[কর্মসংস্থান, উচ্চশিক্ষা বা ঘোরাঘুরি— এসব ক্ষেত্রে ভ্রমণপিপাসু বেশির ভাগ মানুষের ঝোঁক পশ্চিম ইউরোপের দিকে। অথচ পাহাড়-নদী-প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিখ্যাত পূর্ব ইউরোপও। যেখানে রয়েছে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আর ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাস্তবধর্মী পাঠ। এমনই এক দেশ সার্বিয়া। ভ্রমণের বহুরৈখিক পথে লেখকের কাছে নতুন উপজীব্য হয়ে ওঠে সার্বিয়ান এক তরুণী। ঠিক প্রেম নয়, প্রেমের চেয়ে কম কিছুও নয়। পার্থিব দৃশ্যপটের সঙ্গে উঠে এসেছে রোমান্সের হৃদয় ছোঁয়া-না ছোঁয়ার গল্পও। যার পুরো বর্ণনা থাকছে ইমদাদ হকের এই ভ্রমণকাহিনিতে। আজ পড়ুন তৃতীয় পর্ব।]
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ভুঁড়িভোজের কসমোপলিটন
তখন সকাল সাড়ে ৭টার মতো বাজে, ভিড় আছে বেশ। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নাশতার নির্ধারিত সময়। শীতের কাঁপাকাঁপি থামে না। মন কাঁপে, হৃদয় কাঁপে, মোচড় দিয়ে কেঁপে ওঠে ক্ষুধার মানচিত্রও। দু’ চার দিনের এই শীত-আমেজের স্বাদ খুঁজি, সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বিদেশি নাশতার সমাহার। হোটেল লবির পশ্চিম কর্ণারে রেস্টুরেন্ট। সার্বিয়ান বালিকাদের প্রেজেন্টেশন। সাদা অ্যাপ্রোনের সঙ্গে সাদা টুপি, গায়ের রঙও ধবধবে সাদা। সাদাময় পরিবেশ। মুখের মিষ্টি হাসিতে ‘গুড মর্নিং’। সম্ভাষণের ধরনেই ফুটে ওঠে খাবারের বৈচিত্র্য।
‘বুফে সেজেছে লুং ফুং চিকেন সুপ আর জিয়াংস চিলি পটেটোসে। রয়েছে চিলি ওয়েস্টার প্রন, প্লাম কেকের মতো অচেনা খাবার। আবার সুই মাই, সেজওয়ান অরেঞ্জ রোস্টেড পর্কে জমে উঠছে আড্ডা। ইউরোপিয়ান আচার, বিলিতি টার্কি, কখনো আওয়াধি কোর্মার মতো? নাকি ইতালীয় জেলাতোয় খানিকটা নলেন টপিংয়ের ফিউশন সোয়াদ? টেবিল সেজেছে পশ্চিমের ট্র্যাডিশনাল টফি ব্র্যান্ডি সস সহযোগে ক্রিসমাস পুডিংয়েও। দিনের শুরুতে শুকনা নাশতা নয়, একেবারে ভুঁড়িভোজের কসমোপলিটন! আফ্রিকান, আমেরিকান, নাইজেরিয়ান, রাশিয়ান, ইউরোপিয়ান, এশিয়ান- সব মহাদেশের বিচিত্র মানুষের বহুরৈখিক খাদ্যাভ্যাস, স্বাদ, ধরন। এশীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণের ইচ্ছেটা আরও উসকে দিতে রয়েছে ভিন্ন মেনুও। জিহ্বায় স্বাদ নিতে তাই তৎপর সবাই।’
জাত, ধর্ম, বর্ণ ভিন্ন- কিন্তু জাতে তো মানুষ। হোমিনিডিগোত্রের হোমোগণের একটি প্রজাতিই সারা বিশ্বের হর্তাকর্তা। দেশ, পতাকা, ভৌগোলিক সীমা, বাড়িঘর ভিন্ন ভিন্ন হলেও প্রজাতি একটাই। তাদের পরিষেবায় আরও বৈচিত্র্য থাকতেই হবে। এ ছাড়া সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে পেতে হবে প্রশংসাও। তাই নাশতার মেনুর বাহারি আয়োজন।
‘রয়েছে স্টেক-রিসোতো-পিৎজার সম্ভার। কয়েকটি টেবিলের সবচেয়ে বড়ো সৌন্দর্য টার্কি রোস্ট আর পর্ক চপে! লাল টকটকে, সঙ্গে সালাদের টুকরায় নান্দনিক উপস্থাপনা। ক্রেপ-র্যাপও যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেকের ভোজবিলাসী মনোযোগ। কোট-টাই-স্টেক-পুডিং আর স্ট্রবেরি অ্যান্ড হানি ক্রেপ, স্ট্রবেরি-চিকেন স্যালাডের মতো নানা অপরিচিত রেসিপিতে আমার আগ্রহ। বেকড সোকড ফ্রুট চিজ কেকের আকর্ষণই-বা কম কিসে! মিশর, ইরান, মরক্কো, লেবানন- নানা দেশের নবাবি চমকে জমে ওঠে নাশতার সমাবেশ। খাবার শেষে ডেজার্টে মিষ্টি থাকা আধুনিক ফ্যাশনের অনুষঙ্গ। সময়ের চাহিদা খেয়াল রেখে রেড ভেলভেট কেক, ক্যারট কেক, বাটারস্কচ ব্রাউনি।
এত কিছুর পর আর ২৫ সেন্টিমিটারের পাকস্থলীতে কয়েক মিলিমিটারের কফির জায়গা হয় না। নাশতার টেবিল থেকে ন্যাম সম্মেলনের ডেলিগেশন টিম দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে ওঠে।
স্পাউসদের ভিন্ন আয়োজন
‘ইমদাদ, আমরা কনফারেন্সে যাচ্ছি। আপনি না হয়, ম্যাডামদের সঙ্গেই থাকেন। বেলগ্রেড শহর ঘুরে দেখেন, পরে আমাকে গল্প শোনায়েন।’
এমদাদ চৌধুরীর এমন আহ্বান, আশীর্বাদ মনে হয় আমার কাছে।
ন্যাম সম্মেলনের আয়োজকরা স্মার্ট। মন্ত্রীরা ব্যস্ত সম্মেলন নিয়ে। স্পাউসদের আলাদা কর্মসূচি, ‘এক্সপ্লোর সার্বিয়া’; যার পুরোটাই ঘোরাঘুরি। ৭১টি দেশের প্রতিনিধি এখানে। সবার স্পাউসকে একসঙ্গে রাখাও মুশকিল। তাই অঞ্চলভেদে করা হলো একেকটা গ্রুপ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের স্পাউস সেলিনা মোমেন, শ্রীলঙ্কান পররাষ্ট্রমন্ত্রী থারকা বালাসুরিয়ার স্পাউস মালিন্থা বালাসুরিয়া আর লেবাননের আবদুল্লাহ বোউ হাবিবের স্পাউস জুলিয়া সিব্রুক কোল- এই হলো আমাদের টিম। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্মেলনের মাসখানেক আগেই সার্বিয়া ঘুরে গেছেন দ্বিপক্ষীয় সফরে। তাঁর জায়গায় সম্মেলনে এসেছেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি। তার স্পাউস বেচারা আমান লেখির কী সংস্থান, তা জানার সুযোগ পাই নি।
জোভাঙ্কা ব্রোজ-ইন কালার
সম্মেলনের প্রথম দিন ১১ অক্টোবর। ১০টা বাজার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে বেজে ওঠে রুমের পিএবিএক্স। সিকিউরিটি অফিসার মিলেনার ফোন, ‘সময় হয়ে গেছে, বের হতে হবে।’
রুম থেকে হোটেল লবিতে নামি। আগে থেকেই সেখানে ছিলেন অন্যরা। প্রত্যেক স্পাউসের জন্য একজন করে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, পুরো টিমের জন্য একজন ভ্রমণ গাইড, সঙ্গে সার্বিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মিলিচা ক্রিভোকাপিচ। বর্ষার মতো ভারী বৃষ্টির মধ্যে আমরা বের হই।
‘এক্সপ্লোর সার্বিয়া’ কর্মসূচিতে রয়েছে বেলগ্রেড সিটির গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনা। কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে সিটির বাইরেও। প্রথম দিনের প্রথম কর্মসূচি আরটিএস সেন্টারের প্রদর্শনী। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গাড়ি থেকে নামি। অতিথিদের মাথায় ছাতা ধরে নিয়ে যান সঙ্গে থাকা নিরাপত্তা অফিসার। কোটা পদে থাকা আমি দৌড় দিই ভোঁ করে, ঠান্ডা বৃষ্টি মাথায় পড়া মানে নির্ঘাত অসুখ বাঁধানো। বহুতল ভবনের নিচের ফ্লোরেই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘এগুলো কী? এই ভদ্রমহিলাই-বা কে?’
জিজ্ঞাসু মন থেকেই প্রশ্ন করে বসি। কাকে প্রশ্ন করেছি, জানি না। উত্তর পেলেই হলো।
‘নারীর যে ছবি দেখছ, উনি যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটোর ফার্স্ট লেডি জোভাঙ্কা ব্রোজ। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ব্যবহার করা জিনিসপত্রের প্রদর্শনী। ন্যাম সম্মেলন উপলক্ষে অতিথিদের জন্য এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।’
‘ধন্যবাদ। কিন্তু তুমি...?’
খটখটে প্রশ্ন। ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করা হয় নি। স্যরি বলে নিজের পরিচয় দিই।
ভদ্রমহিলা আরটিএসের স্পেশাল প্রজেক্ট এডিটর আনা মার্জিয়া সিমোনোভিচ।
‘সাংবাদিক’- নিজের মনেই নিচু স্বরে বলি। বুঝতে না পারলেও তিনি শুনতে পেয়েছিলেন।
‘সরি, তুমি কিছু বলছিলে?’
‘তেমন কিছু না। তুমি সাংবাদিক বলে খুশি হয়ে উঠলাম। আমিও সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করতাম। আপাতত কয়দিন বিরতিতে আছি।’
খুশি হয় সিমোনোভিচ।
দেওয়ালে ঝোলানো নারীর কাপড়চোপড়, অন্তর্বাস, পায়ের জুতা, ঠোঁটের লিপস্টিক। কাপড়চোপড়ের মধ্যে আবার লেহেঙ্গা, জিনস, বিভিন্ন রকমের সালোয়ার-কামিজ। রয়েছে লম্বা গাউন, ছোটো হাফপ্যান্ট, শার্ট, টিশার্ট, ফ্রক, মাথায় চুল বাঁধার ব্যান্ড আরও কত কী! এসব কাপড়ের মাঝখানে বড়ো একটা ছবি। যার ছবি, তারই পোশাকের প্রদর্শনী। প্রতিটি পোশাকের নিচে বর্ণনা দেওয়া। তা সত্ত্বেও আমি পড়তে পারছি না। চেনাজানা ভাষার গুরুত্ব টের পাই আবার।
প্রদর্শনী দেখার সময় ৩০ মিনিট। একজন গাইড এসে সম্ভাষণ জানালেন অতিথিদের। নিয়ে গেলেন প্রদর্শনীকেন্দ্রের ভেতরে। শুরু হলো ‘দর্শনযজ্ঞ’। ছোটো আর ছিমছাম আয়োজন। বড়জোর ১৫ জোড়া পোশাক আর গোটা কতক জুতা-মোজা রাখা হয়েছে। কিন্তু ব্রিফের যে ছিরি (শ্রী), তাতে ঘণ্টা দেড়েক লেগে যাবে বলে মনে হলো। ম্যাডামদের কয়েকটা ছবি তুলে সরে আসি। প্রদর্শনীকেন্দ্রের এক কোণে এসে দাঁড়াই। তখনই আমার পাশে এসে দাঁড়ায় সিমোনোভিচ। জমে ওঠে গল্প।
দেশটির প্রথম ফার্স্ট লেডি জোভাঙ্কা ব্রোজ ফ্যাশনের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই প্রদর্শনীতে ফ্যাশনেবল পোশাক, চুলের ক্লিপ, হাতের রিং, পায়ের জুতাসহ ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তুলে ধরা হয়। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে বিভিন্ন সরকারি সফর ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে পরা পোশাকগুলোও নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। ১৯৪৫-৮০ সাল পর্যন্ত টিটো রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে অনেকগুলো দেশ ঘুরে বেড়ান। তিনি বাংলাদেশও সফর করেন। এসব সফরে পরা পোশাকগুলি বিশেষভাবে প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। দেশটির বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার মিলা ক্যাভোলোটি এবং ক্লারা রথসচাইল্ডের ডিজাইনেই এগুলোর বেশির ভাগ পোশাক। প্রথমবারের মতো এমন প্রদর্শনীর উদ্যোগে প্রথমেই স্থান পেয়েছে তাদের বিয়ের আসরের যুগল ড্রেস। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শাসনের শেষ দিন যে পোশাকটি পরেছিলেন জোভাঙ্কা, প্রদর্শনীর শেষ দেওয়ালে সেটিও রাখা হয়।
‘মার্শাল টিটো নাকি প্রেমিক পুরুষ ছিলেন? যেখানে যেতেন প্রেম করে বেড়াতেন?’
খাঁটি বাংলায় ভাষাটি কি নেতিবাচক ইঙ্গিত প্রকাশ করে? পরিশীলিতভাবেই জিজ্ঞেস করি সিমোনোভিচকে।
তার উত্তর, ‘টিটো খুব রোমান্টিক ছিলেন। সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গে তার ভাব হয়ে যেত। জোভাঙ্কা তখন নার্স হিসেবে কাজ করতেন। তাদের প্রথম দেখা হয় ১৯৪৪ সালে বসনিয়া ও হার্জেগোভেনিয়ার ড্রভার শহরে। প্রথম দেখার পর থেকেই তাদের প্রেম, এর বছর কয়েক পরেই বিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ অবস্থা কাটতে শুরু করেছে কেবল, সেই সময়ে ঘটা করে তাদের বিয়ে। টিটো যেখানেই যেতেন, সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন ব্রোজকে। যে দেশে যাচ্ছেন, সেই দেশের রীতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাক বানিয়ে নিতেন তারা। ব্রোজের এই ফ্যাশনপ্রীতিতে মুগ্ধ ছিল সবাই। দেশি-বিদেশি অতিথিদের বাসায় ডেকে পোশাক দেখাতেন ব্রোজ।’
কথায় কথায় প্রসঙ্গে আসে, ‘আমাদের দেশের সাবেক একজন রাষ্ট্রপ্রধানও রোমান্টিক ছিলেন!’
‘তোমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কে?’
মৃদু হাসিতে এই ইস্যু শেষ করি, প্রসঙ্গ পাল্টাই। ওর কাছে প্রশ্ন রাখি, ব্রোজের জীবনকাল সম্পর্কে।
জোভাঙ্কা ব্রোজ দ্বিতীয় বিশ্বযুুদ্ধের সময় পার্টিজান আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে তিনি বিয়ে করেন জোসিপ ব্রোজ টিটোকে। জোসিপ ব্রোজ টিটো সেই সময়ের যুগোস্লাভিয়াকে টেনে তুলছিলেন, আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন।
এই যুগে স্টার জলসায় যে শাড়ি পরে নায়িকা ঘুরে বেড়ায়, তার নামে শাড়ির নামকরণ হয়ে যায়। কলকাতা, ঢাকার গাউছিয়া, নিউ মার্কেটসহ শাড়ির দোকানগুলোতে শাড়ি বিক্রির ধুম পড়ে যায়। আনারকলি, মাদারকলি, পাখিসহ কত কত নাম! এসব চলের শুরু মনে হয় সেই প্রাচীন আমল থেকেই।
ব্রোজ সেই সময়ের পোশাক ব্র্যান্ডের জীবন্ত বিজ্ঞাপন ছিলেন, ছিলেন আন্তর্জাতিক মানের একজন মডেল। তিনি যে পোশাক পরে বের হতেন, পরের দিনগুলোতে তরুণী, মধ্যবয়স্ক, এমনকি বয়সে পরিণত নারীদের পছন্দের তালিকায় থাকত সেই পোশাকই। কমিনিস্টদের দাবি, ‘সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে একই ধরনের পোশাকের জনপ্রিয় ট্রেন্ডস চালু করতে চেয়েছিলেন ব্রোজ। শ্রেণিবিহীন সমাজ তৈরিতে টিটো-ব্রোজ দম্পতি পোশাকের মাধ্যমে রাজনৈতিক ভূমিকাও রাখেন।’
‘১৯৮০ সালে টিটোর মৃত্যুর পর সময়টা আর ভালো কাটে নি ব্রোজের। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও পালটে যায়। একটা বাড়িতে তাকে আবদ্ধ করে রাখা হয়। দুই দশকেরও বেশি সময় কাটাতে হয় একাকিত্ব জীবন। হবেই-বা না কেন, তার চেয়ে ৩২ বছরের বেশি বয়স্ক টিটোকে বিয়ে করেন তিনি। ২০১৩ সালে ব্রোজ ৮৮ বছর বয়সে বেলগ্রেডের হাসপাতালে মারা যান। তাকে দ্য হাউজ অব ফ্লাওয়ারস সমাধিতে সমাহিত করা হয়।’
অল্প বয়সেই বিয়ের প্রতি টান এই সাংবাদিকের। আমি যখন এটা ভাবছি, তখন তার সিরিয়াসনেস জোভাঙ্কার দিনকাল নিয়ে।
“২০১৩ সালের অক্টোবরে মৃত্যুর পর জোভাঙ্কা ব্রোজের পোশাকটি বেলগ্রেডের এথনোগ্রাফিক মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হয়। এখানে সংরক্ষিত অন্যান্য পোশাকের মধ্যে রয়েছে ৬৭৬টি পোশাক, ১০০ জোড়া জুতা, ৮৫ জোড়া গ্লাভসসহ প্রায় ১ হাজার ১০০ ধরনের উপকরণ। টিটো যেমন সার্বদের কাছে বীরপুরুষ, স্ত্রী হিসেবে ব্রোজও সেখানে বীর নারী। সহজ বাংলা ভাষায় ‘বীর পুরুষের ফার্স্ট লেডি”।
(চলবে)
Leave a Reply
Your identity will not be published.