ধারাবাহিক রচনা নায়করাজ রাজ্জাক (পর্ব-৫)

ধারাবাহিক রচনা  নায়করাজ রাজ্জাক  (পর্ব-৫)

[এই ধারাবাহিক রচনাটিতে প্রয়াত চিত্রনায়ক রাজ্জাকের জীবন কেরিয়ারের নানা দিকের ওপর আলো ফেলা হবে এখানে নায়করাজ রাজ্জাক সম্পর্কে পাঠকদের নানা কৌতূহল মিটবে, নানা প্রশ্নের উত্তর মিলবে

এখানে মূর্ত হয়ে উঠবে রাজ্জাকের শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যের দিনগুলি, জীবন সংগ্রাম, নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ এবং পর্যায়ক্রমে নায়করাজ হয়ে ওঠা... থাকবে সেরা চলচ্চিত্র, সেরা গানের কথা তাঁর নায়িকা পরিচালকদের প্রসঙ্গও উঠে আসবে চলচ্চিত্রে যেসব কণ্ঠশিল্পীর গানের সঙ্গে তাঁর ঠোঁটের মেলবন্ধন ঘটেছিল, থাকবে তাঁদের কথাও পরিচালক রাজ্জাক সম্পর্কেও পাঠকেরা জানতে পারবেন; জানতে পারবেন টালিউডে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের কথা পরিশেষে অন্য এক রাজ্জাকের অবয়বও ফুটে উঠবে এখানে

এবার তুলে ধরা হলো রাজ্জাকের অতীত জীবনের কয়েকটি অধ্যায়]

 

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে অবরুদ্ধ ঢাকা শহরেই ছিলেন রাজ্জাক শুরুতে তিনি জহির রায়হানের বাসায় লুকিয়ে থাকেন সতেরো-আঠারো দিন জহির তখন ভারতে যাচ্ছিলেন, রাজ্জাক তার সঙ্গে যেতে চান কিন্তু পথে কোনো সমস্যা হবে ভেবে জহির রাজ্জাককে সঙ্গে নেন নি তারপর একসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এদেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে ক্যামেরায় ফিল্ম ছাড়াই অভিনয় করেছেন রাজ্জাক আবার পাকিস্তানি সৈন্যরা একাত্তরে বারবার রাজ্জাকের বাসায় গিয়েছে, উঠিয়ে নিয়ে এসেছে বলেছে টিভিতে নাটক করতে তখন রাজ্জাক রিহার্সেল করেছেন ঠিকই কিন্তু অবশেষে বলেছেন তিনি নাটক করতে পারবেন না কেননা তিনি সংলাপ মুখস্থ করতে পারেন না এভাবে তিনি টিভিতে একটি নাটকও করেন নি সেই সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের না বলাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বেতারেও কাজ করেন নি রাজ্জাক এতে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তার সমর্থনই প্রকাশ পেয়েছে সত্যি কথা বলতে কী, রণক্ষেত্রে যুদ্ধ না করেও রাজ্জাক একাত্তরে এক ধরনের যুদ্ধই করেছেন এরকম অনেকেই করেছেন তাদেরকেও আমরা এক অর্থে বোধহয় মুক্তিযোদ্ধা বলতে পারি রাজ্জাক তেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধা আসলে একাত্তরে রাজাকার-আল বদর ছাড়া এদেশের সবাই যোদ্ধা ছিলেন

 

রংবাজ থেকেঅনন্ত প্রেম

স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে রাজ্জাক নতুন ইমেজে আত্মপ্রকাশ করলেনরংবাজ (১৯৭৩) ছবির মাধ্যমে জহিরুল হক পরিচালিত এই ছবি এদেশে অ্যাকশন চলচ্চিত্রের ধারার সূচনা করল আগে রাজ্জাক কোমল রোমান্টিক স্বভাবের নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, আর ছবির চরিত্রে অ্যান্টি রোমান্টিসিজম এলিমেন্টই বেশি পরে আলমগীর কুমকুমেরগুণ্ডাসহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে এধরনের চরিত্রে অভিনয় করেন তবে হ্যাঁ, তিনি চরিত্রে বৈচিত্র্য খুঁজেছেন সব সময়ে, একই বৃত্তে বন্দি থাকতে চান নি তাই তোআলোর মিছিল- দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা, ‘বেঈমান- পিতৃঘাতক যন্ত্রণাকাতর পুত্র, ‘বাঁদী থেকে বেগম- জমিদারসহ নানাধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এসময়ই রাজ্জাক তথাকথিত নায়ক চরিত্রের বাইরে দর্শকদের সামনে দেখা দেনঅতিথি ছবিতে এখানে তার চরিত্রটি ছিল একটি খুনের ভুল আসামি ছবির নায়ক-নায়িকা ছিল আলমগীর শাবানা কিন্তু পুরো ছবিতে দর্শক-মনোরঞ্জনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন রাজ্জাকই এমনই কয়েকটি চলচ্চিত্র হচ্ছেসমাধি (১৯৭৬), অগ্নিশিখা (১৯৭৮), অনুরাগ (১৯৭৯)...‘অনন্ত প্রেম হচ্ছে রাজ্জাক পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র তিনি ছবির নায়কও এদেশের বিয়োগান্তক চলচ্চিত্র হচ্ছেসুতরাং (১৯৬৪) এখানে নায়ক-নায়িকার মিলন হয় না নায়িকা আত্মহত্যা করে কিন্তু নায়ক-নায়িকা দুজই মারা যায়এই বিষয়টি প্রথম দেখা যায়অনন্ত প্রেম- ছবিটি আরেকটি কারণেও উল্লেখযোগ্য এখানে শৈল্পিকভাবে চুম্বন-দৃশ্য দেখা গেছে প্রথম এজন্য সেন্সর বোর্ডও কোনো আপত্তি করে নি যদিও পরে মহিলা দর্শকদের কথা ভেবে রাজ্জাক ছবি থেকে দৃশ্যটি বাদ দেন  

 

অশিক্ষিত থেকেবাবা কেন চাকর

১৯৭৮ সালেঅশিক্ষিত ছবিতে এমন এক রাজ্জাককে দেখা গেল, যিনি গ্ল্যামার বিসর্জন দিয়েছেন বড়পর্দায় তিনি যেন এদেশের সাধারণ মানুষেরই একজন এখানে তিনি গ্রামের এক সহজ-সরল আদর্শবান চৌকিদারের ভূমিকায় অভিনয় করেন এক বছর পরেছুটির ঘণ্টা (১৯৮০)- রাজ্জাককে দেখা গেল স্কুলের দপ্তরির ভূমিকায়

১৯৯৭ সালে মুক্তি পেলবাবা কেন চাকর বয়স্ক বাবার ভূমিকায় এখানে রাজ্জাকের অভিনয় সবার মন জয় করল বুড়ো হলে বাবা-মা যে ছেলেদের কাছে বোঝা হয়ে ওঠে, সেটি এই ছবিতে মূর্ত হয়ে উঠেছে পরে ছবির রিমেকের মাধ্যমে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রশিল্পে প্রবেশ করেন এবং জনপ্রিয়তা পান উল্লেখ্য, ‘অশিক্ষিত এবংছুটির ঘণ্টা ফর্মুলাভিত্তিক চলচ্চিত্র ছিল না

ফর্মুলাভিত্তিক চলচ্চিত্রেও রাজ্জাক এসময় বিচিত্র সব চরিত্রে দর্শকদের সামনে হাজির হন যেমন, সখি তুমি কার, মৌচোর, মহানগর, রাজা সাহেব, বড় ভালো লোক ছিল, কালো গোলাপ, অভিযান ইত্যাদি এসময় সাহিত্যনির্ভর কয়েকটি চলচ্চিত্রে রাজ্জাককে অভিনয় করতে দেখা গেল যেমনচন্দ্রনাথ, ৎভাই, শুভদা, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, বিরহ ব্যথা, জনম দুখী প্রভৃতি এইসব চলচ্চিত্রে তিনি সাহিত্যের চরিত্রটির যথার্থ রূপায়ণ করতে চেষ্টা করেছেন কোনো ছবিতে তিনি সফলও হয়েছেন এজন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন

বাবা কেন চাকর-এর পর রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছেকখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি (২০০৩), আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা (২০০৮), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩)

তিন অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক নায়ক হিসেবে তার শেষ চলচ্চিত্র হচ্ছেমালামতি (১৯৯০) শেষ চলচ্চিত্রকার্টুজ (২০১৫)

 

জনপ্রিয়তা

রাজ্জাক কেমন জনপ্রিয় ছিলেন, বিষয়ে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যাক ১৯৭০ সালে নজরুল ইসলাম পরিচালিতদর্পচূর্ণ ছবির কাজ চলছে এফডিসির তিন নম্বর ফ্লোরে রাজ্জাক মেকআপ নিচ্ছেন একসময় নুরু নামে এক স্পট বয় কাছে এসে দাঁড়ায় রাজ্জাক জিজ্ঞেস করেন, ‘কীরে কিছু বলবি ?’ নুরু বলল, ‘স্যার চারজন মেয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য অনেকক্ষণ থেকে অপেক্ষা করছে অনেকবার বলেছি দেখা হবে না কিন্তু ওরা নাছোড়বান্দা রাজ্জাক বললেন, ‘নিয়ে আয় আবার মেকআপ নিতে লাগলেন রাজ্জাক কিছুক্ষণ পর চারজন মেয়ে তিন নম্বর ফ্লোরে ঢুকল ওরা ঢুকেই একসঙ্গে রাজ্জাককে তুলে চটপট চুমু খেল রাজ্জাক তো হতবাক এক মেয়ে বলল, ‘ইচ্ছে ছিল চুমু খাবার, খেয়ে নিলাম তারপর চারজন দ্রুত বেরিয়ে গেল

এরকম অনেক ঘটনা রয়েছে এমনকি কেউ কেউ রাজ্জাকের বাড়িতেও হানা দিত সম্পর্কে রাজ্জাকের স্ত্রী লক্ষ্মীর ভাষ্য হচ্ছে : ‘যখন ফার্মগেটে হলিক্রসের সামনে আমরা থাকতাম, তখন অনেক মেয়ে বাড়িতে আসত ওর সঙ্গে দেখা করতে, অটোগ্রাফ নিতে দেখতাম, ভক্তরা ওর কাপড় ছুঁয়ে দেখছে, জুতো ছুঁয়ে দেখছে ওকে জড়িয়ে ধরছে দেখতাম, কিন্তু কিছুই বলতাম না

এভাবে জনপ্রিয়তার বিড়ম্বনা রাজ্জাককে কম সহ্য করতে হয় নি কখনো কখনো এমনো হয়েছে মেয়ে ভক্তরা এমন কাণ্ড করেছে যে রাজ্জাকের মনে হয়েছেতারা ছিঁড়ে খাবে তাকে প্রসঙ্গে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যাকদুই ভাই চলচ্চিত্রের শুটিং হচ্ছিল কুমিল্লার দিঘির পাড়ে রাজ্জাক সাইকেল চালাচ্ছেন সেখানে অর্ধেক পথ অতিক্রম করেছেন, হঠা সেখানে দশ-বারোজন তরুণী দৌড়ে এসে সাইকেলে ধাক্কা দিয়ে রাজ্জাককে মাটিতে ফেলে দিল তারপর তাকে প্রায় চ্যাংদোলা করে পাশেই একটি ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল ইউনিটের একজন দৌড়ে গিয়ে দরজায় নক করল তখন একজন তরুণী দরজা খুলে বেরিয়ে এসে বলল, ‘ঝামেলা করবেন না আমরা উনাকে বেশিক্ষণ আটকিয়ে রাখব না এরপর আবার ঘরের ভেতর ঢুকে তরুণী দরজা বন্ধ করে দিল ঘরের ভেতর তখন রাজ্জাককে ঘিরে ধরে তরুণীরা যেন গবেষণা করছে একজন তার চুলে হাত দিচ্ছে আরেকজন গাল টিপে দিচ্ছে অন্য আরেকজন পাশে বসে আদর করতে উদ্যত এভাবে চলল প্রায় বিশ মিনিট তারপর তরুণীরা রাজ্জাককে মুক্তি দিল যাওয়ার সময় একজন বলল, ‘যান এবারের মতো ছেড়ে দিলাম

এমন অসংখ্য ঘটনা রয়েছে রাজ্জাকের জীবনে তাকে নিয়ে দর্শকদের মধ্যে যে কী ক্রেজ ছিল, তা এসব ঘটনার মধ্য দিয়েই বোঝা যায়

 

নায়করাজ উপাধি প্রাপ্তি

গত শতকের আশির দশকের কথা তখন অবজার্ভার হাউজ থেকে বের হতো সিনে-পত্রিকাচিত্রালী সহকারী সম্পাদক (পরে সম্পাদক) ছিলেন আহমদ জামান চৌধুরী ওরফে আজাচৌ তিনি চলচ্চিত্রের কাহিনি-সংলাপ গীত রচয়িতাও এই আহমদ জামান চৌধুরী রাজ্জাককেনায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন রাজ্জাক তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করছিলেনচিত্রালী-তে আজাচৌ লিখতে লিখতেনায়করাজ উপাধিটির প্রচলন হয়ে যায়

চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী ওরফে আজাচৌ যখন রাজ্জাকের নামকরণ করলেননায়করাজ, তখন কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন হলেন আজকের সফল নাট্যকার-পরিচালক অরুণ চৌধুরী তার অভিমত ছিল, ‘নায়করাজ এই অভিধাটি শুধু বাংলা সিনেমার উত্তমকুমারের সঙ্গে যায় অন্য কেউ এই অভিধার যোগ্য নন অরুণ চৌধুরী একদিন কথাটি বলেও ফেললেন আহমদ জামান চৌধুরীকে অরুণের কথা শুনে আজাচৌ উত্তেজিত না হয়ে বললেন, ‘আমার হিসেব সঠিক নাকি তোমাদের ক্ষুব্ধ হওয়াটা ঠিক সময়ই বলে দেবে পরে অবশ্য আজাচৌর কথাই সত্যি হয়েছে রাজ্জাকের মতো নায়ক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আর কাউকে দেখা যায় নি হ্যাঁ, রাজ্জাকের সমসাময়িক অন্য নায়করা ভালো কাজ করেছেন কেউ কেউ অভিনেতা হিসেবে রাজ্জাকের চেয়েও দক্ষ কিন্তু জনপ্রিয়তা, গ্ল্যামার, ব্যক্তিত্ব, সবধরনের চরিত্রে সফল, চলচ্চিত্রশিল্পে নেতৃস্থানীয় ভূমিকাসব মিলিয়ে রাজ্জাক সত্যি অন্য সবার চেয়ে আলাদা বলা যায়, তিনি একজন রাজতুল্য ব্যক্তিত্ব এমন ক্ষণজন্মা পুরুষের আবির্ভাব যুগে যুগে হয় না তিনি এক এবং অদ্বিতীয়  

 

সফল মানুষ

ব্যক্তিগত জীবনে রাজ্জাক একজন সফল মানুষ ছিলেন তিন ছেলে দুই মেয়ের জনক ছিলেন তিনি বড় মেয়ে শম্পা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ছোট মেয়ে ময়নাকে তিনি চলচ্চিত্রে এনেছিলেন সেজোকার, ‘পাগলা রাজা এবংমৌচোর ছবিতে অভিনয় করেছিল বাবার সঙ্গে বড় ছেলে বাপ্পারাজ ছোট ছেলে সম্রাটও চলচ্চিত্রে আসেন বাবার হাত ধরে মেজ ছেলে বাপ্পি ব্যবসায়ী তিন ছেলেই বিবাহিত তাদের স্ত্রীরা শ্বশুরকে সম্মান করতেন শাশুড়িকেও বেশ সম্মান করেন তারা কয়েকবার হজ করেছেন রাজ্জাক তারপর ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবনযাপন করতেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন তার জীবন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাজ্জাক বলেছিলেন : ‘নিজেকে আমি সফল বলব হানড্রেড পার্সেন্ট না যদি বলি, আল্লাহ নারাজ হবেন আমি একজন সফল মানুষ সফল পিতা, সফল পুরুষ, সফল শিল্পী আমার জীবনে না-পাওয়ার দুঃখ নেই আমি যা চেয়েছি বরং আল্লাহ তার থেকে বেশি দিয়েছেন আমি যা চেয়েছি আর আমি যা পেয়েছি নিয়ে যেন দুনিয়া থেকে চলে যেতে পারি

রাজ্জাকের শেষ ইচ্ছা অপূর্ণ থাকে নি

 

 

Leave a Reply

Your identity will not be published.