‌'মুনীর চৌধুরী সম্মাননা' ও 'মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক' পাচ্ছেন কারা

‌'মুনীর চৌধুরী সম্মাননা' ও 'মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক' পাচ্ছেন কারা

অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর ৯৮তম জন্মবার্ষিকী ছিল ২৭ নভেম্বর। এ উপলক্ষে থিয়েটার পদক প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেছে। চলতি বছর 'মুনীর চৌধুরী সম্মাননা' পাচ্ছেন নাট্যনির্দেশক ও গবেষক কামালউদ্দিন নীলু। অন্যদিকে ‌'মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক' পাচ্ছেন তরুণ নির্দেশক বাকার বকুল।

 ১৯৯০ সাল থেকে থিয়েটার প্রতিবছর 'মুনীর চৌধুরী সম্মাননা' ও ১৯৯৭ সাল থেকে 'মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক' প্রদান করে আসছে। আইএফআইসি ব্যাংকের সৌজন্যে পদক দুটির অর্থমূল্য যথাক্রমে ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা। 

দুই কীর্তিমানের নামাঙ্কিত পদক প্রদানের মধ্য দিয়ে থিয়েটার সম্মান জানায় দেশের নাট্যজগতের নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্বদের।

মুনীর চৌধুরী  

বাংলাদেশের নাট্যচর্চার আধুনিক চেতনা সঞ্চারে অগ্রণী পুরুষ মুনীর চৌধুরী। পরিবেশের প্রবল বিরুদ্ধাচরণ উপেক্ষা করে তিনি জ্বালিয়েছিলেন আলোকশিখা, অন্তরে এবং বাহিরে। তাই যেমন নিমগ্ন ছিলেন নাট্যরচনার একনিষ্ঠ সাধনায়, তেমনি আলো দিয়ে আলো জ্বালানোর প্রয়াসে নাট্যান্দোলনের সামাজিক ব্রত নিয়ে সমানভাবে নিবেদিত ছিলেন। মুনীর চৌধুরী থিয়েটার গোষ্ঠির অন্তহীন প্রেরণা। 

সর্বোপরি তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন কারাজীবনে রচিত ‘কবর’ নাটকের জন্য। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের যে কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। ১৯৬৬ সালে রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান প্রচারে পাকিস্তান সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করেন। ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে সে আন্দোলনের সমর্থনে ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ খেতাব বর্জন করেন।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুনীর চৌধুরীকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের সহযোগী আল-বদর বাহিনী তার বাবার বাড়ি থেকে অপহরণ করে ও সম্ভবত ঐদিনই তাকে হত্যা করে। 

 

মোহাম্মদ জাকারিয়া

সর্বজনশ্রদ্ধেয় নাট্যব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ জাকারিয়া বাংলা নাটকের ইতিহাসে এক অনন্যসাধরণ সৌভাগ্য দ্বারা বরিত হয়েছিলেন, চল্লিশের দশকে কলকাতায় বাংলা নাটকে যে যুগান্তর ঘটেছিলো গুটিকয় নবীন প্রতিভার মিলিত প্রয়াসে, তিনি ছিলেন সেই তরুণ কাণ্ডারিদের অন্যতম।

মোহাম্মদ জাকারিয়া ১৯৪৪ সালে যুগসৃষ্টিকারী প্রযোজনা বিজন ভট্টাচার্যের ‘নবান্ন’ নাটকে শরণার্থীর ভূমিকায় অভিনয় দ্বারা মঞ্চে প্রবেশ করেন। ১৯৪৮ সালে শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, গঙ্গাপদ বসু প্রমুখের সঙ্গে মিলে তিনি গঠন করেন ‘বহুরূপী’।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে নাটকের আশ্চর্য উত্থান সম্পাদিত হয়েছিল একদল তরুণ নাট্যশিল্পীর দ্বারা, অনায়াসে তাঁদের সঙ্গে মিশে তাঁদেরই একজন হয়ে উঠেছিলেন সবার প্রিয় জাকারিয়া।

Leave a Reply

Your identity will not be published.