গাজর আমাদের পরিচিত একটি পুষ্টিকর সবজি। এর ইংরেজি নাম carrot এবং বৈজ্ঞানিক নাম Daucus carota গাজর শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, এতে রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্যগুণ। গাজর কাঁচা, রান্না করা, জুস বা সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধ, ত্বক ও চোখের যত্ন এবং হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য গাজরের তুলনা নাই। তাই প্রতিদিন গাজর খাওয়া যেতেই পারে।
এখন প্রশ্ন হলো, আমরা প্রতিদিন কেন গাজর খাব ? এর উপকারিতা কী ? এ প্রসঙ্গে গাজর খাওয়ার দশটি উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো।
১. চোখের জন্য উপকারী
গাজরে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন A-তে পরিণত হয়। এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গাজরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরকে নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
৩. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
গাজরে ফাইবার ও পটাশিয়াম উপাদান রয়েছে। এ দুটি উপাদান হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪. ত্বক ও চুলের যত্নে সহায়ক
গাজরে রয়েছে ভিটামিন A এবং C এই দুটি ভিটামিন ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং বয়সের ছাপ কমায়। এছাড়া চুলের গুণগত মান বাড়ায়।
৫. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, গাজরে রয়েছে ফাইবার। এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৬. ক্যানসার প্রতিরোধ করে
আগেই জেনেছি, গাজরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
গাজরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৮. হাড় শক্তিশালী করে
গাজরে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন K এটি হাড়েরর গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে।
৯. ওজন কমাতে সহায়ক
গাজরে ক্যালরি কম ও আঁশ বেশি থাকায় ওজন কমানোর জন্য বিশেষ সহায়ক।
১০. রক্তে স্বল্পতা দূরে করে
গাজরে আয়রন ও ফোলেট থাকায় এটি এনিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
গাজর খাওয়ার নিরাপদ পরিমাণ
সাধারণভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ১/২টি মাঝারি আকারের গাজর (প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম) নিরাপদে খেতে পারেন।
অতিরিক্ত গাজর খাওয়ার কুফল
* ত্বকের রং কমলা বা হলুদ হয়ে যায়।
* অতিরিক্ত ভিটামিন A শরীরে জমা হয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
* হজমের সমস্যা হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরামর্শ
* কাঁচা গাজর বেশি উপকারী
* রান্না করা গাজর পরিমাণে কম খাওয়া উচিত।
শেষ কথা
গাজর একটি স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান। এটি চোখের যত্ন থেকে শুরু করে হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হজম সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে অতিরিক্ত গাজর খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ গাজর খেলে শরীর সুস্থ, সতেজ ও শক্তিশালী থাকে।
গাজরের পুষ্টিগুণ
প্রতিা ১০০ গ্রাম গাজরে যে পুষ্টি উপাদান থাকে
উপাদান
পরিমাণ/ক্যালরি/
৪১ কিলোক্যালরি
পানি ৮৮%
কার্বোহাইড্রেট ৯.৬ গ্রাম
আঁশ ২.৮ গ্রাম
প্রোটিন ০.৯ গ্রাম
ফ্যাট ০.২ গ্রাম
ভিটামিন A ৮৩৪৩ IU
ভিটামিন K ১৩.২ mcg
ভিটামিন C ৫.৯ mg
পটাশিয়াম ৩২০ mg
Leave a Reply
Your identity will not be published.