এক সাক্ষাৎকারে বলিউডের কাপুর খান্দানের বেটি কারিশমা কাপুর বলেছেন, তার প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুর হানিমুনের রাতেই তাকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি সেই রাতে বন্ধুর শয্যাসঙ্গিনী হতেও প্রস্তাব দিয়েছিলেন সঞ্জয়।
রণধীর কাপুর ও ববিতার বড় মেয়ে চলচ্চিত্রের আলো-ছায়ার জগতে পা রাখেন ১৯৯১ সালে ‘প্রেম কয়েদি’ ছবির মাধ্যমে। ছবিটি হিট হয় এবং মাত্র কয়েক বছরেই বলিউডে নিজের একটি শক্ত জায়গা তৈরি করে ফেলেন কারিশমা। একাধিক ফিল্মফেয়ারসহ জাতীয় পুরস্কারও এই অভিনেত্রী অর্জন করেন। তবে ব্যক্তিগত জীবনে কখনোই সুখে ছিলেন না তিনি।
১৯৯২ সালে অজয় দেবগনের সঙ্গে হৃদয়ঘটিত সম্পর্কের জালে জড়ান কারিশমা। তবে ১৯৯৫ সালেই এই সম্পর্কে ভাঙন ধরে। এরপর অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন কারিশমা। তাদের বিয়েও হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারিশমার মা অভিষেকের ক্যারিয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তার যুক্তি ছিল, বিয়ের পরও অভিষেক বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকবে। ফলে কারিশমা ও অভিষেকের দাম্পত্যজীবন মসৃণ হবে না। ফলে এই বিয়ে আর শেষ পর্যন্ত হয় নি। যা’হোক ২০০৩ সালে বিজনেস টাইকুন সঞ্জয় কাপুরকে বিয়ে করেন কারিশমা। ২০০৫ সালে জন্ম হয় মেয়ে সামায়রার। ২০১০ সালে পৃথিবীর মুখ দেখে ছেলে কিয়ান। এরপর সঞ্জয়-কারিশমার সম্পর্কের আবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে কারিশমা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। পরে ২০১৫ সালে শ্বশুর বাড়ি দিল্লি থেকে বাপের বাড়ি মুম্বাই চলে আসেন দুই সন্তানকে নিয়ে। শেষমেষ ২০১৬ সালে বোঝাপড়ার মাধ্যমে দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন কারিশমা।
দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে কোনো দিন মিডিয়ার কাছে মুখ খোলেন নি কারিশমা। এ নিয়ে শুধু একটি সাক্ষাৎকার রয়েছে। সেখানে তিনি প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুর সম্পর্কে গুরুতর কথা বলেন। তিনি বলেছেন, মধুচন্দ্রিমার রাতেই সঞ্জয় তাকে বন্ধুর কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি সেই রাতে বন্ধুর শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন সঞ্জয়। কারিশমা রাজি না হওয়ায় তাকে মারধরও করেন প্রাক্তন স্বামী।
সাক্ষাৎকারে কারিশমা আরও জানিয়েছেন, বিয়ের দিন থেকেই স্বামী সঞ্জয় ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। এ ছাড়া বিয়ের পরও সঞ্জয়ের সঙ্গে তার প্রাক্তন স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল এবং সেটি শুধু ‘ভালো বন্ধুত্ব’ নয়। তাদের মধ্যে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে কোনো রাখডাকও ছিল না। কারিশমার সামনেই সঞ্জয় সাবেক স্ত্রী ডিজাইনার নন্দিতা মাহতানিকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন। এ বিষয়ে কথা বলায় দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন কারিশমা।
ফেলে আসা দাম্পত্য নিয়ে কারিশমার ভাষ্যে কারও কারও মনে খটকা লাগতে পারে। তারা ভাবতে পারে, বিয়ের দিন থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির মানুষদের দ্বারা তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আর হানিমুনের রাতেই সঞ্জয় কারিশমাকে বন্ধুর কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন, এটাও অবিশ্বাস্য। কেননা সঞ্জয়ের তো টাকা-পয়সার অভাব নেই। আচ্ছা, এই বিষয়টি মেনে নিলেও সঞ্জয় যখন কারিশমাকে সেই রাতেই বন্ধুর শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার কথা বলেন, তখন শুধু আপত্তি না জানিয়ে কেন সেদিনই দাম্পত্যের ইতি ঘটালেন না? কেন এরপরও দুটি সন্তানের মা হলেন কারিশমা?
কারিশমার মা ববিতা একজন স্বাধীনচেতা নারী। তিনি স্বামী রণধীরের অনাকাঙ্খিত আচরণ মেনে নেন নি। দুই সন্তানকে নিয়ে কাপুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন; তাদের নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। সেই মায়ের মেয়ে হয়ে কারিশমা দিনের পর দিন স্বামীর অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছেন, সহ্য করেছেন সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক- এটা মেনে নিতে কষ্ট হতে পারে কারও কারও, বিগত দাম্পত্য নিয়ে কারিশমার বয়ান পড়ে।
পাঠক, আপনার কী অভিমত?
Leave a Reply
Your identity will not be published.