স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবির। চলচ্চিত্রে সামাজিক রাজনৈতিক বক্তব্য ও আধুনিক নিরীক্ষাধর্মী আঙ্গিকের জন্য আলমগীর কবির ছিলেন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
‘জহির রায়হানের পর এ দেশের চলচ্চিত্রলোকের একমাত্র বিদ্রোহী পুরুষ ছিলেন তিনি। তাঁর বিদ্রোহী সত্তা, সৎছবির জন্য নিরলস প্রচেষ্টা ছিল সমাজ সচেতন চলচ্চিকারদের অনুপ্রেরণার উৎস। সমাজ চেতনার সঙ্গে চলচ্চিত্র চেতনার সম্মিলন আলমগীর কবিরকে বাংলাদেশের চিত্রলোকে আধুনিকতার প্রতীক এবং একমাত্র চলচ্চিত্র তাত্ত্বিকের মর্যাদায় ভূষিত করেছে। বস্তুত পক্ষে তিনি ছিলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ দেশের চলচ্চিত্রলোকের অবিসংবাদিত আচার্য পরিচালক ও দার্শনিক। সে সঙ্গে শ্রেষ্ঠ সংগঠকও।’
১৯৩৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে আলমগীর কবির জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবু সাইয়েদ আহমেদ ছিলেন পি. ডব্লিউ. ডি-র কর্মকর্তা। মা আমিরুন নেসা খাতুন।
১৯৫৮ সালে আলমগীর কবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর বিষয় ছিল পদার্থ বিজ্ঞান। ওই বছরই তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডন যান এবং সেখানে তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন। একই সঙ্গে তিনি ফলিত গণিতে বিএসসি স্পেশাল শেষ করেন। এরপর ১৯৬২ থেকে ১৯৬৪- এই তিন বছর আলমগীর কবির ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্রের ইতিহাস ও চলচ্চিত্র পরিচালনা বিষয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র কোর্স সমাপ্ত করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আলমগীর কবির চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। জহির রায়হানের ‘স্টপ জেনোসাইড’-এর তিনি চিত্রনাট্যকার ও ধারা বর্ণনায় কণ্ঠ দানকারী। ১৯৭১ সালে তিনি পরিচালনা করেন ‘লিবারেশন ফাইটার্স’।
আলমগীর কবির পরিচালিত প্রথম কাহিনিচিত্র ‘ধীরে বহে মেঘনা’। ‘ধীরে বহে মেঘনা’র পটভূমিতে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধ শেষ হওয়ার অব্যবহিত পরের ঘটনা হচ্ছে কাহিনির ক্ষেত্র। এখানে চলচ্চিকার খণ্ড খণ্ড চিত্রে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলির যন্ত্রণা-বেদনা-আতঙ্ক এবং গৌরবকে উপস্থিত করেছেন। বাংলাদেশ-ভারতের এই যৌথ প্রয়াসে দুই দেশের বন্ধুত্বের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এবং আলমগীর কবির ‘রাজনীতি-সচেতন চলচ্চিত্রকার বলেই ভারতের সহায়তায় সদ্য-স্বাধীনতাপ্রাপ্ত এই দেশটির একটি সদা-বিতর্কিত বিষয়, সেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে তিনি একটি যুক্তিসম্মত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েই বুঝতে চেয়েছেন”।
আলমগীর কবির আঠারো বছরের পরিচালক জীবনে পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র নির্মাণ করেছেন সাতটি এবং তাঁর পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্রের সংখ্যা এগারোটি। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্যকন্যা (১৯৭৫), সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), রূপালি সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২), পরিণীতা (১৯৮৪), লিবারেশন ফাইটারস (প্রামাণ্যচিত্র, ১৯৭১), মণিকাঞ্চন (১৯৮৮, স্বল্পদৈর্ঘ্যরে কাহিনিচিত্র) প্রভৃতি।
আলমগীর কবির একজন কমিটেড পরিচালক। তাঁর চলচ্চিত্রকর্মে তাই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। ফিকশন ও ফ্যাক্ট, এই দুই মিলিয়ে তাঁর ছবি ফেকশন হয়ে ওঠে।
আলমগীর কবিরের ছবিতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। যেমন, যুদ্ধ, দুটি দেশ, দুটি সম্প্রদায়ের মানুষের সম্পর্ক (ধীরে বহে মেঘনা); পুরুষশাসিত সমাজে নারী শোষণ এবং তার মুক্তি (সূর্যকন্যা); ভিন্ন দুটি সামাজিক অবস্থানের মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত স্তরে সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা (সীমানা পেরিয়ে); বাংলাদেশের ষাট দশকের শেষ পর্যায়ের সময়ের পটভূমিতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে রাজনীতি (রূপালি সৈকতে); গ্রামীণ পটভূমিতে এক জনসেবা কেন্দ্র স্থাপনের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস এবং স্বার্থ চেতনার উন্মোচন (মোহনা)।
আলমগীর কবিরের প্রায় সব ছবিতেই (ব্যতিক্রম ‘সীমানা পেরিয়ে’) বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রবল উপস্থিতি দেখা যায়। ‘ধীরে বহে মেঘনা’র সুমিত, মানব, নাজমা, মাধবী, হাসু; ‘সূর্যকন্যা’র লেনিন, বুলু, মণিকা; ‘রূপালি সৈকতে’র লেনিন, আনোয়ার—এই সমস্ত চরিত্রও মধ্যবিত্ত শ্রেণিরই প্রতিনিধিত্ব করে। ‘বস্তুত স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পরবর্তীকালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে, এমনকি স্বাধীন দেশে আত্মপরিচয় নির্ণয়ের গ্লানিকর সাংস্কৃতিক যুদ্ধে মধ্যবিত্তই নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে চলেছে এ দেশে, সত্য বটে। শিল্পী হিসেবে আলমগীর কবির এই শ্রেণিটির ওপর নির্ভর করেই সাজাবেন তাঁর ক্যানভাস, আঁকবেন তার ছবি বিভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে এবং এইসব প্রচেষ্টার ভেতর দিয়ে পৌঁছতে চাইবেন জন চেতনার গভীরে, বিশ্লেষণ করতে চাইবেন প্রতিবাদী প্রবণতাকে এই তো সঙ্গত’।
আলমগীর কবিরের ছবিতে নারীমুক্তি এবং সমাজে নারীর অবস্থানের প্রসঙ্গটি বারবার বিশ্লেষিত হয়েছে। ‘সূর্যকন্যা’তে পুরুষশাসিত সমাজে নারী শোষণ এবং তার মুক্তির প্রসঙ্গটি একটি রূপকে তুলে ধরা হয়েছে। ‘রূপকের যথার্থতা অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নসাপেক্ষ। নিম্নমধ্যবিত্ত শিল্পী লেনিনকে যদি সংস্কারমুক্ত এবং মূল প্রবাহ থেকে ভিন্ন একজন পুরুষ হিসেবেও গ্রহণ করা যায়, তবু তার প্রায় নিষ্ক্রিয় তপস্যা (!) কী করে মূর্তির পাষাণ মুক্তি ঘটায় তা বোধগম্য নয়। অর্থাৎ, সচেতন পুরুষের উদ্যোগকে যদি কবির কামনা করেন তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু নারী মুক্তি আন্দোলনে সে পুরুষের ভূমিকা কিংবা নারীর নিজস্ব উদ্যোগ এর কোনো কিছুই নির্দেশিত হয় না ছবিতে। পুরো বিষয়টিকে শেষ পর্যন্ত ‘প্রেমের জোর’-এর মতো যুক্তিহীন আবেগজাত ব্যাপার বলে মনে হয়। অ্যানিমেশন পর্বটির ইতিহাস পরিক্রমা যথার্থ নয়, তবে অন্তত এ বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় যে, প্রাকৃতিকভাবেই বা সভ্যতার শুরু থেকেই পুরুষ নারীর চেয়ে উচ্চ স্তরের এবং যোগ্যতর—এ সংস্কার সঠিক নয়’।
এ ছাড়া ‘সূর্যকন্যা’র উপকাহিনিটিও (রাসেল-মণিকার সম্পর্ক) জটিলতা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। কেননা এখানে দৈহিক মিলনের পর মণিকার মধ্যে রাসেলের স্ত্রীর মর্যাদা লাভের চেষ্টা দেখা যায় এবং শেষপর্যন্ত তার প্রচেষ্টা সফল হলে তাকে ভীষণ সন্তুষ্ট দেখায়। ব্যাপারটি পুরুষ আধিপত্যের কাছে নারীর আত্মসমপর্ণের মতোই মনে হয়। যা’ হোক, ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবিতেও বাংলাদেশের সমাজে নারীর অবস্থানের বিষয়টি এসেছে এবং দেখানো হয়েছে মেয়েরা পুরুষের অনেক অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে এ কারণে যে তাদের কোনো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নেই, তারা স্বনির্ভর নয়। এ ছবিতে টিনার বাবা বিত্তবান চৌধুরী সাহেবও তা জানেন এবং মেয়েদের এই দুর্বলতার এই সুযোগও তিনি নেন। অবশ্য নিজের মেয়ের ক্ষেত্রে তিনি বেশ উদার। টিনার সাথে তার বাবার কথোপকথনে তা ধরা পড়ে—‘তোমার মায়ের কথাই ধর। আজ সতেরো-আঠারোটা বছর আমরা ভালো করে দুটো কথা বলি না। অথচ তাকে এখানে থাকতে হচ্ছে, কেন? নিজের পায়ে দাঁড়াবার ক্ষমতা নেই বলে। তোমার ট্যালেন্ট আছে। আগে স্বাধীন হও Then choose your own life ।’
বাংলাদেশের পুরুষশাসিত সমাজে নারীর অবস্থানের প্রসঙ্গটি ব্যাপকভাবে এসেছে ‘মোহনা’তে। যেমন, যৌতুক সমস্যা। ‘ময়নারে আপনাগো কিছুই দেওন লাগবো না। আমগো ঘরের বউ আমরাই সাজাইয়া লইয়া যামু। আপনে শুধু আমার মজনুরে একখান মোটরসাইকেল, একটা সিকো ঘড়ি আর একটা স্যুট পিস দিয়া সমাজে আমার মুখখান রক্ষা কইরেন’—ময়নার হবু শ্বশুর ধনী চেয়ারম্যানের এই কথার মধ্য দিয়ে যৌতুক সমস্যার নগ্ন রূপটি প্রকাশিত। পাশাপাশি বিয়ের ব্যাপারে মেয়েদের মতামতের যে কোনো মূল্য নেই— এ ব্যাপারটিও ময়নার সখী সবিতার জীবন থেকে উঠে এসেছে—‘নিজের পছন্দ-অপছন্দ করার অধিকার কুকুর বিড়ালেরও আছে। কিন্তু আমার ছিল না’। এমনকি শহরেও যে মেয়েদের সমস্যার কোনো অন্ত নেই, তা সবিতার সংলাপ থেকে বেরিয়ে আসে—‘পুরুষ মানুষ চাকরী পাইল, সকাল থিইক্যা আট ঘণ্টা ঠিকমতো কাম করলো তো অইলো। মাইয়া মানুষেরে চাকরি দিলে তো ঘাড়ে চইড়া বইল। অফিসের কামতো করবাই। তারপর বড় সাহেবের গেস্ট আইলো তো চা-কফি বানাইয়া খাওয়াও। অফিসের পর সাহেবের লগে সাইজা গুইজা রেস্টুরেন্টে খাইতে যাও। আর তা না অইলে চাকরি নাই’। যা হোক, ‘মোহনা’তে আলমগীর কবির দেখান যে নারীদের মুক্তি আর্থিক স্বনির্ভরতার ওপর। তাই তো চেয়ারম্যান পুত্রের তালাকপ্রাপ্ত নিরক্ষর স্ত্রী ময়না এসে যোগ দেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
আলমগীর কবিরের ছবিতে আরেকটি প্রসঙ্গ—অসাম্প্রদায়িকতা এসেছে বেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবে। ‘ধীরে বহে মেঘনা’য় সুমিত আর হাসু, ‘সূর্যকন্যা’তে রাসেল-মণিকার সম্পর্কের ভেতর দিয়ে তা প্রকাশিত। হাসুর দাদার মনোভাব হলো, হাসু কাউকে ভালোবাসলে ধর্মে না মিললেও তার আপত্তি নেই। তার ভাষায়, ‘যদি হাসু কাউকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে আর প্রতিদানে তাই পায় তাহলে ছেলেটি এস্কিমো হলেও আমার আপত্তি নেই।’ ‘সূর্যকন্যা’তেও রাসেল-মণিকার মিলনে ধর্ম কোনো সমস্যা নিয়ে হাজির হয় নি।
আলমগীর কবিরের ছবিতে মানবিকতা আর আন্তর্জাতিকতার স্থান বেশ উঁচুতে। তাইতো ‘রূপালী সৈকত’-র লেনিন, আনোয়ারের মতো মানুষেরা নিজেদের সমকালীন ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা, প্যালেস্টাইন আর কিউবার সংগ্রামী জনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে জানে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের মুক্তির সংগ্রামে।
বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পৃক্ততা যেহেতু নিবিড়, সেহেতু আলগমীর কবিরের ছবিতে বারবার প্রকৃতির বর্ণাঢ্য উপস্থিতি চোখে পড়ে। ‘ধীরে বয়ে মেঘনা’য় মেঘনার বিশাল জলরাশি তথা নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীর ভূমিকা তিনি তুলে ধরতে চেয়েছেন। এখানে ‘কত যে ধীরে বহে মেঘনা’ এই গানটির সম্মিলনে প্রকৃতি উপস্থিত হয় সংগ্রামী মানুষের সহযোদ্ধা হিসেবে। ‘সূর্যকন্যা’তেও বর্ষার গ্রামবাংলার বিস্তৃত প্রান্তর, পাখির ডাক এবং বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দ চিত্রায়িত। এবং ‘সীমানা পেরিয়ে’-তে প্রকৃতির উপস্থিতি সবচেয়ে প্রবল। ‘জলোচ্ছ্বাসের প্রবল তোড়ে শ্রেণি হারানো দুটো মানুষ নিক্ষিপ্ত হয় প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে। ক্রমশ গড়ে উঠতে থাকে এক ভিন্ন সভ্যতা। দুটো মানুষের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা আর শ্রম মিলে গোড়াপত্তন হয় এক মানবিক সমাজের। সেখানে প্রকৃতির ভূমিকা আশ্রয়দাতার, অনুপ্রেরণার, সম্পদের এবং সৌন্দর্যের’।
এবার নির্মাণশৈলীর প্রসঙ্গ। আলমগীর কবির বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে আঙ্গিক সচেতন চলচ্চিত্রকার। আধুনিক নিরীক্ষাধর্মী আঙ্গিকের প্রয়োগ করেন তিনিই প্রথম। ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘রূপালি সৈকত’ এবং ‘মোহনা’তে যেহেতু আলমগীর কবির গল্প বলতে চান নি, সেহেতু ডিরেক্ট সিনেমা রীতিতে ছবিগুলো নির্মাণ করেছেন। কাহিনির মাঝে মাঝে সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন প্রামাণ্য ফুটেজ। এমনকি ‘সূর্যকন্যা’, ‘সীমানা পেরিয়ে’তেও প্রচলিত আঙ্গিকে গল্প বলা হয় নি। ‘সূর্যকন্যা’তে সময় উপাদানটিকে ব্যবহার করেছেন Free element-র মতো। ‘সীমানা পেরিয়ে’তে ক্যামেরাকে মোটিফ সৃষ্টিতে সার্থকভাবে ব্যবহার করেছেন। তাই এখানে প্রকৃতিকে ছবির থিমের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই মনে হয়েছে। শুধু তাই নয়, শরৎচন্দ্রের উপন্যাসের চলচ্চিত্ররূপ ‘পরিণীতা’-তেও আলমগীর কবির মেলোড্রামাকে প্রশ্রয় দেন নি। এই ছবিতে তিনি মানবিক সম্পর্ককে হিন্দু সমাজের বর্ণবাদের উপরে নিয়ে গেছেন এবং গল্প বলেছেন সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রের ভাষায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের অগ্রগতিতে আলমগীর কবিরের অবদান স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল।
Leave a Reply
Your identity will not be published.