বাংলাভিশনে শুরু হচ্ছে নতুন মেগা ধারাবাহিক ‘গুলশান এভিনিউ: সিজন ২’। ‘গুলশান এভিনিউ: সিজন ২’ প্রচার উপলক্ষে ২৮ নভেম্বর দুপুরে বাংলাভিশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এখানে চ্যানেলের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ধারাবাহিকটির নির্মাতা নিমা রহমান ও নির্বাহী প্রযোজক তারিক আনাম খান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্পর্কের টানাপোড়েন আর এক বনেদি বাড়ির অন্দরের বিচিত্র জীবনের কাহিনি দেখতে পাওয়া যাবে ‘গুলশান এভিনিউ: সিজন ২’-এ। তবে এই গল্পটির সঙ্গে আগের ‘গুলশান এভিনিউ’-এর কোনো সম্পর্ক নেই। গল্পটি একেবারেই নতুন। তবে আগের ধারাবাহিকটির সঙ্গে এর সাদৃশ্য হলো, এটিও উচ্চবিত্তদের গল্প।
নিমা রহমান বলেন, “আমি বড় গল্প পছন্দ করি। আর আগের ধারাবাহিকটির মতো এই ধারাবাহিকেও উচ্চবিত্তের গল্প তুলে ধরছি। এটা এ কারণে যে আমি উচ্চবিত্তদের খুব ভালো করে জানি। তাদের জীবনধারা অনেক কাছ থেকে দেখেছি।...উচ্চবিত্ত নারীদের সাজগোজ, অলংকার, গ্ল্যামার দেখতে দর্শকদের ভালো লাগে। তাদের মনে এক অন্য ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি হয়।...আমি একবার গ্রামে এক গৃহবধূকে বলতে শুনেছিলাম, টেলিভিশনের নাটকে মেয়েদের বড়ো সুন্দর লাগে। রানী রানী ভাব। এমনই সুন্দর ও গ্ল্যামারাস নারীদের দেখা যাবে ‘গুলশান এভিনিউ -সিজন ২’-এ।”
তারিক আনাম খান বলেন, “গুলশান এভিনিউ -সিজন ২’ নির্মাণ করা হয়েছে এ প্রজন্মের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। আর এখন যেহেতু ডিজিটাল যুগ, সেহেতু এই সময়ের প্রযুক্তিরও নানা বিষয় তুলে ধরা হবে ধারাবাহিকটিতে। যেমন, বিদেশে অবস্থান করা স্বজনের সঙ্গে বাড়ির কর্তা কথা বলছেন ভিডিও কলে। এমনই আরও নানা কিছু। বলা যায়, আধুনিক অনেক কিছুর সমন্বয় দেখা যাবে ধারাবাহিকটিতে। প্রত্যেকটি পর্বেই থাকবে চমক। ড্রামা। বারবার কাহিনি নতুন দিকে মোড় নিবে।...আগের ধারবাহিকে আমি অভিনয় করেছিলাম এক ভালো মানুষের চরিত্রে। আর এই ধারাবাহিকে একটি নেগেটিভ চরিত্রে পারফরম করেছি আমি। খল চরিত্র।...এই ধারাবাহিকে যারা অভিনয় করেছেন, তাদের অধিকাংশই নবাগত। রীতিমতো ইন্টারভিউ নিয়ে তাদের সিলেক্ট করেছি আমরা। পরে তাদের গ্রুমিং করা হয়েছে। আশা করছি, তাদের অভিনয় সবার ভালো লাগবে।”
নতুন ধারাবাহিকটির কাহিনিধারায় দেখা যাবে, ঢাকার চৌধুরী পরিবার। বনেদিয়ানা যাদের রক্তে। আজও তাদের ঠাটবাট দেখার মতো। ঢাকার উপর মহলের তাবড় তাবড় লোকদের সঙ্গে ওঠাবসা। প্রভাব প্রতিপত্তি আর অর্থ যতই আকাশছোঁয়া হোক, আজও এই পরিবার নিয়ম-নীতিতে সেকেলে। আজও এদের বাড়ির মেয়েরা শিক্ষিত হলেও ঘরের মধ্যে থাকাই তাদের বিচরন। অবশ্য ঢাকা শহরের অভিজাত পাড়ায় বিশাল বাড়ির মেয়েরা বন্দি, এমনটা ভাবার কোনো মানে নেই।
চৌধুরী বাড়ির বর্তমান কর্তা ফাহিম আহমেদ চৌধুরী। তার এক কথায় বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায়। সে আসলে বেগম ফৌজিয়া বিবির হাতের পুতুল। চৌধুরী পরিবার আর পারিবারিক ব্যবসা চলে ফৌজিয়ার ইশারাতেই। তাঁর ছেলে আফতাব ভালোবেসে ফেলে অফিসের সামান্য এক কর্মচারী ইলোরাকে। ব্যাপারটা যখন কেলেঙ্কারির দিকে এগোয়, তখন আফতাবকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয় রূপসী নৌরিনের সঙ্গে। কিন্তু একবার যে বাঘ রক্তের স্বাদ পেয়েছে, তাকে আটকে রাখা কি এতই সহজ? নৌরিনের রূপ, গানের অসামান্য গলা কিছুই আফতাবকে ছুঁতে পারে না।
যখন নিজের ছেলের উপর থেকে সব ভরসা উঠে যাচ্ছে, তখন ফাহিম ও ফৌজিয়া আঁকড়ে ধরে চৌধুরী বাড়ির আরেক ছেলে আরহানকে। আরহান ফাহিমের খালাত ভাইয়ের ছেলে।
আরহান বিদেশে থেকে প্রেমে জড়ায় মনিকার সঙ্গে। তার আলাপ হয় রণ নামে একজনের সঙ্গে, মনিকার সূত্রেই। তারা সবাই দেশে ফিরে আসে। চৌধুরী বাড়ির মেয়ে আফরিনের সঙ্গে রণর একটা টক-ঝাল সম্পর্ক তৈরি হয় প্রথম থেকেই।
সামনে আসে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সলিসিটর গুলাম আর ফৌজিয়ার কলেজজীবনের সম্পর্ক। ফৌজিয়ার তাকে প্রত্যাখ্যান, অর্থ আর ক্ষমতার লোভে ফাহিমকে বিয়ে। সেই রাগেই গুলাম চায় ফৌজিয়াকে বরবাদ করতে। স্বামীর কাছে প্রত্যাখ্যান পেতে পেতে আর নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ফৌজিয়া ও নৌরিনের সংঘাত। সেই সংঘাতের মধ্য দিয়ে সকলের সামনে আসবে ফাহিমের আরেক সন্তানের খবর। তারপর কী হবে? জানা যাবে, নতুন মেগা ধারাবাহিক নাটক ‘গুলশান এভিনিউ: সিজন ২’-এ।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাভিশনের নিজস্ব প্রযোজনায় নির্মিত নতুন এই মেগা ধারাবাহিকটি। নাটকটি প্রচার হবে সপ্তাহের ৫ দিন বুধ থেকে রবিবার, রাত ৮টা ২০ মিনিটে। এতে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, তানভীন সুইটি, দীপা খন্দকার, ফারজানা চুমকি, মিম চৌধুরী, সুব্রত চক্রবর্তী, চৌধুরী মাজহার আলী, শীবা, শতাব্দী ওয়াদুদ, শেলী আহসান, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, রিয়াদ রায়হান, তৃষ্ণা হাওলাদার, আফরোজা আক্তার, নিলুফার ইয়াসমিন, অধরা প্রিয়া, নাঈমা আলম মাহা, মোস্তাফিজ শাহিন, জোনায়েদ বোগদাদী, সালমান আরাফাত, বাপ্পা, শ্রাবণ, মুন্নাসহ আরও অনেকে।
Leave a Reply
Your identity will not be published.