‘পায়ের তলায় মাটি নাই’ যেভাবে বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে

‘পায়ের তলায় মাটি নাই’ যেভাবে বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে

মোহাম্মদ রাব্বী মৃধা। তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা। ২০১৫ সালে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণের মাধ্যমে মিডিয়া ক্যারিয়ারে তার অভিষেক হ্য়। এখন পর্যন্ত ২৫টির মতো বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেছেন। বানিয়েছেন বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিও। ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল আড়ংয়ের বিজ্ঞাপন। 

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৬তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্প্রতি রাব্বী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’ অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা করে নিয়েছে। আ উইন্ডো অন এশিয়ান বিভাগে ছবিটি প্রদর্শিত হবে। মোহাম্মদ রাব্বী মৃধা কখনো কল্পনাও করেন নি তার প্রথম সিনেমা এশিয়ার সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান পাবে। বিষয়টি তার কাছে স্বপ্নের মতো লেগেছে।

‘পায়ের তলায় মাটি নাই’-এর গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মোহাম্মদ রাব্বী মৃধা স্বয়ং। একেবারে সাধারণ মানুষের গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে একজন মানুষের জীবনে যে পরিবর্তনগুলো আসে তা-ই এখানে দেখানো হয়েছে। একজন মানুষের গ্রাম থেকে শহরে এসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে যে সংগ্রাম করেন, তাও ফুটে উঠেছে কাহিনিতে। গল্পের প্রধান চরিত্র সাইফুল। যিনি অ্যাম্বুলেন্স চালক। এই সাইফুলের দুই স্ত্রী। তাদের নিয়ে সামাজিকতার নানা দ্বন্দ্বের ভেতর দিয়ে সাইফুলকে যেতে হয়।

‘পায়ের তলায় মাটি নাই’-এর নির্মাণের বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ প্রসঙ্গে রাব্বীর ভাষ্য হচ্ছে, “আমি মধ্যবিত্ত পরিবারে মানুষ হয়েছি। যে কারণে সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়েই বেড়ে উঠতে হয়েছে। যখন আমি ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’ ছবির কাজ শুরু করি, তখন অনেকেই বলেছেন এ গল্প চলবে না। এ ধরনের গল্প দেখার জন্য আমাদের দর্শকরা এখনো তৈরি নয়। সেই সময় হতাশাও বাসা বেঁধেছিল মনে। তবুও এগিয়েছি। ছবির প্রযোজক আবু শাহেদ ইমন যখন সাহস দিলেন, তখন কাজটি শুরু করি। গত বছরের শুরুতে সিনেমার চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া তৈরি করি। এরপর কিছু কাটছাঁট করে চূড়ান্ত গল্প এবং আউটলাইন দাঁড় করাই। একসময়ে শুটিংয়ে যাই। এক বছরের সাধনার ফল ছবিটি। শুটিং করেছি করোনার মধ্যে। ছবিটির কাজ শুরুর আগে জানতাম না কীভাবে শুটিং শেষ হবে।"

তিনি আরও বলেন, ‘নানা দেশের সিনেমা দেখে, বই পড়ে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছি। করোনার কারণে অনেক ছোট টিম নিয়ে কাজটি করেছি। ছবির প্রযোজকও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে আমায় গাইড করেছেন। কাজে স্বাধীনতা দিয়েছেন। ছবিটি ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছি। ছবির অভিনয়শিল্পীরাও তাদের সেরাটা দিয়েছেন বলেই এখন ফল পাচ্ছি।’

Leave a Reply

Your identity will not be published.