গতকাল ১৮ অক্টোবর, বিকেলে ধানমন্ডিস্থ বেঙ্গল শিল্পালয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও কালি ও কলমের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্মরণসভা। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সহকর্মী, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী, সাহিত্যিক, শিল্পী ও সংস্কৃতিমনা মানুষেরা।
শুরুতে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রদর্শিত হয় তাঁর কর্ম ও জীবন নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র। অতঃপর বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী তুলে ধরেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের বহুমাত্রিক কাজের বিষয়টি।
স্মরণসভায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রিয়জন ও স্বজনেরা বক্তব্য রাখেন। কথাসাহিত্যিক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘মনজুর স্যারের কারণেই ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায় থাকতে পেরেছি। তিনি আমার প্রতিটি সাফল্যে গর্বিত হতেন। এমন মানুষ আজ বিরল, যিনি নিজের আলো অন্যদের মধ্যে বিলিয়ে যেতেন।’
কবি ও অনুবাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘আমি কখনো তাকে “না” বলতে দেখি নি। সংস্কৃতি অঙ্গনে যারা কাজ করেছেন, সবাই কোনো না কোনোভাবে তাঁর সহযোগিতা পেয়েছেন। দ্বিধাহীন অথচ সহজভাবে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁকে সবার প্রিয় করে তুলেছিল।’
চারুশিল্পী ফরিদা জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের চিত্রকলার বিকাশে মনজুর ভাইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শিল্পকে শিল্পীর চোখে দেখতেন এবং সহজভাবে অন্যদের বোঝাতে পারতেন।’
প্রাবন্ধিক ফকরুল আলম বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক ছিল অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ের। তিনি শুধু বড় লেখকই নন, ছিলেন অসাধারণ মানুষ ও বন্ধু। তার গুণাবলি বলে শেষ করা যাবে না।’
কবি কায়সার হক বলেন, ‘আমরা সবাই তাকে তার কাজের মধ্য দিয়েই মনে রাখব এবং তার জীবন থেকে শিক্ষা নেব।’
ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেন, ‘সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম যে মূল্যবোধ ধারণ করেছেন, তা পরের প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।’
এছাড়া পরিবারের পক্ষে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ভাগ্নে ড. শামিম সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় বক্তারা বলেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন এমন এক মানুষ, যিনি সাহিত্য, শিল্প ও শিক্ষার প্রতিটি পরিসরে রেখে গেছেন চিন্তার এক মানবিক উত্তরাধিকার।
উল্লেখ্য, শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও সংস্কৃতিচিন্তক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম (১৯৫১-২০২৫) ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সহ-সভাপতি। ‘কালি ও কলম’ পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি। এছাড়া শিল্পকলাবিষয়ক পত্রিকা ‘যামিনী’, জীবনধারা পত্রিকা ‘চারবেলা চারদিক’ এবং আইস টুডে’র সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য।
Leave a Reply
Your identity will not be published.