চেনা-অচেনা ফরীদি

চেনা-অচেনা ফরীদি

হুমায়ূন ফরীদি। এই মানুষটি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের চেহারা দেখে হতাশ হয়ে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় যাত্রাদল গঠন করেছিলেন। কিন্তু দলটি বেশি দিন না টেকায় বাউন্ডেলে জীবনযাপন করেছেন কয়েক বছর। অতঃপর অর্থনীতিতে পড়াশোনা এবং একসময়ে অভিনয়ে থিতু হওয়া। ‘অভিনয় করেই জীবনযাপন করব’— এমন স্পর্ধিত উচ্চারণ তার মুখ থেকেই শোনা গিয়েছিল একসময়, যখন অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার ব্যাপারটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ।

হুমায়ূন ফরীদি কোনো সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন না। তবু তিনি ছিলেন সম্রাট। অভিনয় জগতের এক এবং অদ্বিতীয়। ট্র্যাজেডি এবং কমেডি দুই ধারার অভিনয়েই ছিলেন পারঙ্গম। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র- সর্বত্রই সফল। কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে তার আসন। 

তিনিই ‘নায়ক হতে হলে সুন্দর হতে হবে’ এই কনসেপ্টটি ভেঙে দেন ছোটপর্দায়। বড়পর্দার সবচেয়ে জনপ্রিয় খলনায়ক ছিলেন তিনিই। তার অভিনয়ে মন্ত্রমুগ্ধ সাধারণ দর্শক মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর করে তুলেছে প্রেক্ষাগৃহ- এমনকি নায়ককে যখন তিনি পিটিয়েছেন তখনো।

বহুমাত্রিক অভিনয়শিল্পী হুমায়ূন ফরীদির আজ ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হয়েছিল ২০০৯ সালে, সেই বছরের ঈদসংখ্যায়। সাক্ষাৎকারটির নির্বাচিত অংশ এখানে তুলে ধরা হলো এখানে, প্রয়াত এই অভিনয়শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে।

মোমিন রহমান: জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর দিকে চেয়ে কী মনে হয়? যদি আরেকবার জীবন শুরু করার সুযোগ পেতেন, কী করতেন? 

হুমায়ূন ফরীদি: জীবনটা শুরু করতে চাই খুব সাধারণভাবে। আমি এমনিতেই একজন সাধারণ মানুষ। সাধারণভাবেই শুরু করতে চাই। কোনো অসৎ কাজ করতে না হয়, সেভাবেই শুরু করব। নিজের কাছে নিজেকে কখনো যেন অপমানজনক মনে না হয়।

মোমিন রহমান: আপনি হাসতে এবং অন্যকে হাসাতে পছন্দ করেন। অসংখ্য জোকস আপনার জানা। আপনি নিজেও জোকস তৈরি করেন। এই জোকস কি আপনার কাছে এক ধরনের মুক্তি?

হুমায়ূন ফরীদি: জোকস তো অবশ্যই এক ধরনের মুক্তি। বিভিন্ন দেশে লাফিং ক্লাব আছে। হাসলে নাকি আয়ু বাড়ে। মন প্রফুল্ল থাকে। হাসলে তুমি যেখানে অবস্থান করছো, চারপাশে যারা আছে, তারা আনন্দিত হয়। এই আনন্দের মূল বিষয় হচ্ছে বিস্ময়। মানুষ বিস্মিত হলেই আনন্দিত হয়। কৌতুক করে যদি কোনো মানুষকে আনন্দ দিতে পারো, সেটা কিন্তু বিস্ময় থেকে আসে না। কীভাবে জোকসটা বলছো, তার ওপর নির্ভর করে। দেখা যায় একই জোকস দুজন বলছে। একজনেরটা বেশি ভালো লাগছে, অন্যজনেরটা কম ভালো লাগছে। সেটা বলার ভঙ্গি লাগে, কীভাবে তা উপস্থাপন করবে, তার ওপর নির্ভর করে।

মোমিন রহমান: আপনি গসিপ পছন্দ করেন না। এটা তো বাঙালিদের স্বভাব নয়। এই দুর্লভ গুণটি আপনার মধ্যে কীভাবে এলো?

হুমায়ূন ফরীদি: কীভাবে এল সেটা বলতে পারব না। তবে সত্যি যে আমি গসিপ করি না, পছন্দও করি না। হয়তো কখনো কখনো সমালোচনা করি, পরামর্শ দিই। সেটা গসিপের মধ্যে পড়ে না। যারা গসিপ করে, তারা যে খুব একটা উন্নত জীবন যাপন করে, সেটা আমার মনে হয় না। অন্যকে ছোট করে তো বড় হওয়া যায় না। আমাদের ধর্মেও আছে, তুমি যদি কাউকে ব্যঙ্গ করো, সেটা ভাষায় হোক ভঙ্গিতে হোক, সেই পাপের কোনো মাফ হয় না। সুতরাং যারা গসিপ করে তারা তো নিজের ক্ষতি করেই, ধর্ম থেকেও অনেক দূরে চলে যায়।

মোমিন রহমান: আপনি প্রচুর বই পড়েন। এমন কোনো বইয়ের কথা বলুন, যেটা পড়ে জীবনে প্রথম আপনি আলোড়িত হয়েছেন।

হুমায়ূন ফরীদি: অনেক আগের কথা। আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। সম্ভবত ১৯৬৬ সালের ঘটনা। আমি তখন একটা বই পড়ি। চৌরঙ্গী। শঙ্করের লেখা। বইটা পড়ে এত আলোড়িত হই যে বাবাকে গিয়ে বললাম, বাবা বইটা পড়েছ? বাবা বললেন, হ্যাঁ পড়েছি। এখন আর অত পড়া হয় না। কারণ যেটাই পড়তে যাই, মনে হয় পড়েছি। পড়াশোনাটা এখন সিলেক্টটিভ হয়ে গেছে।

মোমিন রহমান: সবচেয়ে প্রিয় লেখক?

হুমায়ূন ফরীদি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর ওপর কেউ নাই। তিনি অতীতের নন, বর্তমানের নন। ভবিষ্যতেরও নন। তিনি সর্বকালের। তাঁর গল্প, উপন্যাস, কবিতা, গান সবই আমার ভালো লাগে।

মোমিন রহমান: মৃত্যুকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন আপনি? মৃত্যু কী?

হুমায়ূন ফরীদি: মৃত্যু হচ্ছে অবধারিত। তুমি যখন জন্মেছ, মরতে তোমাকে হবেই।

মোমিন রহমান: মানুষ এটা জানে, তবু সবাই তা ভুলে থাকতে চায়।

হুমায়ূন ফরীদি: মহাভারতে এক অদ্ভুত কথা আছে। ধর্ম যখন যুধিষ্ঠিরকে জিজ্ঞেস করল, পৃথিবীতে সবচেয়ে আশ্চর্য জিনিস কী? যুধিষ্ঠির তখন উত্তর দিল- মৃত্যু অনিবার্য জেনেও মানুষ পৃথিবীতে এমনভাবে জীবনযাপন করে যেন সে অমর।

মোমিন রহমান: মৃত্যুকে মানুষের ভুলে থাকাই স্বাভাবিক। নইলে তো সে সহজভাবে বাঁচতে পারবে না।

হুমায়ূন ফরীদি: মানুষ যদি সারাক্ষণ মৃত্যুর কথা ভাবে সে কিন্তু পাপ করতে পারবে না। মৃত্যুচিন্তা আমাকে তাড়িত করতো পনের-ষোল বছর আগে। এখন মৃত্যুকে আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে সুন্দর জিনিস।

মোমিন রহমান: মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান।

হুমায়ূন ফরীদি: সে তো কবিতার কথা।...আমাকে কে যেন একবার জিজ্ঞেস করেছিল, কীভাবে মরতে চান? আমি বলেছিলাম, শিশিরের মতো টুপ করে মরে যেতে চাই।

মোমিন রহমান: প্রথম কার মৃত্যু কাছ থেকে দেখেছেন?

হুমায়ূন ফরীদি: আমার নানার। হঠাৎ মা’র কান্নার শব্দে ভোরবেলায় একদিন ঘুম ভেঙে যায়। এই সময় কেন কাঁদছে? উৎসুক আমি মাকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন, তোমার নানা মাঝরাতে মারা গেছেন। গিয়ে দেখলাম নানা অনেক লম্বা ছিলেন- মেঝেতে পড়ে আছেন। আমার মনে হলো, তিনি শুয়ে আছেন। সেই আমার প্রথম মৃত্যুকে দেখা।

মোমিন রহমান: কিশোর বয়সে এক সুন্দরী আপনাকে চড় মেরেছিল। ব্যাপারটি খুলে বলবেন কি?

হুমায়ূন ফরীদি: সে এখন কোথায় আমি জানি না। তার বয়স এখন কত হবে? আটান্ন-ঊনষাট। অন্যায়টা সে করেছিল, কিন্তু তা ঢাকতে সে আমাকে চড় মেরেছিল। নামটা বলব না। কেননা তার তো সংসার আছে। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে কিংবা শ্বশুরবাড়িতে ঝামেলা হতে পারে। যা হোক, চড়টা খাওয়ার পর আমি খুবই চমকিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, কাজটি কী করল!

মোমিন রহমান: তারপর চড় হয়তো আর খান নি কিন্তু সুন্দরীদের কাছ থেকে আঘাত পেয়েছেন। এমন কোনোকিছু…

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ, আঘাত পেয়েছি। এটা কীভাবে বলব?...আশাহত হওয়ার তো একটা ব্যাপার আছে। বিশ্বাসভঙ্গের ব্যাপার আছে। কষ্ট পাই। কষ্ট দেয়।...এই প্রসঙ্গে আর কিছু বলতে চাই না।

মোমিন রহমান: আর কোনো বেদনাদায়ক ঘটনা?

হুমায়ূন ফরীদি: কোনো বেদনাই এখন আর স্পর্শ করে না আমাকে। সমস্যা হচ্ছে, এখন আর কাউকেই সহজে বিশ্বাস করতে পারি না। আগে যেমন মানুষকে সাহায্য করার জন্য এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম, এখন আর সাহায্য করি না।

মোমিন রহমান: একটি চরিত্র কীভাবে রূপায়ণ করেন আপনি?

হুমায়ূন ফরীদি: আমি চরিত্রটি নিয়ে ভাবি। চরিত্রটির অতীত ভাবি। তার অভ্যাস কী? সে কী খেতে পছন্দ করে? কোন রং তার প্রিয়? যতটুকু খুঁটিনাটি ভাবা যায়, ততটুকুই ভাববার চেষ্টা করি। পদ্ধতিটা এরকম।

মোমিন রহমান: ১৯৭৩ সালে আপনি চাঁদপুরে ‘নটরাজ নাট্য সমাহার’ নামে একটি যাত্রাদল তৈরি করেছিলেন। দুটি যাত্রা মঞ্চস্থ করেছিলেন। কিন্তু বেশি দিন দলটি টিকে নি। এ বিষয়ে কিছু বলুন।

হুমায়ূন ফরীদি: তখন আমার এক বন্ধু ছিল। সে যাত্রা দল করার কথা বলল। আমি রাজি হলাম। দল তৈরি করলাম। কিন্তু বেশি দিন টিকে নি। অভিজ্ঞতাও ছিল না। বয়স তখন কত ছিল? বড় জোর একুশ। তারপর ‘বর্ণচোরা’ নামে একটি নাট্যদল করেছিলাম। দলটি বোধহয় এখনো আছে। তারপর তো মুক্তিযুদ্ধের পর লেখাপড়া করলাম না। ছন্নছাড়া জীবনযাপন করলাম প্রায় চার বছর। ১৯৭৫ সালে ভর্তি হলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি হতেও অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে। আমাকে ভর্তি নেবে না। তখন আমার বন্ধুবান্ধব, যারা তখন সিনিয়র হয়ে গেছে- পড়ে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে- তারা অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মালিক খসরু চৌধুরীকে বলল, স্যার ওর মার্কশিটটা দেখুন। দেখলেন। তারপর তিনি বললেন, এই কয়েক বছর পড়ো নি কেন? আমি বললাম, স্যার, এই প্রশ্নের কী উত্তর দেব বুঝে উঠতে পারছি না। আমার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে অনেককেই মেরে ফেলেছে, কেউ বিদেশে চলে গেছে। আমি বাঁচতে চাই। পড়তে চাই। শুনে তিনি নড়েচড়ে বসলেন এবং বললেন, ‘ঠিক আছে তুমি অর্থনীতিতে পড়তে পারো।’ তারপর তিনি ডিনকে ফোন করলেন এবং আমি ভর্তির অনুমতি পেয়ে গেলাম।

মোমিন রহমান: তারপর?

হুমায়ূন ফরীদি: সেলিম আল দীন, সেলিম ভাই ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, তিনি হঠাৎ আবিষ্কার করলেন যে আমি নাটক করি। ১৯৭৭ সালে জাহাঙ্গীরনগর আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতা হলো। শর্ত ছিল, যে হলের ছাত্র তারাই সেই নাটকটি লিখবে এবং অভিনয় করবে। ‘আত্মস্থ আগুন’ নামে একটি নাটক লিখলাম, ডিরেকশন দিলাম এবং অল্প কিছু অভিনয় করলাম। এটি ছিল কয়েকজন ফ্রাস্টেটেড ছেলেমেয়েদের জীবনকাহিনি। ওরা যেটা চায় সেটা পাচ্ছে না। সবকিছু মিলিয়ে অ্যাবসারিটি ছিল নাটকটির মধ্যে। তো সেখানে বিচারক হিসেবে ছিলেন বাচ্চু ভাই, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। নাটক দেখার পরে তিনি আমাকে বললেন, ‘ঢাকায় আমাদের একটা দল আছে। ঢাকা থিয়েটার। আপনি আসেন, কাজ করতে চাইলে কাজ করতে পারবেন। আপনার ভালো লাগবে।’ সেই থেকে শুরু।

মোমিন রহমান: ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হিসেবে মঞ্চে আপনি প্রথম অভিনয় করেন কোন নাটকে?

হুমায়ূন ফরীদি: শকুন্তলা। তক্ষকের চরিত্রে।

মোমিন রহমান: নার্ভাস হন নি?

হুমায়ূন ফরীদি: মঞ্চে সবাই নার্ভাস হয়। হার্টবিট বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমি নার্ভাস ছিলাম না। আমি তো এমনিতেই একটু বেপরোয়া টাইপের লোক। তাই নার্ভাস ছিলাম না, টেনশনে ছিলাম। দীর্ঘদিন পরে আমি অভিনয় করেছিলাম। সবাই বলেছিল, ভালো হয়েছে। তারপর ‘ফনিমনসা’য় অভিনয় করলাম।

মোমিন রহমান: ‘ফনিমনসা’য় তো আপনি সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন?

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ।

মোমিন রহমান: এই নাটকের মাধ্যমেই তো ঢাকা থিয়েটার প্রসেনিয়ামের বাইরে এল?

হুমায়ূন ফরীদি: সেলিম ভাই এবং বাচ্চু ভাই আমাদের আইডিয়া দিল- মঞ্চনাটকে পাশ্চাত্য যে রীতি তা আমরা ভাঙব। আমাদের দেশীয় যে জিনিস- গম্ভীরা, জারি, সঙ যাত্রা- সবই কিন্তু এক লাইনে হয়। দশর্ক যে স্তরে বসে থাকে সেখানেই হয়। এই বিষয়টি চিন্তা করে প্রসেনিয়াম ভেঙে নিয়ে আসা হয় ‘ফনিমনসা’য়। তারপর ‘কেরামতমঙ্গল’ করলাম। সেটি তো পুরোটাই বাইরে।

মোমিন রহমান: ‘কীত্তনখোলা’য়ও তো আপনি অভিনয় করেছিলেন?

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ, ছায়ারঞ্জনের চরিত্রে।

মোমিন রহমান: ‘কেরামতমঙ্গল’-এ তো আপনি আরো বড় চরিত্রে- কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শোনা যায় তিন মিনিটের দৃশ্যকে ইমপ্রোভাইজেশনের মাধ্যমে এগারো মিনিটে পরিণত করেছিলেন?

হুমায়ূন ফরীদি: আট মিনিট। আসলে কেরামতমঙ্গল-এ তো আমার অভিনয় করার কথা ছিল না। ফাইনাল শো’র দশ দিন আগে আমাকে বাচ্চু ভাই জানালেন যে, আমাকে অভিনয় করতে হবে। আমি বললাম, আমার তো প্রিপারেশন নেই। তিনি বললেন, তোমাকে করতেই হবে। আমি ছাড়ছি না। তখন আমার অবস্থাটা বোঝ। কেরামতমঙ্গল তো বিশাল নাটক। সাড়ে চার ঘণ্টার। সেটিকে কেটে পৌনে তিন ঘণ্টায় নিয়ে এসেছিলাম আমরা।

মোমিন রহমান: ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’তে মুনতাসীর তো অনেকেই করেছে। আপনিও করেছেন। সেখানে তো ইমপ্রোভাইজেশন করার আরো সুযোগ ছিল?

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ। অনেকখানি করেছিলাম। আসলে মুনতাসীর বেসিক্যালি করতো আমার বন্ধু সুজা। এখন সে ইউএসএ-তে থাকে। তো এক পর্যায়ে আমিও মুনতাসীর করেছিলাম।

মোমিন রহমান: ‘ধূর্ত উই’তে তো আপনি-

হুমায়ূন ফরীদি: আমি উই হয়েছিলাম। এটি ব্রেখটের একটি নাটক।মোমিন রহমান: অভিনয় রীতিতে কি কোনো পরিবর্তন এসেছিল?

হুমায়ূন ফরীদি: আমি চেষ্টা করেছিলাম। ওটা তো হান্ডেড পারসেন্ট কমেডি বেসড স্যাটায়ার ছিল। হিটলারের জীবনচরিত্র। খুবই ইন্টারেস্টিং।

মোমিন রহমান: ‘ভূত’ তো আপনার নির্দেশিত মঞ্চনাটক?

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ।

মোমিন রহমান: তারপর মঞ্চে নির্দেশনায় কিংবা অভিনয়ে আপনাকে আর দেখা যায় নি কেন?

হুমায়ূন ফরীদি: মঞ্চে কাজ করার জন্যে যে স্টেমিনা লাগে, যে শারীরিক শ্রম দিতে হয়, সেই সামর্থ্য আমার আর নেই এখন। মঞ্চে কাজ করতে গেলে অন্তত এক বছর সময় দিতে হবে আমাকে।

মোমিন রহমান: মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে মঞ্চ একটি সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা তো আর নেই?

হুমায়ূন ফরীদি: না। মোটামুটি কেটে গেছে।

মোমিন রহমান: আপনার দৃষ্টিতে এই সময়ে মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে কী সমস্যা বিরাজ করছে?

হুমায়ূন ফরীদি: স্ক্রিপ্ট। হক ভাই লিখেন না। সেলিম ভাই মরে গেলেন। সবেধন নীলমণি মামুনুর রশীদ। শাহদুজ্জামান নামে একজন লেখক আছেন। আরও কয়েকজন লেখক আছেন- তারা যদি নাটক লেখেন, তাহলে আমাদের মঞ্চনাটক অত্যন্ত রিচ হবে।

মোমিন রহমান: আমি শুনেছি আফজাল ভাইয়ের সহায়তায় আপনি বিটিভিতে প্রবেশ করেন এবং আফজাল ভাই পাঁচটি নাটক লেখেন আপনাকে ভেবে? পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে যে, আপনার প্রথম টিভি নাটক হচ্ছে আতিকুল হক চৌধুরী প্রযোজিত ‘নিখোঁজ সংবাদ’।

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ, ঠিকই আছে। আমি যখন আফজালকে বললাম যে, আমি টেলিভিশনে নাটক করব, তখন সে আমাকে আতিক ভাইয়ের কাছে নিয়ে গেল। সব জায়গায় আমার এন্ট্রিটা অদ্ভুত- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যলয়ে ভর্তি হওয়া, ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হওয়া...। আমি টিভিতে গিয়ে আতিক ভাইকে বললাম, আমি অডিশন দিয়ে টিভি নাটকে অভিনয় করতে চাই না। তিনি বললেন যে, ওটা কিছু না। একটা ফর্মালিটি মাত্র। আমি বললাম, না, আমি করতে পারব না। আর আপনি আমাকে কোন গ্রেড দেবেন? আতিক ভাই বললেন, কেন ‘সি’। ‘সি’ দিয়েই তো শুরু হয়। আমি বললাম, না, আমাকে ‘এ’ দিতে হবে। আতিক ভাই অবাক হয়ে বললেন, কী বলছ তুমি? ‘এ’ তো হয় না। নিয়ম নেই। আমি বললাম, নিয়ম মানি না। আমাকে দিতে হবে। পরে তিনি বললেন, দেখো ওটা আমার ক্ষমতার বাইরে। আমি বললাম, তাহলে আমি ইনলিস্টেড হতে চাই না। তখন আতিক ভাই বললেন, ‘বি’ দিচ্ছি। তিন মাস পরে ‘এ’ করে দেব। এভাবে টিভিতে ‘বি’ দিয়ে শুরু। আতিক ভাইয়ের ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এ কাজ করলাম। পরে আমার জন্যে  আফজাল তিন-চারটি নাটক লিখে ফেলল। আমিও করলাম।

মোমিন রহমান: বিটিভিতে ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিকে আপনি কানকাটা রমজান চরিত্রটি করেছিলেন। খুবই মোটা দাগের অভিনয় আর সাধারণ দর্শক তো বটেই সমালোচকেরাও প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত। অথচ আন্তন চেখভের ‘প্রজাপতি’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘অধরা’ নাটকে মাত্র দুটি দৃশ্যে পাঁচ মিনিটের জন্যে আপনাকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু অইটুকু ব্যাপ্তির মধ্যেই কী অসাধারণ অভিনয়! এখনো আমার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে। কেন রমজানের জন্যে আপনি প্রশংসিত হন আর ‘অধরা’-র সেই ছোট্ট চরিত্রের অভিনয় কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করে না?

হুমায়ূন ফরীদি: ‘সংশপ্তক’ তো ধারাবাহিক নাটক। অনেকগুলো পর্ব। অনেকদিন ধরে দেখানো হয়েছে। সেই জন্যে মানুষের মনের মধ্যে গিয়ে লাফায়। আর ‘অধরা’ হলো একক নাটক।

মোমিন রহমান: ‘অধরা’য় ক্ষুদ্র ব্যাপ্তির মধ্যে আপনার অভিনয়ে সিন্ধুর স্বাদ পেয়েছিল আমার মতো অনেকে।

হুমায়ূন ফরীদি: আমার সবচেয়ে ক্ষুদ্র চরিত্র হচ্ছে ‘বুনো হাঁস’ নাটকের। পঞ্চান্ন কিংবা বায়ান্ন মিনিটের পুরো নাটকে অভিনয় করেছিল আফজাল। আর আমার উপস্থিতি ছিল সর্বসাকুল্যে পনের সেকেন্ড।

মোমিন রহমান: মনে পড়েছে। আপনি ফ্যাসফ্যাসে গলায় ভৌতিক স্বরে কথা বলেছিলেন।

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ। নাটকে আমার একটাই ডায়লগ ছিল- ‘এউগগা টাকা দিবেন নি স্যার?’ তিনবার এই একটি মাত্র ডায়লগ বলেছিলাম। প্রথমবার আফজালের দিকে চেয়ে ওই ডায়লগটি বলেছিলাম। দ্বিতীয়বার যখন আফজাল ঘুষ খেয়ে অপরাধবোধে ভোগে, তখন বলি। লাস্ট সিনে আফজাল দৌড়ে এসে যখন কবরস্থানে পড়ে, তখন ওর দিকে চেয়ে আবার ওই ডায়লগটি বলি: ‘এউগগা টাকা দিবেন নি স্যার?’ এখনো আফজাল আমাকে বলে, ‘পুরো নাটকে আমি অভিনয় করেছি। আমার কথা কেউ বলে না। সবাই তোর কথা বলে।’

মোমিন রহমান: ‘অযাত্রা’ নাটকের কথা মনে পড়ছে। এই নাটকে আপনি একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। পেনশনের টাকার জন্যে শহরে এসেছেন। উঠেছেন এক ছাত্রের বাসায়। এই নাটকের একটি দৃশ্যে দেখা যায়-  আপনি খাবার শেষ করে শূন্য থালায় পানি ঢেলে, সেই পানিটুকু থালাতে নেড়েচেড়ে আবার খাচ্ছেন। এটা কি স্ক্রিপ্টে ছিল নাকি আপনি নিজে করেছেন?

হুমায়ূন ফরীদি: এটি স্ক্রিপ্টে ছিল না। একজন অভিনেতার দায়িত্বই হলো এগুলো করা। ক্যারেক্টারকে ফুটিয়ে তোলার জন্য।

মোমিন রহমান: এ প্রসঙ্গে ‘পাথর সময়’ ধারাবাহিকে আপনার অভিনীত ব্ল্যাক ডায়মন্ডের কথা মনে পড়ছে আমার। মানুষটি পুরোপুরি কালো। চোখ দুটি শুধু জ্বলজ্বল করছে।

হুমায়ূন ফরীদি: চোখ দুটি আমার চারদিকে ঘোরে।

মোমিন রহমান: হ্যাঁ। আর ব্ল্যাক ডায়মন্ডের যে হাসি, সেই হাসির কত রং কত অর্থ। ওর মনের ভাব ফুটে ওঠে সেই হাসিতে। মনে পড়ছে হুমায়ুন আহমেদ রচিত ‘একদিন হঠাৎ’ নাটকের কথা। অফট্র্যাক এক গৃহশিক্ষকের ভূমিকায় আপনি অভিনয় করেছিলেন। কী অদ্ভুত ম্যানারিজম!

হুমায়ূন ফরীদি: এই নাটকের একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে আমার। প্রযোজক ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি একটি ভঙ্গিতে হাঁটেন। ওই হাঁটা আমি নকল করেছিলাম। নাটক যেদিন প্রচারিত হলো, দেখি হাঁটাগুলো নেই। আমি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করায় মোস্তাফিজ ভাই বললেন, ‘বেয়াদব! আমার হাঁটা নকল করেছো! আমি ফেলে দিয়েছি।’

মোমিন রহমান: ‘সেই চোখ’-এ দেখা যায় আপনার প্রেমিকা মারা গেছে। আপনি তাকে ভুলতে পারেন নি। বিয়ে করেন নি। ওই নাটকে আপনার অভিনয়ে যে রোমান্টিসিজম দেখা গেছে তা অত্যন্ত দুর্দান্ত।

হুমায়ূন ফরীদি: আমি কিন্তু রোমান্টিক অভিনেতা নই।

মোমিন রহমান: কিন্তু সব ধরনের চরিত্রেই আপনাকে দেখা গেছে।

হুমায়ূন ফরীদি: তা ঠিক। সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করার চেষ্টা করেছি। একদিন মিলন এসে বলল, ‘ও রাধা ও কৃষ্ণ’ করব। আমি বললাম, টেলিভিশনে? মিলন বলল, হ্যাঁ। তুই অলির ক্যারেক্টারটা করবি? আমি বললাম, ওটা তো আফজালের ক্যারেক্টার। ওকেই মানাবে। আমার বাঁদরের মতো চেহারা। আমাকে দিয়ে হবে না। মিলন বলল, তোকে দিয়েই হবে। আমি মিলনের কথাকে অনার করার জন্য নাটকটি করলাম। কিন্তু নাটকটা যে এত সাড়া জাগাবে আমি বুঝতেই পারি নি। বহু বছর পরে তৌকীর আমাকে বলেছিল যে, ‘আমরা যখন ক্যাডেট কলেজে পড়তাম, তখন ওই নাটক দেখে আপনার বলা ডায়লগটি প্রায়ই আওড়াতাম: ‘উই মাস্ট লাভ ওয়ান এনাদার অর ডাই।’

মোমিন রহমান: আচ্ছা সবাই বলে যে, চলচ্চিত্রে খলনায়কের সিরিওকমিক টাইপের অভিনয়ে আপনি নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।

হুমায়ূন ফরীদি: ভুল বলে। এটি প্রথমে করেছেন মুস্তাফা সাহেব তারপর এটিএম ভাই, এরপর আমি।

মোমিন রহমান: আমি বলব ফিল্মে নয়। টিভির ধারাবাহিকে নাটক ‘আয়না’র ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’ পর্বের সেরাজ তালুকদারের চরিত্রেই আপনাকে এ ধরনের অভিনয় করতে দেখা গেছে।

হুমায়ূন ফরীদি: রাইট।

মোমিন রহমান: আপনার অভিনীত প্রথম ছবি কোনটি?

হুমায়ূন ফরীদি: তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’। শর্ট ফিল্ম।

মোমিন রহমান: তারপর?

হুমায়ূন ফরীদি: তারপর মোরশেদের একটি শর্ট ফিল্মে অভিনয় করি। তারপর আরও একটি শর্ট ফিল্ম করলাম ‘কাঁদো নদী কাঁদো।’

মোমিন রহমান: তারপর কি ‘দহন’?

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ।

মোমিন রহমান: এখন তো টিভির অনেকেই চলচ্চিত্রে অভিনয় করছে অথবা করতে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশে কি আপনি কোনো টিপস দেবেন? কেননা চলচ্চিত্র-অভিনয় তো একটি টেকনিক্যাল বিষয়।

হুমায়ূন ফরীদি: ফিল্মে একটু সতর্কভাবে অভিনয় করতে হবে। হাতটি কোথায় ছিল, লুকটি কোথায় ছিল? এটা মনে না রাখলে পরের শটে মিলবে না। লাইট, ক্যামেরার লেন্স বুঝতে হবে। এতে এনজি কম হয়।

মোমিন রহমান: এদেশের ফিল্ম তো আবার ভালোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘মনপুরা’ তো সারা দেশের মানুষের কাছে সমাদৃত হয়েছে। আপনার মন্তব্য কী?

হুমায়ূন ফরীদি: এ ধরনের ফিল্ম বেশি করে হওয়া উচিত। এ ধরনের ফিল্ম আরও মুক্তি পেলেই ফিল্মের অবস্থা আরও ভালো হবে।

মোমিন রহমান: চলচ্চিত্রে আপনার মেধাকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয় নি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

হুমায়ূন ফরীদি: আমি বলতে পারব না। তোমরাই ভালো বলতে পারবে। আমাকে যা করতে বলা হয়েছে আমি মনোযোগ দিয়ে সততার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। আর ফিল্ম তো অভিনয় করার জায়গা নয়। এটা তো ডিরেক্টরস মিডিয়া। হি টজ এ ক্যাপ্টেন অব শিপ। একজন অভিনেতা পুরো ফিল্মের সামান্য অংশ মাত্র। আর পরিচালককে সব ভাবতে হচ্ছে- এমনকি মিউজিক পর্যন্ত।

মোমিন রহমান: আপনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ফিল্মে আপনি অভিনয় করেন অর্থের জন্য। এখানে কোনো শিল্পচর্চা করার জন্য আপনি আসেন নি।

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ।

মোমিন রহমান: কিন্তু চলচ্চিত্র তো একটি শিল্প মাধ্যম।

হুমায়ূন ফরীদি: অসম্ভব শিল্প মাধ্যম।

মোমিন রহমান: তাহলে বিষয়টি কি আপনাকে তাড়িত করে নি?

হুমায়ূন ফরীদি: বিষয়টি আমাকে কষ্ট দেয় ঠিকই, কিন্তু কোনো আক্ষেপ নেই। চলচ্চিত্র আমার জীবিকা। আমি যখন কোনো নোংরা চলচ্চিত্রের কথা ভাবি, তখন খারাপ লাগে। কিন্তু যখন ভাবি, মুস্তাফা সাহেব যে প্রফেশনে ছিলেন অথবা এটিএম শামসুজ্জামান যে প্রফেশনে আছেন, আমিও সেই প্রফেশনে আছি- তখন ভালো লাগে।

মোমিন রহমান: শুনেছি আপনি প্রচুর ফিল্ম দেখেন। কোনো কোনো ছবি দেখে কাঁদেন।

হুমায়ূন ফরীদি: হ্যাঁ।

মোমিন রহমান: আপনার পছন্দের চলচ্চিত্রের কথা বলুন।

হুমায়ূন ফরীদি: ‘বিটার মুন’। এ ছবিটি দেখলে এখনো আমার চোখে পানি চলে আসে। এ ছাড়া ‘গ্লাডিয়াটার’। অসম্ভব সুন্দর ছবি।

মোমিন রহমান: আমাদের উপমহাদেশের কোনো ছবি?

হুমায়ূন ফরীদি: দিল চাহতা হ্যায়। নাইনটিন ফরটি টু এ লাভ স্টোরি।

মোমিন রহমান: আমাদের দেশের ছবি?

হুমায়ূন ফরীদি: ‘মনপুরা’-র কথা তো আগেই বলেছি। এ ছাড়া অনেক আগের একটি ছবি- সালাউদ্দিন সাহেবের ‘সূর্যস্নান’। খুবই সুন্দর।

মোমিন রহমান: এ ধরনের কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলে করবেন?

হুমায়ূন ফরীদি: অবশ্যই করব।

মোমিন রহমান: চলচ্চিত্র পরিচালনা করবেন কি?

হুমায়ূন ফরীদি: না, কখনোই না। চলচ্চিত্র পরিচালনা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ আমাকে দিয়ে হবে না।

মোমিন রহমান: আপনি প্রথম কোন নাটক পরিচালনা করেছেন?

হুমায়ূন ফরীদি: বলতে পারব না। মনে নেই। তবে ‘চন্দ্রগ্রস্ত’ বানিয়েছি। ‘তবুও প্রতীক্ষা’, ‘একটি সুন্দর সকাল’ বানিয়েছি। ‘ভাড়াবাড়ি বাড়াবাড়ি’ নামে একটি সিরিয়ালও বানিয়েছি। ‘ছায়াবীথি’ নামে আমার আরেকটি সিরিয়াল বানিয়েছি।

মোমিন রহমান: সামনে আর কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

হুমায়ূন ফরীদি: তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে দেশ টিভির সঙ্গে কথা হয়েছে। বায়ান্ন পর্বের একটি সিরিয়াল বানাব।

মোমিন রহমান: এবার আপনি যদি কিছু বলতে চান, বলতে পারেন।

হুমায়ূন ফরীদি: সৎ থেকো। সততার উপরে কিছু নেই।

Leave a Reply

Your identity will not be published.