[শহিদ হোসেন খোকন দীর্ঘদিন ধরে গল্প লিখছেন। এই প্রথমবারের মতো তিনি উপন্যাস লিখলেন। এখানে মূর্ত হয়ে উঠেছে অগ্নিঝরা একাত্তর, সেই সময়ের রাজনৈতিক আবহাওয়ার উতল হাওয়া। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। তৎকালীন পাকিস্তানের দুই অংশের পটভূমিতে এই উপন্যাসে জীবন্ত হয়ে উঠেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের প্রধান জাতীয় নেতৃবৃন্দ, ইয়াহিয়া খান, ভুট্টোসহ আরও অনেকে। আজ পড়ুন চতুর্থ পর্ব...]
- প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
- দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
- তৃতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের জেনারেলরা এক জরুরি সভায় মিলিত হয়েছেন। বিষয়টি খুবই জরুরি, আজকের এই সভায় নির্ধারিত হবে পূর্ব-পাকিস্তানের ভাগ্য। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই এ প্রদেশটি নানা রকম আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। প্রথমে হলো ভাষা নিয়ে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, ভারতে যেমনটা হলো হিন্দি। কিন্তু বাঙালিরা সেটা মানল না, শুরু করে দিল আন্দোলন ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’। ওদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও আন্দোলন আর ফুরায় না। সারা বছরই নানা ইস্যুতে বাঙালিরা রাজপথে। শেখ মুজিব তাদের পাকিস্তান ভাঙার উস্কানি দিচ্ছে।
শেখ মুজিবের উত্থানকে জেনারেলরা সহজে মেনে নিতে পারছেন না। সে তাঁর ছয় দফার মাধ্যমে স্বায়ত্বশাসনের যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি কিছুতেই মেনে নেওয়ার উপায় নেই। ছয় দফা মানতে গেলে পাকিস্তানের অখণ্ডতা বজায় রাখা মুশকিল হয়ে পড়বে, পাকিস্তান ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। শেখ মুজিবের সাথে দু’ দফা আলোচনা করে জেনারেল ইয়াহিয়া খান বুঝে গেছেন, সে তার ছয় দফা দাবি থেকে কিছুতেই পিছু হটবে না। কোনো রকম হুমকি-ধামকির সে তোয়াক্কা করে না।
ইয়াহিয়া খান মনে করেন, দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম কাজ হলো পাকিস্তানের ইউনিটিকে ঠিক রাখা। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী নেতারা ভেবেছিল হুমকি ধামকি দিয়ে তারা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু জেনারেলরা সেটা হতে দেয় নি। সৈন্যরা বালুচদের আস্ফালনকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ওদের আন্দোলন। জেনারেল টিক্কা খান বিরোধীদের কচুকাটা করেছে। সেই টিক্কা খানকেও এই মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে।
পাকিস্তানের জেনারেলরা রাজকীয় জীবন-যাপন করেন। সেই আইয়ুব খানের সময় থেকেই পাকিস্তানের বাজেটের ৭০ শতাংশ খরচ করা হয় সামরিক খাতে। এতে করে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার চলে এসেছে জেনারেলদের হাতে, অনেকে সুইস ব্যাংকে টাকা রাখতে শুরু করেছেন। অস্বীকার করে লাভ নেই, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার বেশির ভাগ জোগান দেয় পূর্ব-পাকিস্তান। এ রকম একটি নিখাদ আয়ের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলে জেনারেলদের দুর্দশার সীমা থাকবে না। তাই অখণ্ডতার ব্যাপারে জেনারেলরাও কোনো আপস করতে রাজি নয়। বাঙালিদের সাথে এতদিন অনেক ভদ্র আচরণ করা হয়েছে, আর নয়। এবার সময় হয়েছে কঠোর হওয়ার। শেখ মুজিব আর তাঁর দল আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীকে কঠিন শায়েস্তা করতে হবে।
আজকের সভায় হাজির প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, চিফ অফ স্টাফ জেনারেল পীরজাদা, কম্যানডেন্ট জেনারেল টিক্কা খান, জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের চেয়ারম্যান জেনারেল ওমর খান এবং গোয়েন্দাপ্রধান জেনারেল আকবর খান।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার মেজাজ আজ খুবই খারাপ। আকলিমা সজ্জাসঙ্গিনী হিসেব কাল যে মেয়ে দুটি পাঠিয়েছিল ওরা নিছকই আনাড়ি। এর মধ্যে একজন আবার মদ্যপান করে না। ইয়াহিয়া অনেক অনুনয় করেও মেয়েটিকে কিছুতেই মদ্যপানে রাজি করাতে পারলেন না।
মেয়েদের ব্যাপারে ইয়াহিয়া সব সময়ই দিলখোলা, তাদের সঙ্গে তিনি কখনোই রুড হতে পারেন না। কাল হঠাৎ কী হলো মেয়েটিকে মদ্যপান করানোর জন্যে তার ঝোঁক চেপে গেল। মেয়েটি যতই বলছে ‘আমি মদ্যপান করি না’ ততই ইয়াহিয়া জোর করতে লাগলেন এবং একপর্যায়ে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে বোতল থেকে মদ ঢেলে দিলেন। বাধা দিতে গিয়ে মেয়েটি মদের বোতল ভেঙে ফেলল এবং ইয়াহিয়ার মুখে থুথু ছিটিয়ে দিল।
মেয়েটির নাম ইয়াসমিন। ইয়াসমিনকে জেনারেল রানি আকলিমা খুব করে শিখিয়ে পড়িয়ে দিয়েছে ইয়াহিয়া খানের পছন্দ-অপছন্দের কথা। তবু ইয়াসমিন হঠাৎ করেই রেজিস্ট করে ফেলল। ইয়াসমিন জানে পাকিস্তানের এই জেনারেলগুলো খুবই বন্য। ওরা মেয়েদের মনে করে হরিণশাবক। মেয়েদের শরীর রক্তাক্ত করে ওরা বন্য আনন্দ পেতে চায়। ইয়াহিয়া তার ছড়িটি দিয়ে ইয়াসমিনকে অনেকক্ষণ ধরে পিটিয়েছে। তারপর ইয়সমিনকে বের করে দিয়ে দ্বিতীয় মেয়েটিকে নিয়ে মত্ত থেকেছে। কিন্তু থুতু ছিটিয়ে দেওয়ার অপমান কিছুতেই ভুলতে পারছেন না।
এই প্রথম ইয়াহিয়া কোনো মেয়ের গায়ে হাত তুলেছে। মেয়েদের গায়ে হাত তোলা ইয়াহিয়ার একেবারেই অপছন্দ। ওরা তো এমনিতেই মোমের মতো নরম, ওদের গায়ে হাত তোলার মতো বর্বর কাজ আর কিছুই হতে পারে না। সেই বর্বর কাজটিই কাল রাতে তাকে করতে হয়েছে। ইদানীং ইয়াহিয়ার নানা ব্যাপারে হুট করেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে। দেশের প্রেসিডেন্টকে সব সময় ধৈর্যশীল হতে হয়, সকলের অভিযোগ মন দিয়ে শুনতে হয়। ধৈর্য হারালে প্রেসিডেন্টগিরি করা যায় না।
সবাই আসন গ্রহণ করার পর ইয়াহিয়ার থমথমে মুখের দিকে তাকাল। ইয়াহিয়া বললেন, ডিয়ার জেনারেলস, আপ লোগ জানতে হ্যায় কিউ হাম আপ সবকো ইয়ে জরুরি মিটিং পে বুলায়া। উই আর পাসিং এ ডিফিকাল্ট টাইম, সম্ভবত পাকিস্তান সৃষ্টির পর এমরকম ডিফিকাল্ট টাইম আমরা ফেস করি নি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে, রাষ্ট্রের পরিচালক হিসেবে আমি আপনাদের কাছে দায়বদ্ধ। আমি জানি আপনারা কেউ কেউ আমাকে খামখেয়ালি প্রেসিডেন্ট মনে করে থাকেন।
ইয়াহিয়ার এই উক্তিতে সবাই সমস্বরে বলে উঠল, নেহি নেহি! এ বিলকুল গলদ হ্যায়। আমরা কেউ এ রকম ভাবি না মিস্টার প্রেসিডেন্ট।
ইয়াহিয়া খান সবার মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করলেন, বিশেষত জেনারেল পীরজাদার কী প্রতিক্রিয়া কী হয় সেটা বোঝার চেষ্টা করলেন। ইয়াহিয়া জানেন পীরজাদা খুবই ধুরন্ধর। ভুট্টোর সাথে তার বেশ দহরম-মহরম, সম্ভবত টাকাপয়সারও লেনদেন হয়েছে। আবার পীরজাদার মাধ্যমে ভুট্টোর সাথে এই কানেকশনটাও দরকার, কাকে কখন কোন কাজে লেগে যায় বলা যায় না। রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নাই। এজন্যেই ইয়াহিয়া একটু গলা নরম করলেন।
শুনুন, আইয়ুব খান সাহেব পদত্যাগ করার পর আমার ওপর এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব এসে পড়েছে। সেই দায়িত্ব হলো পাকিস্তানের নতুন সংবিধান রচনা করে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসা। সেই মতে আমরা পাকিস্তানে নির্বাচন দিয়েছি। নির্বাচনের রেজাল্ট আপনারা দেখেছেন। পশ্চিম-পাকিস্তানে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। ভুট্টো সাহেবের পিপলস পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, সে আমাদের নিজেদের লোক। সমস্যা হলো পূর্ব-পাকিস্তানে, সমস্যা হলো শেখ মুজিব এবং তার ছয় দফা।
জেনারেল পীরজাদা বললেন, শেখ মুজিব কো ছে দফা পাকিস্তানক তোরনে কি সাজেস হ্যায়। সে তার ছয় দফা দিয়ে জনগণকে স্বায়ত্বশাসনের নামে ধোঁকা দিয়ে ইলেকশনে জিতেছে এবং এটা পুরোটাই ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্র। ইন্ডিয়া বাঙালিদের নিয়ে খেলছে। আর হারামজাদা বাঙালিগুলোও হয়েছে ইন্ডিয়ার পা-চাটা কুকুর। ইসি বরদাস্ত নাকি কিয়া যা সাক্তা।
ইয়াহিয়া চোয়াল শক্ত করে বলেন, কুত্তে ক পালনে ক সাথ সার পার রাক্ষায়া গায়া হ্যায় আব ওয়াক্ত আ গায়া হ্যায় কি উনক ফেকদো। আর ও হিন্দুস্থান কো ম্যায় ইতনা সবক শিখাউঙ্গি ও কাভি নাহি ভুলেগা। বাঙালিদের শায়েস্তা করার পরই আমরা ইন্ডিয়াকে ধরব। পূর্ব এবং পশ্চিম দুই দিক থেকেই আমরা ওদের ওপর সাঁড়াশি আক্রমণ চালাব। আক্রমণ হবে অতর্কিতে। প্রথমেই আমাদের বিমান বাহিনী ওদের বিমানগুলোকে ধ্বংস করে বিমান ঘাঁটির দখল নিয়ে নেবে। আমাদের গাজী সাবমেরিন দিয়ে দখল নেবে ওদের নৌবন্দর। গাজীতে যে একুশ ইঞ্চি টর্পেডো আছে এগুলি একেকটা বন্দর ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। প্রথেমেই ধ্বংস করতে হবে ওদের বিমান বাহিনীর রণতরী বিক্রান্ত।
পীরজাদা বলল, টর্পেডোর সাইজ কত বললেন মি. প্রেসিডেন্ট?
২১ ইঞ্চি।
একটা রাখতে হবে মিসেস ইন্দিরা গান্ধির জন্যে।
জেনারেল পীরজাদার কথা শুনে ইয়াহিয়া খান ছাড়া সব জেনারেলদের মধ্যে হাসির বন্যা বয়ে গেল, কিছুতেই আর হাসি থামতে চায় না। সবাই যেন মানসচক্ষে ২১ ইঞ্চি টর্পেডোর ধ্বংসলীলা দেখতে পাচ্ছে।
ইয়াহিয়া খান তার হাতের ছড়ি টেবিলে ঠুকে একটা হুঙ্কার দিলেন, খামোশ! সবার মুখ থেকে হাসি উধাও হয়ে গেল। জেনারেলস, ইউ হেভ টু বি প্রফেশনাল। আমরা একটা সিরিয়াস সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছি আর আপনারা সবাই দাঁত বের করে হাসছেন! দিস ইস অ্যাবসারড, কমপ্লিটলি নসসেন্স।
জেনারেল পীরজাদা বললেন, আই অ্যাম সরি মি. প্রেসিডেন্ট, আপনি কন্টিনিউ করুন।
আমাদের ট্যাঙ্ক বহর নিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ঢুকে যাবে পাকিস্তানি সেনারা। উত্তর দিক থেকে আমাদের সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসবে চীন, বিনিময়ে আমরা উত্তর ভারতের কিছু অংশ ওদের ছেড়ে দেব। দিল্লি দখল না করা পর্যন্ত আমাদের এ অভিযান চলবে। চীনের সঙ্গে আমার এ ব্যাপারে প্রাথমিক কথা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের চেয়ারম্যান জেনারেল ওমর খান সন্দিগ্ধ কণ্ঠে বললেন, কিন্তু আমাদের সোলজার তো ওদের তুলনায় অনেক কম। ওদের নয় লাখ বিশ হাজার আর আমাদের তিন লাখ একুশ হাজার থ্রি ইস্টু ওয়ান!
ইয়াহিয়া অবাক চোখে জেনারেল ওমরের দিকে তাকিয়ে বললেন, জেনারেল, আপ এ কিয়া বলা? ইন্ডিয়ান সোলজার পাকিস্তানের সোলজারদের মোকাবেলা করার ক্ষমতা রাখে? হিন্দুরা সব ভেজিটেরিয়ান। ওদের তাগদ কোথায় আমাদের সোলজারের সামনে দাঁড়ায়! পাকিস্তানের একেকজন গরু খাওয়া মুসলমান সোলজার ১০ জন হিন্দু সোলজারকে কাবু করার ক্ষমতা রাখে। আপনি কি ইতিহাস দেখেন নি? ইন্ডিয়ানরা কখনো কোনো যুদ্ধে মুসলমানদের সঙ্গে জিতেছে বলুন?
নেহি।
হাম তইমুর লং, নাদের শাহর জানসিং হ্যায়, হামারি দিলওমে ইসলাম হ্যায়। হিন্দুরা হলো ভীতু, কাপুরুষ, আর দুর্বল। পাকিস্তানির সোলজারের বন্দুকের সামনে ওরা দাঁড়াতেই পাড়বে না। বদরের যুদ্ধে কী হয়েছিল? ৬২৪ সালে বদরের যুদ্ধে আমাদের নবী মাত্র ৩০০ জন সোলজার নিয়ে ১০০০ সৈন্যের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিল। আপনি তুর্কি সেনাদের দিকে তাকান, মাইটি রোমানদের ৭০০ বছরের শাসনকে ধ্বংস করে কন্সটান্টিনোপল দখল করেছিল ২২ বছরের যুবক সেকেন্ড মোহাম্মেদ। তাহলে আমরা কেন পারব না?
জেনারেল ওমর বলে, খোদা চাহে হামভি কার সাকতি হ্যায় ইনশাল্লাহ...
এরপর সবাই ইনশাল্লাহ ইনশাল্লাহ বলে জেনারেল ওমরকে সাপোর্ট করে।
ইয়াহিয়া উৎসাহ পেয়ে বলে, আপনাদের হয়তো যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু আমি সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারে ইংরেজদের সাথে হিটলারের জার্মান সোলজারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। সে এক কঠিন দিন গেছে। ইজিপ্ট, সুদান, লিবিয়া, সাইপ্রাস ইতালিতে আমি যুদ্ধ করেছি। জার্মান সৈন্যরা আমাকে বন্দি করে নিয়ে যায় ফ্রান্সে। সাতজন জার্মান সোলাজারকে হত্যা করে আমি চলে যাই ইংল্যান্ডে। এসব কী প্রমাণ করে বলুন?
আব কাহিয়ে।
এসব প্রমাণ করে খোদাতালা আমাদের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা করার। জাহাল বাঙালি খোদাক উস মর্জিক সামঝনি কি স্লাহিয়াত নাহি রাখতি হ্যায়। খোদার এই ইচ্ছা বোঝার ক্ষমতা মূর্খ বাঙালিদের নেই।
গোয়েন্দাপ্রধান জেনারেল আকবর বলেন, ওরা কী করে বুঝবে মি. প্রেসিডেন্ট, ওরা তো ইমানদার মুসলমান নয়। ওরা হলো নামে মাত্র মুসলমান। বাঙালিদের পূর্বপুরুষরা ছিল হিন্দু, ওরা আসলে হিন্দুদের বংশধর। ওদের ইমান এখনো পোক্ত হয় নাই। ওদের গায়ে এখনো হিন্দুর গন্ধ লেগে আছে।
জেনারেল পীরজাদা বলেন, আপনি ঠিকই বলেছেন মি. আকবর। ওদের মেয়েরা শাড়ি পরে, কপালে হিন্দুদের মতো ফোঁটা দেয়। ওদের বিয়েশাদিতে উলুধ্বনি দেওয়া হয় আর জোরে শঙ্খ বাজানো হয়। আর ওদের আচার-অনুষ্ঠানে হিন্দুর রবীন্দ্রসংগীত বাজানো হয়। বাঙালির আদব-লেহাজ, কালচার পুরোটাই হিন্দুয়ানী। এখন প্রশ্ন, হলো আমরা কেন নির্বাচন দিলাম?
(চলবে…)
উপন্যাস বিভাগ থেকে আরও পড়ুন।
Leave a Reply
Your identity will not be published.