্কৃতিতে নদী
মোমিন রহমান২২ জুলাই ২০২১বাংলা উপন্যাসে নদী কখনো প্রসঙ্গক্রমে এসেছে, কখনো তার রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’, সমরেশ বসুর ‘গঙ্গা’ এবং অদ্বৈত মল্ল বর্মণের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ নদীর একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
ব্ল্যাক আউট
আবদুল মান্নান সৈয়দ১৬ ডিসেম্বর ২০২০দরজার ওপরেই কয়েকটি মুখ ও শরীর, উদ্যত বন্দুক প্রায় সবার। ইধার-সে গোলি কিয়া! গুলি করেছ তোমরা। করিম সাহেব বলতে যান- না, আমরা তো গুলি করি নি, কারা যেন...। পাঁচ-ছ জন ছোকরা, কাঁধে বা হাতে প্রত্যেকের বন্দুক, একজনের হাতে রিভলবারও রয়েছে।
আবুল ফজল মুক্তবুদ্ধি চর্চার পথিকৃৎ
অন্যদিন১৯ এপ্রিল ২০২৫আবুল ফজল সমাজ ও সমকাল সচেতন প্রাবন্ধিক হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি লাভ করেন। স্বদেশপ্রীতি, অসাম্প্রদায়িক জীবনচেতনা ও কল্যাণবোধ তাঁর সাহিত্যকর্মের বৈশিষ্ট্য।
শম্পা কী চায়? (পর্ব ১৬)
এশরার লতিফ০৫ জুলাই ২০২২জাহিদের মাথায় তখন, আমার সোনার হরিণ চাই। এই মেয়েকে তার পেতেই হবে। সব ইকরি মিকরি চামচিকরি ছেড়ে জাহিদ হিমানীর পেছনে লেগে রইল তো রইলই। দেখা যেত সে মণ্ডপে গিয়ে কখন হিমানী আসবে সেই অপেক্ষায় বসে আছে।
Leave a Reply
Your identity will not be published.