অঞ্জনার পর প্রবীর মিত্রের প্রয়াণ: চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোক

অঞ্জনার পর প্রবীর মিত্রের প্রয়াণ: চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোক

একদিনের ব্যবধানে চলচ্চিত্র অঙ্গনে দুজনের মৃত্যু!  অভিনেত্রী অঞ্জনার মৃত্যুর পরদিন প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ৪ ও ৫ জানুয়ারি দুই কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকাহত চলচ্চিত্র অঙ্গন। এফডিসি ও সংস্কৃতিপাড়ায় বিরাজ করছে শোকাবহ পরিস্থিতি।

৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্র বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে ১৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে অক্সিজেন–স্বল্পতাসহ নানা অসুস্থতায় গত ২২ ডিসেম্বর তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ৫ জানুয়ারি রাত ১০টার ১০ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।

প্রবীর মিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে—মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। এর মধ্যে সামিউল মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র প্রয়াত হন ২০০০ সালে।

১৯৪১ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুরের নতুনবাজার গুয়াখোলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তাঁর পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন।

‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়–পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

অন্যদিকে অঞ্জনা নাচ ও অভিনয় গুণে দেশ সেরা অভিনেত্রীর তকমা পেয়েছিলেন। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে চিত্রজগতে পথচলা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেন। এরপর ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে তিনি একজন নামী নৃত্যশিল্পী ছিলেন। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। রহস্যভিত্তিক এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সোহেল রানা।

Leave a Reply

Your identity will not be published.