আবু জাফর শামসুদ্দীন: মননশীল সাহিত্যস্রষ্টা

আবু জাফর শামসুদ্দীন: মননশীল সাহিত্যস্রষ্টা

 

অন্যদিন-এর ‘শেকড়ের সন্ধানে’ বিভাগে তুলে ধরা হচ্ছে সাহিত্যস্রষ্টাদের ব্যক্তিগত ও সাহিত্যিক জীবনের তথ্যসহ তাঁদের জন্মভিটার পরিচিতি। আজকের রচনা আবু জাফর শামসুদ্দীনকে নিয়ে।

কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক আবু জাফর শামসুদ্দীন। তাঁর গল্প-উপন্যাসে রূঢ় বাস্তব, সামাজিক বিচ্যুতি, জীবনের মোহভঙ্গ মূর্ত হয়ে উঠেছে। ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ উপন্যাসে গত শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্তের সর্বাধিক বিকাশের কাহিনি পরিস্ফুটিত। তাঁর প্রবন্ধে মননশীলতার ছাপ বিদ্যমান। এখানে তুলে ধরা হলো মননশীল সাহিত্যস্রষ্টা আবু জাফর শামসুদ্দীনের জীবন ও জন্মভূমিকে।

এবড়ো-থেবড়ো পথে ছুটে চলেছে টমটম। না, এটি ঘোড়ার গাড়ি নয়-যন্ত্রযান। ভ্যানগাড়িরই একটি সংস্করণ। ইট-বিছানো পথ, কোনো কোনো জায়গায় পিচ ক্ষয়ে গেছে, অজগর সাপের মতো এঁকেবেঁকে গেছে গ্রামের গভীরে। দক্ষিণবাগের দিকে। সেখানেই আমরা যাচ্ছি। আমরা মানে আমি এবং অন্যদিন-এর আলোকচিত্রী ফজলে এলাহী ইমন। টমটমে অবশ্য আরও আট-দশজন যাত্রী রয়েছে। দুজন আবার বসেছে সামনে চালকের দু’ পাশে।

আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা থেকে। ফার্মগেট থেকে বাসে চেপে উত্তরা পেরিয়ে পৌঁছেছিলাম আবদুল্লাহপুরে। সেখান থেকে ভৈরবগামী ‘চলনবিল’ নামে বাসে চড়ে পৌঁছি ঘোড়াশাল ব্রিজের গোড়ায়। তারপর নিচে নেমে টেম্পোতে চড়ে হাজির হয়েছিলাম জামালপুর বাজারে। অতঃপর টমটমে চড়ে যাচ্ছি দক্ষিণবাগ গ্রামের উদ্দেশে।

একসময় টমটমটি পৌঁছে একটি মসজিদের কাছে। এখান থেকেই শুরু হয়েছে দক্ষিণবাগ গ্রামের সীমানা। তাই দেখা গেল, কিছুদূর যাওয়ার পর এক-দুজন করে অনেকেই নেমে গেল। শুধু দু’জন মহিলা এবং আমি ও ইমন রয়ে গেলাম গাড়িতে। ছয়-সাত মিনিট পর টমটমটি থেমে গেল। আমরা চালকের হাতে ভাড়া দিয়ে নেমে গেলাম। আমাদের সঙ্গী, এক মধ্যবয়সিনী, তার পিছু পিছু আমরা হাঁটতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর আমাদের চোখে পড়ল একটি বিদ্যালয়। দক্ষিণবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পার হতেই আমাদের পথপ্রদর্শক মহিলাটি থেমে গেলেন। সামনের দিকে অঞ্জুলি নির্দেশ করে জানালেন, আমরা গন্তব্যস্থানে পৌঁছে গেছি। আমরা তার দৃষ্টি অনুসরণ করে চেয়ে দেখি একটি সাইনবোর্ড। লেখা রয়েছে—আবু জাফর শামসুদ্দীন ও আয়েশা আখতার খাতুন মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। স্থাপিত ২০০৬। ট্রাস্টের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি: পাঠাগার, শিক্ষাবৃত্তি, স্বাস্থ্যসেবা, বয়স্ক ভাতা, গণস্বাক্ষরতা, বৃত্তিমূলক/কারিগরি অপ্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ।

পথপ্রদর্শক মহিলাটি চলে গেলে আর সাইনবোর্ডটিকে বামে রেখে একটি গলিপথ দিয়ে কিছুক্ষণ চলার পর আমরা একটি মসজিদ ও একটি বাড়ির মুখোমুখি হলাম। দেখলাম সম্মুখের ঘরের সামনে টাঙানো রয়েছে একটি বোর্ড। সেখানে লেখা রয়েছে কথা ও কবিতা পাঠাগার যা স্থাপিত হয়েছে ২০০৮ সালে। আর এটি পরিচালনা করছে পূর্বোক্ত ট্রাস্ট। হ্যাঁ, আমরা সত্যি সত্যি পৌঁছে গেছি গন্তব্য স্থানে। এটিই মননশীল সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দীনের পৈতৃক বাসস্থান। এখানেই তিনি ২৮ ফাল্গুন ১৩১৭ তথা ১২ মার্চ ১৯১১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

আবু জাফর শামসুদ্দীন ছিলেন তিন ভাই। তিনি ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ। কোনো বোন ছিল না। বাবা মোহাম্মদ আক্কাছ আলী ভুইয়া (১৮৬১-১৯৩৬)। মা আফীফা খাতুন। দাদা নাদিরুজ্জামান ভুইয়া। বাবা এবং দাদা দুজনই ছিলেন মসজিদের ইমাম। পূর্বপুরুষ ছিলেন ব্রাহ্মণ। বাদশাহ শাহজাহানের রাজত্বের শেষ পর্যায়ে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ভালো বিষয়-সম্পত্তি ছিল। কিন্তু দাদার আমলেই তার প্রায় সবটাই বিক্রি হয়ে যায়। তাই আবু জাফর শামসুদ্দীনের জন্মকালে পারিবারিক বিষয় বলতে বিশেষ কিছু ছিল না, কোনোরকমে সংসার চলত।

আবু জাফর শামসুদ্দীনের পারিবারিক পরিবেশে শিক্ষার আবহাওয়া ছিল। দাদার সংগ্রহে পারিবারিক পাঠাগারে ছিল তিন শ’ বই, যা ওই সময়ে (উনিশ শতকের মধ্যভাগে) ছিল সত্যি বিস্ময়কর বিষয়। যা হোক, শৈশবে আবু জাফর শামসুদ্দীনের শিক্ষা শুরু হয়েছিল বাড়িতেই, বাবার অভিভাবকত্বে। মা ও ফুফুও কখনো-সখনো পড়াতেন। গার্হস্থ্য শিক্ষায় বেশ কিছুকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পর পর পড়াশোনা করেন গ্রামের দু’দুটি পাঠশালায়। পরে জামালপুর গ্রামের মিডল ইংলিশ স্কুলে, তারাগঞ্জ গ্রামের হাইস্কুলে। জুনিয়র মাদ্রাসায় শেষ পরীক্ষা দেন তিনি একডালা জুনিয়র মাদ্রাসা থেকে এবং কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন। ঢাকার ইসলামী ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তরণ ও বৃত্তি লাভ করেন। তারপর ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু বেশিদিন ক্লাস করেন নি। পালিয়ে যান কলকাতায়। তখন ১৯৩০ সালের মার্চ/এপ্রিল মাস।

আবু জাফর শামসুদ্দীন বিয়ে করেন এক রক্ষণশীল আলেম পরিবারের কন্য আয়েশা আক্তার খাতুনকে। ১৯৩৩-এর ৬ অক্টোবর। স্বামীর প্রথম কর্তব্য সম্পন্ন করেছিলেন তিনি স্ত্রীকে বোরকামুক্ত করে। তিনি ছিলেন পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ের জনক।

‘বাসায় কেউ আছেন?’ কাঠের গেটে কয়েকবার করাঘাত করতেই বেরিয়ে আসে এক তরুণ। লুঙ্গি পরা, খালি গা। বোঝাই যাচ্ছে ঘরে কাজ করছিল বা বিশ্রাম নিচ্ছিল, সেই অবস্থাতেই বেরিয়ে এসেছে।

আমরা নিজেদের পরিচয় দেই, আগমনের কারণ খুলে বলি। ছেলেটি জানায়, সে এই বাড়ির কেয়ারটেকারের ছেলে। নাম ওসমান। আমার তখন মনে পড়ে, এখানে আসার আগে যোগাযোগ করেছিলাম আবু জাফর শামসুদ্দীনের এক ছেলে, পারভেজ, তার সঙ্গে। তিনি এই বাড়িতে আসার পথঘাটের পরিচয় জানিয়ে বলেছিলেন যে, ফরহাদ নামে একজন কেয়ারটেকার রয়েছেন। আর কী আশ্চর্য, যার কথা ভাবছিলাম তিনিই আবির্ভূত হলেন। কেয়ারটেকার ফরহাদ।

সবাই মিলে প্রবেশ করি বাড়ির ভেতরে। আবিষ্কার করি বিরাট একটি উঠোন। চারপাশে চারটি টিনের ঘর। ফরহাদ জানান, পশ্চিম দিকের ঘরটিতেই থাকতেন আবু জাফর শামসুদ্দীন। আমাদের অনুরোধে ঘরটি খোলার ব্যবস্থা করেন তিনি। তার নির্দেশে ওসমান চাবি নিয়ে এসে ঘরটি খুলে দেয়।

মাঝারি আকারের একটি ঘর। প্রাচীন আমলের একটি পালঙ্ক, দুটি আলমিরা, চেয়ার-টেবিল—সবই রয়েছে। ঘরের পেছনের দরজা উন্মুক্ত করেন ফরহাদ। আমরা সেই ঘর পেরিয়ে অবারিত প্রকৃতির মাঝে প্রবেশ করি। আবিষ্কার করি বিশাল এক বিল। জানা যায়, এই বিলে এই বাড়ির মানুষদের জমি রয়েছে।

‘আপনারা কোথা থেকে এসেছেন?’

ঘাড় ফিরিয়ে দেখি, মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলোক। চোখে-মুখে অনুসন্ধিৎসা। আমি নিঃশব্দে কার্ড বের করে তাকে দেই। ভদ্রলোকের মুখে এবার হাসি ফুটে ওঠে। বলে, ‘আমার নাম মোজাম্মেল হক সরকার। পাশের বাড়ির লোক।’ তিনি বিলের বাম দিকের একটি বাড়ির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন। তারপর বিলের দিকে চেয়ে বলেন, ‘আমাদের সময়ে, স্বাধীনতার পরের কথা বলছি, তখন পাঠ্যবইতে একটি গল্প ছিল, সোনার ধান। এই গল্পটি শামসুদ্দীন চাচা লিখেছিলেন এই বিলকে মাথায় রেখেই। আর তাহমীনা ও তার স্বামীর মতো মানুষও তখন এই গ্রামে ছিল।’

মোজাম্মেল সাহেবের কথায় আমার স্মরণে আসে যে, আবু জাফর শামসুদ্দীনের লেখা প্রথম ছোটগল্প হলো, ‘দুটি বোন’। গল্পটি মাসিক ‘মোহাম্মদী’-তে ছাপা হয়েছিল ১৯৩৩ সালে। প্রায় পঞ্চাশ বছরে তিনি ৮৬টি ছোটগল্প লিখেছিলেন। এইসব গল্প ঠাঁই পেয়েছে ছয়টি গল্পগ্রন্থে : জীবন (১৯৪৮), শেষ রাত্রির তারা (১৯৬৬), এক জোড়াপ্যান্ট ও অন্যান্য (১৯৬৭), রাজেন ঠাকুরের তীর্থযাত্রা (১৯৭৮), ল্যাংড়ী (১৯৮৪) এবং আবু জাফর শামসুদ্দীনের শ্রেষ্ঠগল্প। তাঁর বেশ কিছু গল্পে রঙ্গব্যঙ্গের ছোঁয়া আছে, সামাজিক বিচ্যুতি মূর্ত হয়ে উঠেছে। এছাড়া রূঢ় বাস্তব ও জীবনের মোহভঙ্গের চিত্র খুঁজে পাওয়া যায় কিছু গল্পে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় লেখা আবু জাফর শামসুদ্দীনের অসাধারণ একটি গল্প ‘কলিমদ্দি দফাদার’।

তবে ছোটগল্পের চেয়ে উপন্যাসেই তাঁর সার্থকতা বেশি। এর মধ্যে সবিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো এপিকধর্মী ত্রয়ী উপন্যাসÑভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান (১৯৬৩), পদ্মা-মেঘনা-যমুনা (১৯৭৪) এবং সংকর সংকীর্তন (১৯৮০)। অবশ্য শেষে প্রকাশিত হলেও কাহিনির ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে ‘ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান’-এর পরেই ‘সংকর সংকীর্তন’-এর স্থান। ‘ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান’-এর সব চরিত্রকে লেখক কাল্পনিক বলেছেন। অবশ্য ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’র সব চরিত্রই বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া। বলা যায় এই শতাব্দীর প্রথমার্থে বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্তের সর্ববিধ বিকাশের কাহিনিই এই উপন্যাসের উপজীব্য। এছাড়া তাঁর লেখা অন্য উপন্যাসগুলি হলো: পরিত্যক্ত স্বামী (১৯৪৭), মুক্তি (১৯৪৮), প্রপঞ্চ (১৯৮০), দেয়াল (১৯৮৬)।

আবু জাফর শামসুদ্দীনের প্রবন্ধের উচ্চমান ও বিষয়চরিত্রও বিবেচনায় আনতে আমরা বাধ্য। তাঁর প্রবন্ধের বই আটটি। এছাড়া তিনি নাটক, ভ্রমণকাহিনি, জীবনী এবং স্মৃতিকথাও লিখেছেন। অনুবাদ করেছেন জেসি স্টুয়ার্ট-এর উপন্যাস, পার্ল বাকের গল্প, আদ্রে মোরোরা’র প্রবন্ধ। নওয়াব আবদুল লতিফের আত্মজীবনীসহ রুথ মন্টগোমারীর লেখা মিসেস এল বি জে নামে একটি জীবনীগ্রন্থ। আবু জাফর শামসুদ্দীনও আত্মজীবনী লিখেছেন। ‘আত্মস্মৃতি’ নামে খণ্ডকারে এটি প্রকাশিত হয়েছে।

‘অল্পদর্শী’ ছন্দনামে ‘বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা’ শিরোনামে দৈনিক ‘সংবাদ’-এ শেষ জীবনে বহু বছর কলাম লিখেছেন আবু জাফর শামসুদ্দীন।

আবু জাফর শামসুদ্দীন ‘নয়া সড়ক’ নামে একটি বার্ষিক সাহিত্যপত্রও বের করেছিলেন, ১৯৪৮ সালে। সম্পাদনায় তাঁর সহযোগী ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী। স্মৃতিচারণমূলক রচনায় আবু জাফর শামসুদ্দীন জানাচ্ছেন যে ওই পত্রিকাটিই ছিল ‘পাকিস্তানের পূর্ববঙ্গ নামক কলোনিতে প্রথম শ্রেণির সাময়িক পত্রিকা।’

‘চলুন, ওই দিকে যাই’ মোজাম্মেল হক সরকারের কথায় আমার সংবিত ফিরে। আমরা পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই পাঠাগারের দিকে। এই বাড়ির প্রবেশপথের সম্মুখেই এটির অবস্থান।

পাঠাগারে প্রবেশ করে দেখি, তিন আলমিরা বোঝাই নানা ধরনের বই। গল্প-কবিতা, উপন্যাস, জীবনী, প্রবন্ধ, ইত্যাদি। এর মধ্যে আবু জাফর শামসুদ্দীনের উপন্যাস ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’ এবং তাঁর রচনাবলীর একটি খণ্ডও রয়েছে। বেশ কয়েকটি ঈদসংখ্যা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঈদসংখ্যা অন্যদিনও।

বই দেখা শেষে সোফায় এসে কথা বলি মোজাম্মেল সাহেব ও ফরহাদের সঙ্গে। তারা জানান, আবু জাফর শামসুদ্দীন ও তাঁর স্ত্রীর নামে যে ট্রাস্ট রয়েছে, সেটির অধীনে এই পাঠাগার ও জনকল্যাণমূলক নানা কাজ পরিচালিত হয়। আবু জাফর শামসুদ্দীনের চতুর্থ মেয়ে সুলতানা ট্রাস্টের পরিচালক। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন। সবকিছু দেখাশোনা করেন।

আমরা চা-নাস্তা খেয়ে আবু জাফর শামসুদ্দীন ও তাঁর স্ত্রীর কবর প্রত্যক্ষ করি। দেখি শ্বেতপাথরে উৎকীর্ণ রয়েছে এই পঙ্ক্তিমালা: ‘সবে ঘরে শূন্য হলো আরামের শয্যাতল/ যাত্রা করো যাত্রা করো যাত্রী দল/ উঠেছে আদেশ।’

আবার পথে নামি। ভাবি আবু জাফর শামসুদ্দীনের কথা। তিনি নানা কাজ করেছেন। দৈনিক ছোলতান (কলকাতা থেকে প্রকাশিত), দৈনিক আজাদ ও দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দৈনিক সংবাদ-এ কলাম লিখতেন। অবিভক্ত বাংলার সেচ-বিভাগে কেরানি, উড়িষ্যার রাজধানী কটকে নির্মীয়মাণ বিমানঘাটি তদারকির অফিসে হেড ক্লাকের কাজ করেছেন। ‘কিতাবিস্তান’ নামে ঢাকায় জনসন রোডে একটি বইয়ের দোকানও ছিল। বইও প্রকাশ করেছেন। তবে দীর্ঘদিন তিনি কাজ করেছেন বাংলা একাডেমিতে, অনুবাদক বিভাগে। সেখান থেকেই তিনি ১৯৭২ সালে অবসর নেন।

সামাজিক প্রয়োজনের তাগিদেও সাড়া দিয়েছেন তিনি সবসময়। আহ্বায়ক ছিলেন কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলনের (১৯৫৭)। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন সভাপতি, সহ-সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে।

 

 

Leave a Reply

Your identity will not be published.