[থ্রিলার উপন্যাস। এই উপন্যাসের প্রতি পদে রহস্য ও রোমাঞ্চের হাতছানি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার জাহিদ আহমেদ। ঢাকার রেডিসন হোটেলে শম্পা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানের একটি রুমে শম্পার সঙ্গে যাওয়ার পর কী ঘটে, তা জাহিদের মনে নেই। এরপর শম্পা জাহিদের ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজির ছাত্রী সেজে তার পিছু নেয়, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করতে থাকে...। এক সময় শম্পা খুন হয়। কে খুন করল শম্পাকে? জাহিদ আহমেদ নাকি অন্য কেউ? নাকি অন্য রহস্য জড়িয়ে আছে এখানে? আজ পড়ুন ১৪তম পর্ব।]
প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তৃতীয় পর্ব চতুর্থ পর্ব পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব সপ্তম পর্ব অষ্টম পর্ব নবম পর্ব দশম পর্ব
আচ্ছা মানুষ এত সুন্দর হয় কীভাবে?
কার কথা বলছেন?
আপনার কথা। মাফ করবেন আমার এই চরম রূপ-ধৃষ্টতা। আপনার দিকে তাকালেই কী যে হয়, আমি আর চোখ ফেরাতে পারি না।
কী বলব বলুন, আল্লাহ আমাকে সুন্দর করে বানিয়েছেন।
আপনার রূপসুধা আমাকে কেমন টালমাটাল করে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে একটা কবিতা লিখে ফেলি।
এ রকম বিপদের সময় আপনার ফ্লার্টবাজি একটু বন্ধ করুন। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ সুন্দরী মেয়ে আছে, কতজনের সঙ্গে এসব করবেন বলুন তো? আপনার এই অতি সৌন্দর্যমুগ্ধতাও কিন্তু এক ধরনের অসুস্থতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। মুগ্ধ হতেই পারেন কিন্তু সেটা মনের ভেতর রাখুন প্লিজ।
মেয়েদের রূপে কেন যে আমি শরবিদ্ধ পাখির মতো বারবার ঘায়েল হই আর ছটফট করি নিজেই বুঝি না।
রোকসানা আপা যদি আপনার মতো হাজার হাজার ছেলের রূপসুধা পান করা আরম্ভ করে তখন কেমন লাগবে বলুন তো ভাই?
খুবই খারাপ লাগবে। আমার মন ভেঙে যাবে। নিজেকে একটা পথের ফকির মনে হবে।
সেই তো, যেটা আপা করলে আপনার খারাপ লাগবে, সেটা আপনিও করবেন না। যদি সংসার টিকিয়ে রাখতে চান।
হুম। রোকসানা ছাড়া অন্য কেউ হলে এতদিনে আমাকে ছেড়ে চলে যেত। আমাকে আসলেই ভালো হয়ে যেতে হবে। আই উইল ট্রাই।
ইন্সপেক্টর লাবণির সামান্য ক’টা সহজ বাক্যেই প্রফেসর জাহিদ চুপসে গেলেন। লাবণি বলল, শুনুন, যে কারণে আপনাকে ডেকেছি। একটু পরিষ্কার করে বলুন তো প্রোভাইস চ্যান্সেলর মাহতাব হাবিবকে কেন আপনি ফাঁসালেন?
আমি তো ওই ভিডিও ভাইরাল করি নি।
সেটা তো তিন্নি সাহা ওনার নিউজের টিআরপি বাড়ানোর জন্য করেছেন। কিন্তু তিন্নি সাহাকে তো আপনি প্রোভিসির দুর্নীতির এভিডেন্স সরবরাহ করেছেন। কেন করেছেন? আপনি তো ইন্টার্নালি কমপ্লেইন করতে পারতেন?
দেখুন, ইন্টার্নাল কমপ্লেইনে কিছু হয় না, নিউজ পেপারে রিপোর্ট আসলে এদের একটু আধটু টনক নড়ে।
আমার ধারণা শম্পাকে আপনার পেছনে লাগিয়েছিল এই মাহতাব হাবিব।
ব্যাপারটা আমার মাথায়ও এসেছে। কিন্তু বাজে ভিডিও বানানো, তারপর মেয়েটাকে খুন করে আমাকে ফাঁসানো, এই জাতীয় কাজ যে উনি করবেন তা আমি ঘুণাক্ষরেও ভাবি নি।
কিন্তু আপনার ভিডিও লিক হওয়ার আগেই উনি শম্পাকে আপনার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। তার মানে প্রোভিসির সঙ্গে আপনার রেষারেষি আরও আগের।
আপনি ঠিকই বলেছেন। আমরা গত পনেরো বছর ধরেই রাইভাল। আসলে প্রোভিসি হওয়ার কথা ছিল আমার কিন্তু আমাকে ল্যাং মেরে এই গাধাটা প্রোভিসি হয়েছিল।
সে কারণে আপনি ওকে ফাঁসিয়েছেন?
একটা দুর্নীতিবাজ লোক দেশের সেরা ইউনিভার্সিটির নেতৃত্ব দেবে সেটা কী কোনো ভালো কথা? হ্যাঁ, সেই অর্থে ওনাকে আমি ফাঁসিয়েছি, কিন্তু ডকুমেন্টস আর অডিও দিয়ে, ভাইরাল ভিডিও দিয়ে না।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, উনিও প্রি-এমটিভভাবে আপনাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিলেন। আর উনি যেহেতু ফিলোসফি ডিপার্টমেন্টের, উনি বোধহয় সহজেই শম্পাকে রেজিস্ট্রিতে এন্ট্রি ছাড়াই ক্লাসে আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
প্রফেসর জাহিদ এবার চিবুকে হাত দিয়ে হতাশ কণ্ঠে বললেন, দ্যাট ইজ ভেরি মাচ পসিবল। আমাদের ভার্সিটিতে এমনিতেও অনেক অবৈধ পলিটিকাল অনুপ্রবেশ থাকে, সবাই সেটা মুখ বুজে মেনে নেয়। সুতরাং শম্পার অবৈধভাবে ক্লাস করা কোনো অসম্ভব ব্যাপার না।
আচ্ছা, আমি মোটামুটি বুঝতে পেরেছি কী হয়েছে। আপনি মেয়েদের রূপসুধা পান করা ছেড়ে একটু ভাবুন কীভাবে খুনের মতো গুরুতর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়। নতুন কোনো তথ্য মাথায় এলে জানাবেন।
জি, কিন্তু কিছু কিছু মেয়ে এত বেশি সুন্দর যে চোখ ফেরানো যায় না। এই যেমন আপনি।
এ রকম সুন্দর মেয়ে দেখলেই রোকসানা আপার কথা ভাববেন। আচ্ছা আমি উঠছি এখন।
লাবণি কফি হাউজ থেকে বেরোতে বেরোতে ভাবল প্রথমে ঘটনা যত প্যাঁচালো মনে হয়েছিল আসলে তা না। বোঝাই যাচ্ছে একটা পুরোনো রেষারেষি হঠাৎ করেই নোংরা রূপ নিয়েছে। এর চেয়ে অনেক জটিল এবং ভয়ংকর কেইস লাবণি সামলেছে।
কফি হাউজ থেকে প্রোভাইস চ্যান্সেলর মাহতাব হাবিবের বেইলি রোডের বাড়িতে আসতে লাবণির আধঘণ্টার মতো লাগল। প্রোভিসি মাহতাব হাবিব বাড়ির বাইরের লনে একটা আম গাছের ছায়ায় বসে বই পড়ছিলেন। আগেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা ছিল। তবু ইন্সপেক্টর লাবণির দিকে বিরক্ত মুখে তাকিয়ে প্রোভিসি বললেন, আপনি ডিটেক্টিভ ইন্সপেক্টর বলেই কথা বলছি, নইলে ইউনিভার্সিটির ব্যাপারে এখন আর আমি কারও কাছে মুখ খুলি না। আপনি কী জানতে চাইছেন?
প্রফেসর জাহিদকে নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। বুঝতেই পারছেন কেন।
শুনুন, প্রফেসর জাহিস হ্যাড ইট কামিং। ওই কুলাঙ্গারটা দিনের পর দিন ছাত্রীদের সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করে বেরিয়েছে। অন্য কলিগরা কী বলত তাকে জানেন?
না।
ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের রাসপুটিন। রাশিয়ার নারীলোলুপ রাসপুটিনের কথা শুনেছেন নিশ্চয়?
জি।
রাসপুটিনের পরিণতি জানেন তো?
জি, ওনাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
জাহিদেরও কিন্তু একই দশা। নিজের পাপে নিজে ডুবল। এখন ফাঁসিতে ঝোলা বাকি।
কিন্তু ওনার বিরুদ্ধে স্টুডেন্টরা কোনো সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্টের কমপ্লেইন করেছে বলে তো শুনি নি কখনো।
এখনকার ছাত্রীগুলো কী টাইপের আমি বুঝি না, অর্ধেকই আসে ইংলিশ মিডিয়াম থেকে। হ্যান্ডসাম শিক্ষক ফ্লার্ট করলে তারা প্লে-ফুলি দেখে।
শুনেছেন তো ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের ছাত্রীরা মিছিল নামিয়েছে, প্রফেসর জাহিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করো?
ডিসগাস্টিং!
ওনাকে তো যতদূর জানি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কিন্তু তার আগেই তো ওই স্কাউন্ড্রেলটা আমার যা ক্ষতি করবার করে গেছে।
কিন্তু আপনি তো তহবিল তসরুফ, অবৈধ ছাত্র ভর্তি এসবে জড়িত ছিলেন, উনি তো ডকুমেন্টস দেখিয়েছেন।
হোয়াই চেরি পিকিং মি? আপনি কি ভেবেছেন শুধু আমিই জড়িত? দা হোল সিস্টেম ইজ করাপ্টেড। ভিসি কি ধোয়া তুলসিপাতা? আমাদের ট্রেজারার?
তাহলে স্পেসিফিকলি আপনার পেছনে প্রফেসর জাহিদ লাগতে গেলেন কেন?
আমার ধারণা ভিসি সাহেব লাগিয়েছেন।
ভিসি সাহেব?
আমাদের চ্যান্সেলর মানে প্রেসিডেন্ট ভাবছিলেন আমাকে ভিসি করবেন ওই অকাল কুষ্মাণ্ডকে সরিয়ে। সবাই জানত সেটা। সে কারণেই একটা স্ক্যান্ডেল ছড়িয়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো।
এতে প্রফেসর জাহিদের কী লাভ?
আমাকে সরালে প্রফেসর জাহিদ প্রোভিসি হতেন। কিন্তু নারী কেলেঙ্কারিতে ধরা খেয়ে যাওয়ায় এখন আর পারবেন না। আল্লাহর বিচার।
তাহলে বলা যায় আপনি ভালোই প্রতিশোধ নিয়েছেন?
আমি প্রতিশোধ নিয়েছি মানে? আমি কীভাবে প্রতিশোধ নিলাম? উনি নিজের জালে নিজে জড়িয়েছেন।
আপনি তো ক’দিন ধরেই প্রফেসর জাহিদের পেছনে লেগেছিলেন। ওনার বাসায়, ওনার ফ্ল্যাটে সবখানে আপনি ওনাকে অনুসরণ করেছেন। আপনি চাইলে আমি সময় বলে দিতে পারি।
প্রোভাইস চ্যান্সেলর মাহতাব হাবিব ঢোক গিললেন, ইন্সপেক্টর লাবণির কাছে নিশ্চয় প্রমাণ আছে। আমতা আমতা করে বললেন, আপনি যা ভাবছেন তা না।
কী না?
আমি ওই মেয়েকে খুন করে জাহিদকে ফাঁসাই নি।
যেটুকু জানতে পেরেছি প্রফেসর জাহিদের সঙ্গে আপনার ঝামেলা আজকের না। আমার ধারণা শম্পাকে আপনি এমপ্লয় করেছিলেন। ভেবেছিলেন, অন্তরঙ্গ ভিডিও বানিয়ে ওনাকে ফাঁসাবেন। কিন্তু তার আগেই উনি আপনাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছিলেন। সিসিটিভির যে ফুটেজগুলো আমার কাছে এসেছে ওখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আপনি ওনার বাড়ি, ওনার ভাড়া দেওয়া অ্যাপার্টমেন্ট দুখানেই ওনাকে ফলো করেছেন। এখন আমি যদি চাই আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যেতে পারি।
ওকে, ওকে, লেট মি ক্লারিফাই। আমি জাহিদকে কনফ্রন্ট করবার জন্য ফলো করছিলাম। আই জাস্ট অয়ান্টেড টু স্ল্যাপ অন হিজ ফেইস। বিশ্বাস করুন যেই মেয়েকে জাহিদ মেরেছে তার সঙ্গে আমার কোনোই সম্পর্ক ছিল না।
আপনার মুখের কথায় তো কোনো কিছু প্রমাণ হবে না, এভিডেন্স কথা বলবে। আজ আমাকে আরেক জায়গায় যেতে হবে। আপনি আরও ভাবুন, কিছু মনে পড়লে আমাকে জানান। কালকের ভেতর জানাবেন।
শম্পার নৃশংস হত্যার সঙ্গে এখন ভালোভাবেই জড়িয়ে পড়েছে টিম অলাতচক্র। ওসি মকবুল জানিয়েছে শম্পার রক্তে ডেইট রেইপ ড্রাগ রহিপনল পাওয়া যায় নি। ইন্সপেক্টর লাবণি ভাবছে এর দুটো মানে হয়। প্রথম মানে হলো, রোমান্টিক প্রফেসর জাহিদ ডেইট রেইপ ড্রাগ দিয়ে শম্পাকে বশীভূত করেন নি। আর অন্য মানেটা খুবই জটিল, এত জটিল যে লাবণি তা নিয়ে এখন ভাবতে চাচ্ছে না।
লাবণি মর্গে পৌঁছে দেখল শম্পার সেকেন্ড আইডেন্টিফিকেশনের জন্য মিলি চলে এসেছে। মর্গের ফ্রিজ থেকে ধাতব ট্রেতে শম্পার মৃতদেহ বের করার সঙ্গে সঙ্গে মিলি হাউমাউ করে কেঁদে দিল। শম্পার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না, মুখের একদিক পুরো থেতলে গেছে, কেউ হয়তো ভোঁতা কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। লাবণি মিলির আড়ষ্টতা দেখে বলল, মিলি তুমি চাইলে এখন বাড়ি গিয়ে রেস্ট নাও, পরে আবার আসো। মিলি রাজি হলো না, পুরো ব্যাপারটার সঙ্গে তার বাবার জীবন-মরণ জড়িত। মিলি বিশ্বাস করে না তার বাবা প্রফেসর জাহিদ আহমেদ এ রকম একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটাবার ক্ষমতা রাখে।
শম্পাকে যে মিলি খুব বেশিদিন ধরে চেনে তাও না। শম্পা ক্লাসে একদিন আসত তো তিনদিন আসত না। তারপরও মিলির প্রতি শম্পার অতিরিক্ত আগ্রহের কারণেই দুজনের মাঝে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অল্প সময়ের ভেতরেই শম্পা ওর উচ্ছ্বলতা দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছে। এখন তো ইন্সপেক্টর লাবণি বলছে প্রোভিসি শম্পাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছিল মিলির বাবার চরিত্র হননের জন্য।
যাই ঘটে থাকুক না কেন, এই ঘটনার সবচেয়ে বড় শিকার হলো শম্পা। ওকে প্রোভিসি বা অন্য কেউ তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে আজ দলামোচড়া করে ফেলে দিয়েছে মৃত্যুর আঁস্তাকুড়ে। মিলি মনে মনে ভাবল, আহারে শম্পা, তুই কেন এমন করলি? তুই এত সুন্দর একটা মেয়ে, একটা ভালো ছেলের সঙ্গে ভালোবেসে কত সুখী জীবন তুই পেতে পারতি, কিন্তু তুই বেছে নিলি পঙ্কিল জীবনের ঝুঁকিময় উত্তেজনা। কেন বন্ধু কেন? নিজের অজান্তেই মিলির চোখ দিয়ে দু’ ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। ওসি মকবুল মিলির দিকে টিস্যু পেপার এগিয়ে দিলেন। নিজেকে ধাতস্থ করে মিলি বলল, এই মেয়েটাই শম্পা।
লাবণি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করল, তুমি শিওর তো?
হুম, চুল ছোট করে কেটেছে, কেন কে জানে, সে তো কত কিছুই গোপন করেছে। তবে শম্পা বাঁ হাতে একটা পান্নার আংটি পরত। সেটা দেখছি না।
ওসি মকবুল বললেন, ওটা আমাদের কাছে আছে।
তাহলে আর কী, এটাই শম্পা। আমি কি এখন যেতে পারি? আমার ভালো লাগছে না এখানে।
লাবণি উত্তর দিল, হ্যাঁ, শিওর মিলি, আমি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসব। তুমি একটু রিসেপশনে অপেক্ষা করো।
মিলি মর্গ থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ ঘুরে বলল, নাকফুল?
লাবণি অবাক হয়ে বলল?
কার নাকফুল?
শম্পার। ও প্রথমদিন একটা নাকফুল পরেছিল।
ইন্সপেক্টর মকবুল বললেন, আমরা কোনো নাকফুল পাই নি।
নাকফুল থাকার কথা না। ফুটোতে ইনফেকশন হওয়ায় ক’দিন আর পরে নি, আমিই দেখেছি নাকের ওই জায়গাটা লাল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নাকে ফুটো থাকবে তো।
ওসি মকবুল মৃতদেহ আরেকবার ভালো করে লক্ষ করে বললেন, কিন্তু এনার নাকে তো নাকফুল বসানোর কোনো ফুটোই নেই। আশ্চর্য!
লাবণি গম্ভীরভাবে বলল, তার মানে এটা শম্পার ডেডবডি না।
ওসি মকবুল বিরক্ত এবং বিব্রত কণ্ঠে বললেন, তাহলে শম্পা কোথায়? আর ইনিইবা কে? কী হচ্ছে এসব?
(চলবে…)
Leave a Reply
Your identity will not be published.