কয়েকদিন ধরেই লক্ষ করছি যে, সুযোগ পেলেই শেফালি তার বান্ধবী বা নিকটাত্মীয়াদের ধরে ধরে জিজ্ঞাসা করছে, ‘এই শোন, তোরও কি এমন হচ্ছে ?’
এই প্রশ্ন করেই আশপাশে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে নেয় যে ঘাপটি মেরে স্বামী গোলাম রাব্বানী আছে কি না! হঠাৎ চোখাচোখি হয়ে গেলে শুষ্ক হাসি দিয়ে আমাকে বুঝিয়ে দেয় যে, তুমি বাপু মানে মানে কেটে পড়ো। আমাদের রুদ্ধদ্বার মিটিং চলছে।
কী আর করা! হাজার কৌতূহল বুকে চেপে রেখে অফিসের দিকে পা বাড়াতে হয় আমাকে। তাই শেফালির করা দুই নম্বর প্রশ্ন আর কখনোই শোনা হয় না।
স্বামী হওয়ার কারণে সমাজের এক শ্রেণির কাছে মানুষের মর্যাদা না পেলেও জীববিজ্ঞান ক্লাসের লেকচারশিট মিলিয়ে দেখেছি আমি কর্ডাটা পর্বেরই প্রাণী। চুল কাটার পরে নাপিতকে দিয়ে গা মালিশ করার সময়ও জানতে পেরেছি যে পিঠের দিকে আমারও মেরুদণ্ড নামক হাড়গোড় আছে। যদিও শেফালির সামনে গেলে সেটা আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। এটা আমাদের নয়, বরং স্নায়ুরজ্জুর দোষ বলেই বন্ধু জাফর বিবেচনা করে। যাকগে, আমি গত সপ্তাহ থেকেই তক্কে তক্কে ছিলাম। যে করেই হোক, শেফালির দুই নম্বর প্রশ্ন শুনতেই হবে।
রাত থেকেই শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা আর জ্বর থাকার কারণে আজ আর অফিস যাওয়া হয় নি। দুটো নাপা গিলে শুয়ে শুয়ে শিবরাম চক্রবর্তী পড়ছি। পাশের রুম থেকেই শেফালির ড্রিল মেশিনের মতো বাজখাই কণ্ঠ ভেসে আসছে—‘তুই যতই বলিস, তুলি, আমার সন্দেহ এত সহজে দূর হবে না। আমি তোর দুলাভাইকে চিনি না! ও একটা হাড় হাভাতে। মেয়ে দেখলেই গা এলিয়ে দেয়। কী সুন্দর করে কথা বলে! আর আমার সাথে কথা বলার তার সময়ই নাই। তুই চোখে চোখে রাখবি। আর আমাকে রিপোর্ট করবি।’
‘কিন্তু আপু, চুলগুলো তো ছোট ছোট। একেবারে ছেলেদের মতো।’
‘চুপ থাক। না বুঝে বকবক করিস! এখন অনেক মেয়েই ছেলেদের মতো বয়কাট রাখে। তুই এখনো মায়ের গর্ভেই আছিস রে বোনু! একটু চালাক হ। আমার মতো যেন কপাল তোর না পোড়ে।’
গায়ে জ্বর নিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে দুই বোনের কথা শুনছিলাম। এরই মধ্যেই টের পেলাম, গা ঘেমে জ্বর ছাড়া শুরু হয়ে গেছে। এটা নাপার জোরে নাকি তুলির আপার কথার তোড়ে তা বুঝতে পারছি না। তবে ঝড় যে একটা আসছে তা বুঝতে বাকি নাই।
পরের দিন সকাল থেকেই তুলির গোয়েন্দাগিরি শুরু। ডান হাতের তর্জনীর শেষ গিরার ওপর বৃদ্ধাঙ্গুলি রেখে আড়চোখে আমার মাথার দিকে তাকিয়ে আছে। আর বিড়বিড় করে কী যেন বলছে।
‘কী খবর ছোট গিন্নী, আঙুলের গিরায় তসবি গুনছ নাকি ?’
‘না দুলাভাই। এমনি এমনি আর কী!’ একটু থতমত খেয়ে গেলেও আবার ঘুরে দাঁড়ায় সে।
‘আচ্ছা দুলাভাই, আপনি কি সব সময়ই এমন করেই চুল কাটেন ?’
‘কেন বলো তো ?’
‘না মানে পেছনের চুল হঠাৎ কম আর ছোট মনে হচ্ছে তো, তাই বলছিলাম।’
‘আমি গত সপ্তাহেই চুল কেটেছি তুলি।’
এই জানতে চাওয়ার কারণ এখনো বুঝতে পারছি না।
রাতে খাবার খাওয়ার পর দুই বোনের আবারও মিটিং শুরু। তুলি সারা দিনের গোয়েন্দা রিপোর্ট এবার দেবে। তারা চাপা কণ্ঠে কথা বলছে।
‘বিশ্বাস করো আপা, আমি নিজেই মিলিয়ে দেখেছি। দুলাভাইয়ের চুলের সাথে এই চুলের দারুণ মিল।’
‘তোকে দিয়ে কোনো কাজই হবে না। তোর দুলাভাইয়ের চুল চিমটি দিয়ে ধরা যায় না। আমি গত রাতেই ঠ্যাংগানির সময় চুল ধরার চেষ্টা করেছিলাম। ওমা! দেখি ফসকে হাত গলে পালিয়ে গেল!’
‘আমার কিন্তু আরেকটা সন্দেহ আছে আপা,’ যুক্তি তুলে ধরে তুলি। ‘শোনো আপা, কোনো মেয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করলে সেই মেয়ের চুল তো পাঞ্জাবির সামনেই থাকবে। কিন্তু চুল তো পেলাম পাঞ্জাবির পেছন দিকে! ইউসুফ-জুলেখার ঘটনা একবার মনে করো আপা। ইউসুফ (আঃ)-এর জামার পেছন দিক ছেঁড়া...।’
‘চুপ কর! কিসের সাথে কিসের তুলনা! এটা নবী নয় রে, হাড় হাভাতে কবির ঘটনা। কোরআনের সেই শিক্ষা কি এ যুগের পুরুষেরা গ্রহণ করেছে ? তোর দুলাভাই তো নয়-ই।’
এরপর শেফালি যে হিসাব মিলিয়েছে তার অর্থ হলো, আমি গোলাম রাব্বানী কোনো বয়কাট চুলওয়ালী মেয়ের সাথে প্রেম করছি। যার সাথে হাগ করতে গিয়েই তার চুলের গোছা আমার পাঞ্জাবির পেছনে লেপ্টে আছে।
‘হায় হায়রে! আমার মায়ের দেওয়া অমন সাদা ধবধবে পাঞ্জাবিটায় কোন মাগির চুলে ছেয়ে আছে রে! আমি এখন এই মিনসেকে নিয়ে কীভাবে ঘর করব রে...’ বলে বউ আমার বিলাপ শুরু করে দেয়।
আমি কোনো কিছুই ঠাহর করতে পারি না। আমার পাঞ্জাবিতে এত গোছা গোছা চুল আসবেই-বা কেন ? অথচ চোখের সামনে রাখা ডাইরেক্ট এভিডেন্সকেও উপেক্ষা করতে পারি না। জব্দকৃত আলামত যে মনুষ্য চুল তা নির্ণয়ের জন্য কোনো এক্সপার্ট ওপিনিয়নের দরকার হয় না।
আমি বোকা বনে যাই। আপাতত কোনো যুতসই এলিবাই দেখাতে না পেরে চুপসে যাই। শাস্ত্রের কথা হলো, নিপীড়িত বা মাহরুম বান্দাকে সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে সাহায্য করে। আমি পথহারা পথিক, আমি কূলহারা নাবিক, আমি নীড়হারা পাখি, আমি মুকুটহারা রাজা—আমি তোমার অনুকম্পা পেতেই পারি খোদা! মনে মনে এই প্রার্থনা করছি।
চুল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে ব্যস্ত আছি, এমন সময় কন্যা রায়া উদ্ভ্রান্তের মতো কলেজ থেকে এসেই ধপাস করে সোফায় বসে পড়ল।
‘আব্বু, আমি আর পারছি না। ঢাকার পানিতে আমার চুল পড়তে পড়তে টাক হয়ে গেল। প্লিজ আমাকে একজন ডার্মাটোলজিস্টের কাছে নিয়ে যাও আব্বু।’
‘যাব, নিশ্চয়ই যাব মা। যতই বিজি থাকি, কাল সকালেই তোকে পিজিতে নিয়ে যাব।’
শনিবার ছুটির দিন। সকাল সকাল কড়া ঝলমলে রোদ উঠেছে। শেফালির মুখের ওপর সূর্যকিরণ পড়ে ঝকমক করছে। বেঘোরে ঘুমাচ্ছে সে। কী নির্ভার সেই ঘুম! বড্ড মায়া হয় মুখটা দেখে। আর মায়া না বাড়িয়ে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি পিজির উদ্দেশে!
সরকারি অফিসের মোটামুটি একটা সম্মানজনক পদে চাকুরির সুবাদে সরকারি সার্ভিস পেতে অন্য লোকের চাইতে আমার কম ভোগান্তি হয়। হাসপাতালে আমার যাওয়ার আগেই তাই সবকিছুই রেডি করে রেখেছিল আমার দুই সহকর্মী আমিনুল আর হাবিব। আমি যেতেই অতি সম্মানের সাথে গ্রহণ করলেন হাসপাতালের একজন কর্তা ব্যক্তি।
শুধু আমিই নই, সাধারণ সকল মানুষের সাথেই তার ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। যে-কোনো রোগীর ডাক্তারের সাথে দেখা হওয়ার প্রথম শুভক্ষণেই তার রোগের অনেকটা সেরে যেতে পারে। ডাঃ হাসনাত সাহেবের সাথে কথা বলে আমাকে সেই টাইপের ডাক্তারই মনে হয়েছে। সারাক্ষণ মুখে হাসি নিয়ে কথা বলেন। উনার নাম ‘হাসনাত’ নয় বরং ‘হাসিবাত’ হলে যথার্থ হতো। মেয়ের চুল পড়ে যাচ্ছে শুনে তিনিও মর্মাহত হলেন। তারপর আমাদের দিকে তাকিয়েই রহস্যময় হাসি দিলেন।
‘মামণিকে আমি খুব ভালো একজন ডাক্তারের কাছেই পাঠাচ্ছি। তবে...’ বলে তিনি দম ধরলেন।
‘ঠিক বুঝলাম না ডাক্তার সাহেব। সমস্যা থাকলে খুলে বলেন।’
‘না, সব ঠিক আছে। ডা. হেদায়েত উল্লাহ অনেক বড় ডাক্তার। শুধু তাকে কোনো ব্যক্তিগত প্রশ্ন করবেন না। এই হলো অনুরোধ।’
আমরা রোগী শ্রেণির লোক। ডাক্তার সাহেবকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার কোনো আবশ্যকতা নাই। তব্ওু মানা করার কারণে কৌতূহল আরও বেড়ে গেছে আমার।
দুরু দুরু বুকে তিনতলায় গিয়ে উঁকি দিলাম ডাক্তার প্রফেসর হেদায়েত উল্লাহর চেম্বারে।
‘আসতে পারি প্লিজ ?’
‘জি, আসুন।’ আন্তরিকভাবেই আমাদের ভেতরে ডাকলেন ডাক্তার সাহেব।
প্রথম দেখেই একটু খটকা লাগল আমার। প্রায় আমারই বয়সী হবেন তিনি। পাতলা লিকলিকে গড়ন। প্রয়োজনের চাইতে মুখটা একটু বেশিই লম্বা। সন্দেহ ভরা চোখজোড়ায় ঘুম লেগে আছে। তবে সবচাইতে বেশি অবাক হয়েছি এই বৈশাখ মাসেও মাথায় মাংকি টুপি পরে থাকতে দেখে। কিন্তু ডা. হাসনাত সাহেবের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বিষয় নিয়ে প্রশ্নও করতে পারছি না।
‘নাম কী খুকি ?’ রায়াকে শান্ত গলায় জিজ্ঞাসা করেন তিনি।
‘রাফিয়া হাসান রায়া।’
‘কী সমস্যা মা ?’ এই প্রশ্ন করেই তিনি চোখ বন্ধ করলেন। মুগ্ধ শ্রোতার মতো রোগীর সব কথা শুনলেন। একটুও বাধা দিলেন না। রায়ার কথা শেষ হলে এবার তিনি চোখ মেলে তাকালেন, প্রায় তিন মিনিট পরে।
‘দেখো রায়া, আমার দীর্ঘ ডাক্তারি জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। তোমার চুল পড়ার কারণ তুমি নিজেই। তিনবেলা সুষম খাবার গ্রহণ করলে এই বয়সেই কেন, সত্তর বছর বয়সেও তোমার চুল পড়বে না। তুমি ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করো। সব ঠিক হয়ে যাবে। আর তা ছাড়া তোমার জেনেটিক্যাল প্রবলেমও তো দেখছি না। তোমার বাবার মাথায় তো অনেক চুল। কাজেই খাওয়া আর ঘুম হচ্ছে তোমার আসল ওষুধ।’ তিনি খসখস করে কাগজে লিখে দিলেন, খাওয়া আর ঘুম ঠিক থাকলে সত্তর বছর বয়স অবধি একচুলও চুল নড়বে না।
আমার চুলের কথাই যখন উঠল তখন শেফালির চুল নিয়ে সন্দেহের কথা তো আলোচনা করাই যায়! কিন্তু মেয়ের সামনে দাম্পত্য কলহের কথা বলা যায় না! তব্ওু লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে প্রশ্ন করেই ফেললাম।
‘ডাক্তার সাহেব, আমি চুল নিয়ে খুব অশান্তিতে আছি। আমার চুল পড়ে নি ঠিকই। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কোনো এক অলৌকিক কারণে আমার পাঞ্জাবির পেছনে গোছা গোছা চুল পাওয়া যাচ্ছে।’
‘শুনুন রাব্বানী সাহেব। আপনাকে এক শাকচুন্নীতে ধরেছে। কাজেই আমার কাছে নয়, ওঝার কাছে যান’—বিরক্ত হয়ে তাচ্ছিল্য করেন তিনি। তব্ওু তাকে অনুনয় করলে আমাকে পরীক্ষা করতে রাজি হলেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি জানালেন, আমার এক ধরনের অসুখের কারণে মাথার পেছন দিকের একগোছা চুল হঠাৎ পড়ে গেছে। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম ‘এলোপেশিয়া এরিয়েটা’। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে জাস্ট এক মাসে দুটো ইঞ্জেকশন দিলেই আবার চুল গজিয়ে যাবে।
আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। মেয়েই যেহেতু সামনে আছে সেহেতু এই মামলায় আমার ফাইনাল রিপোর্ট পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তব্ওু মেয়েকে পই পই করে বলে দিলাম, যেন তার মাকে আসল কথাটা বোঝায়।
ডাক্তারের ইশারায় মুহূর্তের মধ্যেই একজন কম বয়সী ফর্সা নেপালি ডাক্তার ইঞ্জেকশন নিয়ে হাজির। মেয়েটা নেপালি হলেও শুদ্ধ বাংলা বলে।
‘আপনার ঘাড়টা আমার বাম হাতের ওপর রাখুন স্যার। আর নড়াচড়া করবেন না যেন! একটু ব্যথা লাগতে পারে। ঘাবড়াবেন না। আমি তো আছি!’
‘তুমি যে আছ তা তো দেখতেই পাচ্ছি। কিন্তু তোমার সামনে যে আমার মেয়ে বসে আছে তা কি তোমার চোখে পড়ে মনীষা কৈরালা ?’
‘স্যার কিছু বললেন ?’
‘না, কিছু বলার মুখ কি এ তল্লাটে আছে এই প্রজাতির ?’
মেয়েটা কিছু না বুঝেই একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে ঘ্যাঁচ করে সুঁচ ফুটিয়ে দিয়েছে অক্সিপেটাল রিজিয়নে। তীব্র ব্যথা লাগলেও মেয়েটার হাসি দেখে আমি কষ্ট পেতে ভুলে গেছি। এরকম মেয়ের সামনে কষ্ট প্রকাশ করা যায় না। প্রকৃতি বিমুখ হয়ে যায়।
রায়া ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে ঠিকই।
‘আব্বু, তোমার ব্যথা লাগে নি ? তুমি তো দারুণ শক্ত!’
‘কাঁকড়া বিছের গুহায় বাস করে মশার কামড়ে ভয় লাগে রে মা ?’
নেপালিকে ইমপ্রেস করতে গিয়ে এই বেমক্কা কথা বলেই ফেঁসে গেছি।
মেয়ে ড্যাবড্যাবে চোখে তাকিয়ে আছে। এর অর্থ হলো, বাবা, তুমি নেগোসিয়েশনে আসো। নইলে বাসায় গিয়েই মাকে বলে দেব। অগত্যা বারো ইঞ্চির পিৎজায় দফারফা হয় বাপ-বেটির।
হঠাৎ ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়। এই ব্লকে কোনো কারণে জেনারেটরের লাইনটা আজ কাজ করছে না। কুলকুল করে ঘামছি আমরা সবাই। আর সহ্য করতে না পেরে ডা. হেদায়েত উল্লাহ একটানে তার মাথার মাংকি টুপি খুলে ফেলেছেন। আমাদের সামনে গড়ের মাঠের মতো বিশাল একটা টাকমাথা আবির্ভূত হলো। মনে হচ্ছে সিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে তার ওপর বার্নিস করা হয়েছে।
এবার আমি শেষ প্রশ্ন করেই ফেলি, ‘ডাক্তার সাহেব, আপনি যে বললেন সত্তর বছর বয়স অবধি চুল পড়বে না! আপনি কি...’
আমার প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই ধমকের সুরে ডাক্তার বললেন, ‘প্রেসক্রিপশনের অপর পাতায় দেখুন।’
আমি পাতা উল্টিয়ে দেখি লেখা আছে—
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ
‘এই প্রেসক্রিপশনের সকল বাণী শুধু নারী প্রজাতির জন্য। শিরদাঁড়াহীন মূক ও বধির কোনো জীবের জন্য প্রযোজ্য নহে।’
চেম্বার থেকে বের হওয়ার সময় দেখি জনি কারসনের সেই বিখ্যাত উক্তিটি দেয়ালে ঝুলছে—
‘বিবাহিত পুরুষ অবিবাহিত পুরুষের চাইতে বেশিদিন বাঁচে। কিন্তু বিবাহিত পুরুষদের মরার ইচ্ছা বেশি।’
Leave a Reply
Your identity will not be published.