ঈদ উল আযহার রান্না : গরুর মাংসের রেসিপি

ঈদ উল আযহার রান্না : গরুর মাংসের রেসিপি

ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। সেই আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করে খাবার টেবিলে নানা পদের মাংসের খাবার। এমন দৃশ্য, বিশেষত ঈদ উল আযহার সময় দেখা যায় এদেশের ঘরে ঘরে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাই অন্যদিন-এর পাঠকদের সুবিধার্থে নানা ধরনের মাংসের রেসিপি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে। চলুন এবার দেখা যাক গরুর মাংসের রেসিপিগুলো।

মালয়েশিয়ান বিফ কারি

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, নারকেল দুধ এক কাপ, দারুচিনি ১ টুকরা, এলাচ ৪-৫টি, লবঙ্গ ২টি,  তেজপাতা ৪টি, তেল ১/২ কাপ, চিনি ১ টেবিল-চামচ। কারি পেস্ট উপকরণ :  আস্ত পেঁয়াজ ১টি কাটা, বড় রসুন কোয়া ৬-৭টি, আদা ¯স্লাইস ৩-৪টি, লেমন গ্রাস অল্প, আস্ত ভাজা জিরা ১ টেবিল-চামচ, আস্ত ভাজা ধনিয়া ১ টেবিল-চামচ, সাদা গোলমরিচ ১ টেবিল-চামচ, শুকনা মরিচ ৫টি, সুইট রেড পেপার ২টি (মাঝারি) অথবা অর্ধেকটা ক্যাপসিকাম, লবণ ১ চা-চামচ, তেঁতুল সস ১ টেবিল-চামচ, নারিকেল কোরা ১/২ কাপ।

প্রণালি

নারকেল কোরা তেল দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিন। এর মধ্যে কারি পেস্টের সব উপকরণ মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে কারি পেস্ট তৈরি করে নিন। মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। প্যানে তেল গরম করে গরম মসলা, লেমন গ্রাস এবং কারি পেস্ট দিয়ে নেড়েচেড়ে ভাজতে থাকুন। কারি পেস্ট শুকিয়ে ভাজা হয়ে তেল উপরে উঠে এলে গরুর মাংস দিয়ে সব মসলা দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে দিন। পানি না দিয়ে মৃদু আঁচে মাংস ঢেকে কষাতে থাকুন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন।  ভালোভাবে কষিয়ে নারকেল দুধ এবং পরিমাণমতো পানি দিন। লবণ ও চিনি দিয়ে মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করুন ৩০ মিনিট। মাংস সিদ্ধ হয়ে ঝোল শুকিয়ে মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন।

 

গার্লিক বিফ

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, হলুদ ও মরিচ গুঁড়া ১ কাপ, আদা ও রসুনবাটা ১/২ চা-চামচ, রসুনের কোয়া ৪/৫টি, ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, টেস্টিং সল্ট সামান্য, তেল ১/২ কাপ, মাংসের মসলা ১/২ চা-চামচ, টমেটো সস ১/২ কাপ, টকদই ১ কাপ, গরমমসলা গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি

মাংস ধুয়ে কেটে নিন। একটি পাত্রে মাংস, হলুদ, মরিচ, টকদই, আদা, রসুন, লবণ, ধনে, জিরা গুঁড়া, টেস্টিং সল্ট ভালো করে মিশিয়ে ২০ মিনিট মেরিনেট করে রাখুন। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে মাংস দিয়ে নেড়ে কষাতে হবে। কষানো হলে সামান্য পানি দিয়ে নেড়ে ঢেকে রাখতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে টমেটোসস, কাঁচামরিচ ফালি ও রসুনের কোয়া দিয়ে ১০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

 

লেবুপাতা দিয়ে গরুর মাংস

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ৩ টেবিল-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১/২ চা-চামচ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, ধনে গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, গরমমসলা কয়েকটি, টকদই ১ টেবিল-চামচ, গোলমরিচ ১/২ চা-চামচ, লেবুপাতা ৭/১০টি।

প্রণালি

তেল গরম করে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে গরমমসলা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, আদা ও রসুন বাটা, জিরা ও ধনে, টকদই দিয়ে ভালো করে কষান। মাংস ঢেলে ভালোভাবে ভুনা করুন। পরিমাণমতো পানি দিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে লেবুপাতা ও লেবুর রস দিয়ে নামিয়ে ফেলুন। চালের রুটি বা গরম পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন লেবুপাতার গরুর মাংস।

 

 

গরুর মাংসের ঝাল ঝুরা ভাজা

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১১/২ কাপ, বেবীকর্ন কুচি ১/২ কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, গোলমরিচবাটা ১ চা-চামচ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, ধনেবাটা ১ চা-চামচ, বাদামবাটা ১/২ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, সরষে বাটা ১/২ চা-চামচ, এলাচি-দারুচিনি-লবঙ্গ কয়েকটা, তেজপাতা ৩-৪টা, তেল ১ কাপ, গরমমসলা গুঁড়া ১/২ চা-চামচ।

প্রণালি

তেলে আধা কাপ পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে সব মসলা কষিয়ে মাংস দিয়ে দিন। আন্দাজমতো পানি দিয়ে মাংস সেদ্ধ করে নিন। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এবার মাংস নেড়েচেড়ে ঝুরা করে নিন। অল্প তেলে ১ কাপ পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে ঝুরা মাংস ও বেবীকর্ন দিয়ে নাড়ুন। ভাজা ভাজা হয়ে গেলে গরমমসলা ও গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন।

 

 

থাই চিলি বিফ

উপকরণ

হাড়ছাড়া গরুর মাংস ৩৭৫ গ্রাম, কাঁচামরিচ ফালি ২টি, শুকনো মরিচ ফালি ১টি, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, সয়াবিন তেল ২ টেবিল-চামচ, সয়াসস ১ টেবিল-চামচ, রসুন ১টি, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল-চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি

মাংসে লবণ, গোলমরিচ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে রসুন দিয়ে ভাজুন। মাংস দিয়ে নেড়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। এক কাপ পানি দিয়ে ফুটান। মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে মরিচ, চিনি, সয়াসস দিয়ে মাঝারি আঁচে ৫ মিনিট সিদ্ধ করুন। মাঝে মাঝে মাংস উল্টে দিন, যাতে পুড়ে না যায়। মাংস সিদ্ধ হলে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে নিন।

 

ঝাল বিরিয়ানি

উপকরণ

মাংস ২ কেজি, বাসমতি অথবা পোলাওয়ের চাল ১ কেজি, পেঁয়াজ ১ কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল-চামচ, বিরিয়ানির মসলা ৩ টেবিল-চামচ, টকদই ৪ টেবিল-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১১/২ টেবিল-চামচ, পুদিনাপাতা বাটা ১/২ টেবিল-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচামরিচবাটা ১ টেবিল-চামচ, সরিষার তেল ১/৪ কাপ, সয়াবিন তেল ১/২ কাপ, মাশরুম ১ কাপ,  ঘি ২ টেবিল-চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি ১৫ কাপ (গরম পানি), এলাচ ৩টি, দারুচিনি ১টি।

প্রণালি

রান্নার আগে চাল ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। বাসমতি চাল হলে ৪০ মিনিট আর পোলাওয়ের চাল হলে ২০ মিনিট। তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি হালকা বাদামি করে ভেজে এর মধ্যে আদা ও রসুনবাটা এবং লবণ দিয়ে কষিয়ে নিন। টকদই, টমেটো, বিরিয়ানির মসলা, শুকনা মরিচ গুঁড়া ও সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে  মাংসের টুকরাগুলো দিয়ে দিন। এবারে মাংস ভালোভাবে কষিয়ে সেদ্ধ হওয়ার জন্য পানি দিন। ভুনা ভুনা করে নিন। মাংস রান্না হলে ধনিয়া ও পুদিনাপাতা এবং কাঁচামরিচবাটা দিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন। চাল যে পরিমাণ তার দ্বিগুণ থেকে একটু কম পানি নিন। কারণ মাংসের মধ্যে ঝোল আছে। এবারে বিরিয়ানি রান্নার জন্য হাঁড়িতে সরিষার তেল, এলাচ ও দারুচিনি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা চাল পানি ঝরিয়ে নিন। চাল সাত থেকে আট মিনিট নেড়ে নেড়ে কষান। যখন সুন্দর ভাজা ভাজা হয়ে যাবে, তখন গরম করে রাখা পানি ও লবণ দিয়ে দিন। পানি ফুটলে ১০ মিনিট পর চাল যখন প্রায় ৮০ ভাগ সিদ্ধ হয়ে যাবে, তখন রান্না করা মাংস, মাশরুম ও কাঁচামরিচ দিয়ে চালের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। সাবধানে মেশাতে হবে, নইলে চালগুলো ভেঙে যাবে। ২৫ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। নামানোর আগে ঘি দিয়ে নামান।

Leave a Reply

Your identity will not be published.