শান্তা মারিয়া
রক্তের নকশিকাঁথা বাংলার মাটি
বাংলার শ্যামল ভূমি রক্তের নকশায় উজ্জ্বল।
আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আসিফ, ফারহান
বর্ণিল সুতায় গাঁথা থাক ইতিহাসের নকশিকাঁথায়।
বাংলার মাটি বারে বারে রক্তে ভিজে গেছে
প্রাকৃতজনের প্রাচীন ভূমিতে এসেছে ঘোর অমানিশা।
পুন্ড্র, বঙ্গ, সুহ্ম, রাঢ়, গৌড়, সমতট, হরিকেল, কামরূপ
আঘাতে আঘাতে ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে
মাৎস্যন্যায় শেষে জেগেছে আবার।
পুড়ে গেছে নালন্দার পুথি, বিহার, দেউল।
তরুণ স্নাতক রক্তক্লান্ত দেহে ঘুমিয়েছে বদ্বীপ ভূমিতে।
কোনো আগ্রাসী কৃপাণ জয়ী হয় নি মৃন্ময়ী জমিনে।
ঈশা খাঁ, চাঁদ রায়, গাজী কালু চম্পাবতী,
বারো ভুঁইয়ার সাহসী হাতিয়ার
ঝলসে উঠেছে বাংলার রৌদ্র বরষায়।
ব্যারাকপুর থেকে আন্টাঘর ময়দান
সিপাহির চোখে জ্বলেছে আগুন
রক্ত মিশে গেছে সুবে বাংলার অহল্যা ভূমিতে।
তিতুমীর, সিধু, কানু, সাঁওতাল, কৈবর্ত, নীলচাষি
নুরুলদীন, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, বিনয়, বাদল,
সালাম, রফিক, বরকত, হামিদুর, জাহাঙ্গীর, রুহুল আমিন,
আসাদ, মতিউর, বীরশ্রেষ্ঠ, বীরোত্তম, অগ্নিযোদ্ধা
এক হয়ে মিশে আছে প্রিয় পতাকায়।
সোনাভান, ইলামিত্র, মাতঙ্গিনী হাজরার দেশে
বীরকন্যা কোনোদিন রণক্ষেত্রে হয় নি বিবশ।
চারু মজুমদার, কানু সান্যাল, আবদুল হক, সিরাজ সিকদার
শুনিয়েছে সাম্যের ডাক, বিপ্লবের অমোঘ সংগীত।
বায়ান্ন, একাত্তর, নব্বই, রক্তাক্ত জুলাই
নকশিকাঁথায় একসূত্রে গাঁথা।
ফয়সাল, শান্ত, রিফাত, তাহমিদ আরও শত নাম
বঙ্গজননীর শহীদ সন্তান
ফুল হয়ে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া পলাশের দেশে।
বাংলার মাটি অগ্নিগর্ভা
যুগে যুগে জন্ম নেয় অয়োময় দীপ্ত যুযুধান।
স্বৈরশাসকের হৃদকম্প, দুঃশাসনের পরাজয় নিশ্চিত করে।
ছাত্র-জনতা বীরবেশে তোমাদের প্রণতি জানাই।
তোমরা অনিঃশেষ
মানচিত্র ধরে রাখা তোমরাই
মৃত্যুঞ্জয়ী বাংলাদেশ।
Leave a Reply
Your identity will not be published.