মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমিতে

মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমিতে

এ দেশের একটি সোনালি অতীত রয়েছে। স্বর্ণালী সেই অধ্যায়ে আলোকিত মানুষেরা বিচরণ করতেন। তাঁরা আপন প্রতিভার দ্যুতিতে নিজেদের জীবনকে যেমন উদ্ভাসিত করেছেন, তেমনি এ দেশের মানুষকেও আলোকিত করার মহান ব্রতে থেকেছেন সচেষ্ট। এইসব মানুষের শেকড় অন্বেষণে অন্যদিন কাজ করে যাচ্ছে।

এবার উল্লেখ করা হলো ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অমর স্রষ্টা কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়িকে। আজ তাঁর ১৯৮তম জন্মবার্ষিকী। কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আমরা এখন সাগরদাঁড়িতে দাঁড়িয়ে। অদূরে কপোতাক্ষ নদ বয়ে চলেছে। তবে বলাই বাহুল্য, কপোতাক্ষ বেগবান নয়, ক্ষীণ স্রোতস্বিনী।

ঢাকা থেকে দূরগামী বাসে চেপে আমরা এসেছি যশোর শহরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহের সামনে। এখানকার বাসস্টেশন থেকে লোকাল বাসে চড়ে এসেছি কেশবপুর। কেশবপুর থেকে ‘হেলিকপ্টার’ (অত্র এলাকায় মোটরসাইকেলকে ‘হেলিকপ্টার’ বলা হয়)-এ চেপে এসেছি সাগরদাঁড়িতে। উদ্দেশ্য মধুকবি তথা মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি দেখা এবং তা অন্যদিন পাঠকদের জানানো।

মধুসূদন জন্মেছিলেন আমাদের চোখের সামনে বয়ে যাওয়া এই কপোতাক্ষ নদের তীরে, এই সাগরদাঁড়ি গ্রামের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে, ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত, মাতা জাহ্নবী দেবী।... নদের তীরে বয়ে যাওয়া বাতাসে কপোতাক্ষকে নিয়ে রচিত মধুসূদনের বিখ্যাত সনেট আমাদের চেতনায় ভেসে উঠল- ‘সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে।/সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে;/সতত (যেমতি লোক নিশার স্বপনে/শোনে মায়া-মন্ত্রধ্বনি) তবে কলকলে/জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!/বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,/ কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে ?/দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে!/ আর কি হে হবে দেখা ? যত দিন যাবে,/ প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে/ বারি-রূপ কর তুমি; এ মিনতি, গাবে/বঙ্গজ-জনের কানে, সখে, সখা-রীতে/ নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেম-ভাবে/ লইছে যে তব নাম বঙ্গের সঙ্গীতে।’ এই সনেটে মধুসূদনের আক্ষেপ ঝরে পড়েছে- ‘আর কি হে হবে দেখা...’। সত্যিই তাই, কপোতাক্ষের দেখা আর পান নি মধুসূদন। এই সনেটের রচনাকাল ১৮৬৫-৬৬ সাল। অন্যদিকে, শেষবারের মতো কবি সাগরদাঁড়িতে, কপোতাক্ষের তীরে এসেছিলেন ১৮৬২ সালে। তাঁর সঙ্গে ছিল দ্বিতীয় স্ত্রী এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া হোয়াইট এবং পুত্র-কন্যারা।

আমরা দাঁড়িয়ে আছি কপোতাক্ষের তীরে শান বাঁধানো ঘাটে। এ ঘাটটি ‘বিদায় ঘাট’ নামে পরিচিত। এখান থেকে বজরাতে চেপে তৎকালে কলকাতাতে যেতেন দত্ত বাড়ির মানুষরা। মধুকবিও ১৮৩৩ সালের একদিন সাগরদাঁড়ি ছেড়ে কলকাতার খিদিরপুরে গিয়েছিলেন, ভর্তি হয়েছিলেন লালবাজার গ্রামের স্কুলে; সেখানে ইংরেজি, ল্যাটিন ও হিব্রু ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয় তাঁর সাগরদাঁড়িতেই- পাশের শেখপুরা গ্রামে জনৈক মৌলভি সাহেবের কাছে। মৌলভি সাহেবের কাছে মধু কবি বাংলা ও ফারসি ভাষায় শিক্ষা লাভ করেন।... ১৮৩৭ সালে মধুসূদন ভর্তি হন হিন্দু কলেজে। সেখানেই প্রথম হাতে লেখা পত্রিকা প্রকাশ করেন তিনি। ১৮৪১ সালে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করে হিন্দু কলেজের সিনিয়র বিভাগে ভর্তি হন। তবে ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করার পর যখন পিতৃগৃহ স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেন, তখন হিন্দু কলেজেও তিনি আর পড়তে অসমর্থ হন। ফলে ভর্তি হন বিশপ্স কলেজে। ১৮৪৭ সালে তিনি বিশপ্স কলেজ ত্যাগ করেন। মধুকবির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি ঘটে এখানেই। যদিও ১৮৬২ সালে ইংল্যান্ডের গ্রেজ ইন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ব্যারিস্টারি শিক্ষার জন্যে। এবং এক সময় তিনি ব্যারিস্টারি শিক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছিলেন।

‘বিদায় ঘাট’-এর পাশে মধুকানন পার্ক। বিভিন্ন ফুল গাছের সমারোহ এখানে। দেখে চোখ ও মন— দুইই তৃপ্ত হলো। বেঞ্চে বসে পার্কটির চারদিকের সৌন্দর্য উপভোগে মগ্ন হলাম। গাছের ছায়ায়, ফুলের সৌরভে আর মৃদুমন্দ হাওয়ায় কী যে ভালো লাগল!

মধুকানন পার্কের বিপরীতে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। এখানে আছে একটি পাঠাগার- মাইকেল মধুসূদন পাঠাগার। স্থাপিত হয়েছে বাংলা ১৩৭৭ সালে। এই পাঠাগারে মধুকবির রচিত গ্রন্থাবলি যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে বাংলা সাহিত্যের আরও অনেক স্মরণীয় স্রষ্টার রচনাবলি।... ডাকবাংলোয় থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে যে কেউ এখানে থাকতে পারেন।

সাগরদাঁড়ির জেলা পরিষদ ডাকবাংলো ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়ল দুটি কালো স্তম্ভ- যার গায়ে উৎকীর্ণ রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের দুটি সনেট। একটিতে লেখা রয়েছে সেই বিখ্যাত সনেট ‘বঙ্গভাষা’- ‘হে বঙ্গ, ভান্ডারে তব বিবিধ রতন’-/ তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি,/ পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ/ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি...।’ অন্য স্তম্ভের গায়ে উৎকীর্ণ ‘মাতৃভাষা’ শীর্ষক সনেটটি- ‘নিজাগারে ছিল মোর অমূল্য রতন/অধম; তা সবে আমি অবহেলা করি/ অর্থ লোভে দেশে দেশে করিনু ভ্রমণ/ বন্দরে যথা বাণিজ্যের তরী...।’ 

জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর অদূরে সাগরদাঁড়ি গ্রামের প্রধান আকর্ষণ- কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পৈতৃক আবাস ‘দত্তবাড়ি’। এখন এই বাড়িটির নাম ‘মধুপল্লি’। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি পরিচালিত। দর্শনার্থীরা দুই টাকার টিকিটের বিনিময়ে মধুপল্লি ঘুরে দেখতে পারেন। এখানে রয়েছে কবি পরিবারের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, পাঠাগার ইত্যাদি।... এই মধুপল্লি এলাকায় প্রতি বছর ২৫-২৭ জানুয়ারি- এই তিনদিন মধুমেলা বসে। মধু-প্রেমিকরা ছুটে আসেন এখানে। সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এ মেলায় যোগ দেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন, স্বনামধন্য সাহিত্যিক-সমালোচকদের বক্তব্য শোনেন, নানা ধরনের দ্রব্যসামগ্রী কেনেন, মুখরোচক খাবার খেয়ে তৃপ্তি পান।

মধুপল্লি তথা দত্ত বাড়িটি বিরাট এলাকা জুড়ে। কয়েকটি অংশে বিভক্ত। অধিকাংশই একতলা। শুধু পূজামণ্ডপ সংলগ্ন ডান পাশের দালান এবং তৎসংলগ্ন বিল্ডিংটি দোতলার।

শুরুতেই একতলার একটি বড় দালান। এটি বর্তমানে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর পাশের ছোট দরজা দিয়ে অন্দরমহলে প্রবেশের পর চোখে পড়বে একতলার দুটি দালান। বেশ বড় আঙিনা। চারদিকে উন্মুক্ত পরিবেশ। বাতাস খেলা করে এখানে। ফলে এখানে প্রবেশের পর আমাদের শরীর যেন জুড়ে গেল!... একসময় বেরিয়ে এলাম আমরা সেখান থেকে। তখন আমাদের চোখে পড়ল মধুপল্লির দক্ষিণ পাশে রয়েছে কবির আবক্ষমূর্তি- যেটি আগে চোখে পড়ে নি অন্যমনস্ক থাকার ফল। এর মনোরম কারুকার্য অবলোকন করতে করতে নিচের দিকে চোখ পড়ল। দেখলাম মধুকবির জন্ম ও মৃত্যুর সন-তারিখ উৎকীর্ণ রয়েছে। তাঁর জন্ম তারিখটি আমরা জানিই- ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন, রোববার। আমাদের তখন মনে পড়ে গেল, কলকাতার আলীপুর ইউরোপীয় জেনারেল হাসপাতালে দুপুর দুটোয় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মধুসূদন। তখন তাঁর পাশে ছিল পুত্র-কন্যা-জামাতা-বন্ধুজন। ৩০ জুন সেন্ট জেমস চার্চ-এর ধর্মযাজকের উদ্যোগে খ্রিষ্টীয় রীতি অনুযায়ী কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোডের সমাধি ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পূর্ণমর্যাদায় মধুসূদনের মরদেহ সমাহিত।... আমাদের এটাও মনে পড়ে গেল, মধুপল্লির বাইরে পথের প্রান্তে টাঙানো একটি বোর্ডে রং-কালি দিয়ে লেখা রয়েছে কবি রচিত সমাধি-লিপি- ‘দাঁড়াও, পথিক বর, জন্ম যদি তব/বঙ্গে। তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে/(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি/বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত/ দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!/ যশোরে সাগরদাঁড়ি-কপোতাক্ষ-তীরে/ জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি/ রাজনারায়ণ নামে জননী জাহ্নবী।’

মধুপল্লিতে আবক্ষমূর্তি দেখার পর চোখে পড়ল পাশের একটি লোহার গেট। এই গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢোকার পর চোখ জুড়িয়ে গেল। একপাশে খোলা আঙিনায় ফুলের বাগান। নানা ধরনের ফুলের সৌরভে মৌ মৌ করছে চারপাশ। অন্যদিকে পূজামণ্ডপ। এর থামগুলোর কারুকার্য দৃষ্টি আকর্ষণীয়। এখানে কবির পরিবারের বিগ্রহ ছিল এবং নানা সময়ে নানা পূজা হতো এখানে। অবশ্য এখনো এই পূজামণ্ডপে পূজা হয়। শরৎকালে দুর্গাপূজা।

পূজাম-পের ডানদিকে ছোট ছোট কয়েকটি কক্ষ। এক কক্ষ থেকে আরেক কক্ষে যাতায়াত করা যায়। এইসব কক্ষে এখন কবি পরিবারের ব্যবহৃত আসবাবপত্র ও জিনিসপত্র রক্ষিত হচ্ছে। যেমন- কাঠের সিন্দুক, কবি পরিবারের পূর্বপুরুষদের বাসভবন সংস্কারকালে (সংস্কার কাজ শুরু হয় ১৯৬৫ সালে) প্রাপ্ত ব্যবহার্য লৌহ, চিনে মাটি ও মৃৎ পাত্রের বিভিন্ন দ্রব্যাদির খণ্ডিত অংশ; কাঠের আলমারি, স্টিলের বাক্স, কাঠের বাক্স, টিফিন ক্যারিয়ার, নক্সাকৃত হাতলসহ লোহার তৈরি দা, লোহার তৈরি টুনির বক্স, কলের গান, পাথরের গামলা, খাট, টেবিল, আয়না, ড্রয়ারযুক্ত আলনা, লোহার সিন্দুক।... কবি পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্র দেখার পর সর্বশেষ কক্ষ থেকে বেরিয়ে উন্মুক্ত একটি জায়গায় দাঁড়ালাম। বাঁ দিকে দালান ঘেঁষে একটি বাঁধানো জায়গা চোখে পড়ল- যেখানে একটি তুলসী গাছ শোভা পাচ্ছে। মধুপল্লির একজন কর্মচারী জানালেন, এখানে কবি মধুসূদন দত্ত জন্মেছিলেন।

পূজাম-পের সামনে বাগান সংলগ্ন ডান দিকে একটি গ্রন্থাগার। এখানে প্রবেশ করার পর আমাদের চোখে পড়ল মধুকবির রচনাবলিসহ অন্যান্য লেখকের বহু গ্রন্থ র‌্যাকে শোভা পাচ্ছে। দরজার বামদিকের দেয়ালে একটি কালো বোর্ডে মধুকবির সংক্ষিপ্ত জীবনী লেখা রয়েছে, এর শেষে উল্লেখ করা হয়েছে কবি রচিত গ্রন্থাবলির শিরোনাম- শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯), একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৬০), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ (১৮৬০), পদ্মাবতী (১৮৬০), তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য (১৮৬০), মেঘনাদবধ কাব্য (১ম খণ্ড, ১৮৬১), মেঘনাদবধ কাব্য (২য় খণ্ড, ১৮৬১), ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬১), কুষ্ণকুমারী (১৮৬১), বীরাঙ্গনা কাব্য (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতাবলি (১৮৬৬), হেক্টর বধ (১৮৭১), মায়াকানন (১৮৭৪), The Captive Ladie (1849), Ratnabali (1858), Sermista (1859), Nil Dururpun (1861)। ...ডান দিকের দেয়ালে আরেকটি কালো বোর্ডে লেখা রয়েছে কবির বংশপঞ্জি। এখানে দেখা যাচ্ছে, মধুকবির পূর্বপুরুষ শ্রীরামরাম দত্তের ছেলে রাম কিশোর দত্ত, তাঁর তিন ছেলে- রামনিধি দত্ত, দয়ারাম দত্ত, মানিক রাম দত্ত। রামনিধি দত্তের চার ছেলে- রাধামোহন দত্ত, মদনমোহন দত্ত, দেবীপ্রসাদ দত্ত এবং রাজনারায়ণ দত্ত। কনিষ্ঠ পুত্র রাজনারায়ণ দত্তের তিন ছেলে- মধুসূদন দত্ত, মহেন্দ্রনাথ দত্ত (অল্প বয়সে মৃত্যু) এবং প্রসন্ন কুমার দত্ত (অল্প বয়সে মৃত্যু)। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রথম স্ত্রী রেবেকা ম্যাকটাভিসের গর্ভজাত সন্তান- কেনেথ বার্থা, ফিবি রেবেকা সালফেন্ট, জর্জ জন ম্যাকটাভিস ডটন এবং মাইকেল জেমস ডটন। মধুসূদনের দ্বিতীয় স্ত্রী এ্যামিলিয়া হেনরিয়েটা হোয়াইটের গর্ভজাত সন্তানরা হচ্ছেন- এলাইজা শর্মিষ্ঠা দত্ত, মেঘনাদ মিল্টন দত্ত এবং আলবার্ট নেপোলিয়ন দত্ত। উল্লেখ্য, মধুপল্লির একজন কর্মচারী দত্তবাড়ির সন্তান। তাঁর নাম গোবিন্দ দত্ত। তাঁর পিতার নাম হরিপদ দত্ত, পিতামহ অনুপ্রসাদ দত্ত, প্রপিতামহ মদনমোহন দত্ত।

দত্ত বাড়ির তথা মধুপল্লি থেকে বের হওয়ার পর বিপরীত দিকের মধুসূদন মিউজিয়ামটি দৃষ্টি আকর্ষণ করল। এটি বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা খসরু পারভেজ। এখানে রয়েছে মধুকবির প্রতিকৃতি, পতœীদ্বয়ের প্রতিকৃতি, কবির বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের আলোকচিত্র, বংশপঞ্জি ও রচনা তালিকা ইত্যাদি।

মধুকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি থেকে মোটর সাইকেলে করে যখন যশোরে ফিরছিলাম তখন বারবার মনে পড়ছিল ‘বঙ্গভাষা’ সনেটটি- ‘হে বঙ্গ, ভান্ডারে তব বিবিধ রতন...।’

সত্যি, এদেশের এখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কত না স্মৃতিজাগানিয়া স্থান, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রাণপুরুষদের উৎসমূল। আমরা কজন তার খোঁজ রাখি!

Leave a Reply

Your identity will not be published.