সাম্প্রতিক কালের আলোচিত চলচ্চিত্র ‘শিমু’ মুক্তি পেল জাপানে। বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ও আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে পোশাকশিল্পের যে ভূমিকা আছে তার আলোকে দৃঢ়চেতা নারী পোশাকশ্রমিকদের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্পের চলচ্চিত্র ‘শিমু’ বা ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’।
টোকিওসহ হোকাইদো থেকে ওকিনওয়ার ১৫টি সিনেমা হলে প্রদর্শিত হচ্ছে ছবিটি। জাপানে ছবিটি পরিবেশনা করছে পেনডোরা। উদ্বোধনী শোতে ভার্চুয়লি যুক্ত হয়ে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ছবিটির পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন।
রুবাইয়াত হোসেনের পাশাপাশি ছবিটির মূল কুশলীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী। চিত্রগ্রহণে সাবিন ল্যাঞ্চেলিন, শব্দগ্রহণে এলিশা আলবার্ট, এবং শিল্প নির্দেশনায় জোনাকি ভট্টাচার্য্যের নাম উল্লেখযোগ্য। তেমনি জাপানেও ছবিটির মুক্তিতে নারীদের ভূমিকা ছিলো উল্লেখ করার মতো। জাপানী পরিবেশক পেনডোরার প্রধান একজন নারী, পাশাপাশি ছবিটির জাপানী সাবটাইটেলও করেছে ওসাকা ওম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থী।
টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের পর ছবিটি প্রদর্শিত হয় ৬৩তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে ছবিটি। ফ্রান্সের সেইন্ট জঁ দ্য-লুজ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। ইতালির টোরিনো বা তুরিন চলচ্চিত্র উৎসবে পেয়েছে ইন্টারফেদি পুরস্কার এবং ফ্রান্সের এমিয়েন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সেরা দর্শক পুরস্কার ও জুরি পুরস্কারসহ ৩টি পুরস্কার।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, কানাডা ও পর্তুগালের বিভিন্ন সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নামে মুক্তি পায় ছবিটি। এরপর ২০২০ আমেরিকার বিভিন্ন হলে প্রদর্শনের পর ছবিটির বাণিজ্যিকভাবে দেখানো হয় ম্যাক্সিকো, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক ও জার্মানীর সিনেমা হলে। আর গত ১১ মার্চ ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তি পায়।
বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের লা ফিল্মস দ্য এপ্রেস-মিডির ব্যানারে নির্মিত শিমু ছবিটির প্রযোজক ফ্রঁসোয়া দক্তেমা ও আশিক মোস্তফা এবং সহ-প্রযোজক পিটার হিলডাল, পেদ্রো বোর্হেস, আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও রুবাইয়াত হোসেন। আর ছবিটির পরিবেশনা ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের পিরামিড ফিল্মস।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, নভেরা রহমান, দীপান্বিতা মার্টিন, পারভীন পারু, মায়াবি মায়া, মোস্তফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি ও সামিনা লুৎফা প্রমুখ। দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের শাহানা গোস্বামী।
প্রথম ছবি ‘মেহেরজান’ (২০১১) ও দ্বিতীয় ছবি ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ (২০১৫) তৈরি করে আলোচিত হন এই নির্মাতা। রুবাইয়াত হোসেনের তৃতীয় ছবি ‘শিমু’ও নজর কাড়ছে দেশ-বিদেশে।
Leave a Reply
Your identity will not be published.