শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ২১ তম এই আসরে বিশ্বের ৭০টি দেশের সিনেমা দেখানো হবে। এবার স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার প্রাধান্য থাকছে। প্রদর্শনের জন্য ছবি নির্বাচন করা হয়েছে ২৫৪টি। এরমধ্যে বাংলাদেশের আছে পূর্ণদৈর্ঘ্য ৮টি সিনেমা। উৎসবটি ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়ে চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত।
উদ্বোধনী সিনেমা ‘জেকে-১৯৭১’
মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবারের উৎসবের উদ্বোধনী সিনেমাটি হতে যাচ্ছে ‘জেকে-১৯৭১’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তার জন্য ফরাসি যুবক জ্যঁ কুয়ে বিমান ছিনতাই করেছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয় সিনেমাটি। ফাখরুল আরেফীন খান পরিচালিত চলচ্চিত্রটি জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে প্রদর্শন করা হবে।
যেসব শাখায় যত সিনেমা
ঢাকা আর্ন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের আসরে সিনেমা প্রদর্শন করা হবে ৯টি শাখায়। উৎসবের প্রধান শাখাগুলোর মধ্যে রয়েছে এশিয়ান কমপিটিশন শাখায় ২৩টি সিনেমা, ওয়াইল্ড অ্যাঙ্গেল শাখায় ১১টি, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড শাখায় ৪৫টি, উইমেন ফিল্মমেকার শাখায় ২৩টি, স্পিরিচুয়াল ফিল্ম শাখায় ১৪টি ও চিলড্রেন ফিল্ম শাখায় ১৮টি সিনেমা দেখানো হবে। পূর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য ৮৪টি ছবি দেখানো হবে শর্ট ও ইন্ডিপেনডেন্ট শাখায়। এ ছাড়া ফ্রান্সের বিখ্যাত পরিচালক ফ্রঁসোয়া ত্রুফোর ‘দ্য ফোর হান্ড্রেড ব্লোজ’সহ চারটি সিনেমা দেখানো হবে রেট্রোস্পেকটিভ শাখায়। আর বাংলাদেশ প্যানারোমা শাখায় ২৯টির বিভিন্ন দৈর্ঘ্যেরে সিনেমার মধ্যে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীর ‘যা হারিয়ে যায়’, খন্দকার সুমনের ‘সাঁতাও’, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘পাপপূণ্য’, উজ্জ্বল কুমারের ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’, আশুতোষ সুজনের ‘দেশান্তর’, রায়হান রাফির ‘দামাল’, মাহমুদ দিদারের বিউটি সার্কাস ছাড়াও ওয়াইড অ্যাঙ্গেল শাখায় প্রদর্শিত হবে ১১ টি সিনেমা। এরমধ্যে খিজির হায়াত খান পরিচালিত ‘ওরা ৭ জন’ সিনেমাটি, প্রামাণ্যচিত্র ‘দুর্বার গতি পদ্মা’, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড শাখায় মেজবাউর রহমান সুমনের হাওয়া ও আশিক মোস্তফার ‘থার্টি ফাইভ’সহ বিভিন্ন বিভাগে ‘অপরাজিত’, ‘অভিযান’, ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’, ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘ঝরা পালক’, সাই পল্লবি অভিনীত ‘গার্গি’ ও ‘মহানন্দা’র মতো সিনেমাও প্রদর্শিত হবে।
অংশ নিচ্ছে যেসব সিনেমা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিনেমা অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে এশিয়ান শাখায় ‘কার্মালিংক’, শ্রীলঙ্কার ‘দ্য নিউজপেপার’, ইরানের সিনেমা ‘দ্য অ্যাপল ডে’, রাশিয়ার ‘দ্য রায়ট’, তুরস্কের ‘দ্য ব্ল্যাক নাইট’ ছাড়াও থাকছে অনেক চলচ্চিত্র। সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড শাখায় চীনের সিনেমা ‘আ চ্যাট’, সিরিয়ার সিনেমা ‘কোবানে’, ফিলিপাইনের ‘ওয়াকার’, হাঙ্গেরির সিনেমা ‘সোয়াম্প লায়ন’, ব্রাজিলের সিনেমা ‘মাগোয়াদো’, উইমেন ফিল্মমেকার শাখায় বুলগেরিয়ার সিনেমা ‘লিসেন’, ফিলিস্তিনের ‘কন্টিনিউয়াস কাভারেজ’, ইথিওপিয়ার ‘অ্যামং আস ওমেন’, স্পিরিচুয়াল শাখায় অংশ নিচ্ছে জর্জিয়ার সিনেমা ‘ক্রিম ইন মাই কফিন’, চিলড্রেন শাখায় ‘মার্টিন অ্যান্ড ম্যাজিক্যাল ফরেস্ট’ , মেক্সিকোর সিনেমা ‘হোম ইজ সামওয়ার এলস ইডফা’সহ বেশ কিছু সিনেমা।
মিলবে অর্থ ও স্বীকৃতি
সার্কভুক্ত দেশগুলোর তরুণ নির্মাতাদের ৮০টি চিত্রনাট্য থেকে ১০টি নির্বাচন করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি সিনেমা সেরা হিসেবে ঘোষণা করা হবে এবং ৩, ২ ও ১ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। এ ছাড়াও ২১টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা রয়েছে বাংলাদেশের প্যানারোমা বিভাগে। মূলত এদেশের শিক্ষার্থী ও তরুণদের প্রাধান্য দিতে সিনেমা জমা নেওয়া হয়েছে দুইভাবে। ফিপরেস্কি জুরি পুরস্কার দেওয়া হবে বাংলাদেশের সেরা সিনেমাগুলোকে আর তিন তরুণ নির্মাতাকে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য প্রথমবারের মতো অর্থ দেওয়া হবে যথাক্রমে আড়াই লাখ টাকা, দ্বিতীয় দেড় লাখ ও তৃতীয় পুরস্কার এক লাখ টাকা।
যেসব ভেন্যুতে ছবি দেখা যাবে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত এই সিনেমাগুলো নির্দিষ্ট একটি ভেন্যুতে দেখানো হবে না। আট দিনব্যাপী এই সিনেমাগুলো দেখানো হবে ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, স্টার সিনেপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভেন্যুতে সিনেমাগুলো দেখানো হবে।
Leave a Reply
Your identity will not be published.